কুমিল্লার তিতাস উপজেলার উলুকান্দি পাঠানবাড়ি থেকে শ্রী নারায়ণকান্দি সড়ক পাকাকরণের মেয়াদ শেষ হলেও কাজই শুরু করেননি ঠিকাদার। এতে তিন গ্রামের ১৫ হাজার মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ে নির্মাণকাজ শুরু না করলেও ঠিকাদারের বিরুদ্ধে রহস্যজনক কারণে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়।

সরেজমিন দেখা গেছে, বলরামপুর ইউনিয়নের উলুকান্দি পাঠানবাড়ি থেকে শ্রী নারায়ণকান্দি পর্যন্ত রাস্তাটির বক্স কাটা হয়েছে। আশপাশের বাড়ির ব্যবহৃত পানি কিছু কিছু অংশে জমে আছে। রাস্তাটির প্রথম অংশের একটু পর পর প্রায় এক বছর আগে ঠিকাদারের রাখা কংক্রিট দেখা গেলেও দুর্বা ঘাসে ঢেকে গেছে। রাস্তাটি বক্স কাটা থাকায় দুটি গাড়ি পার হতে পারে না। এ রাস্তা দিয়ে উলুকান্দি, উত্তর নারায়ণকান্দি ও দক্ষিণ নারায়ণকান্দির গ্রামের লোকজন উপজেলা সদরসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করে।

উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যলয়ের তথ্যমতে, বলরামপুর ইউনিয়নের উলুকান্দি থেকে শ্রী নারায়ণকান্দি সড়কের ৮০০ মিটার পাকাকরণের জন্য দরপত্র আহ্বান করেন।

মেসার্স তন্বী এন্টারপ্রাইজ ৮২ লাখ ৮৩ হাজার ৪৩৯ টাকায় কাজটি পায়। ২০২৩ সালের ২ জুলাই কার্যাদেশ দেওয়া হয়। যার মেয়াদ ছিল ২০২৪ সালের ১ এপ্রিল পর্যন্ত। বিষয়টি একাধিক প্রকল্প পর্যালোচনা সভায় উত্থাপন করার পর প্রকল্প রেজ্যুলেশনে কাজটি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এদিকে নির্মাণকাজের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯ মাস পেরিয়ে গেলেও কাজটি বাতিল করা হয়নি। নেওয়া হয়নি ঠিকাদারের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা।

উলুকান্দি ও শ্রী নারায়ণকান্দি গ্রামের একাধিক ব্যক্তি জানান, রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য দুই গ্রামবাসী একাধিকবার বৈঠক করেছিল। ঠিকাদার রাস্তার কাজ শুরুও করেছিলেন। রাস্তার মাটি দুই পাশে নেওয়ার পর ঠিকাদারকে আর দেখা যায়নি। 

মেসার্স তন্বী এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মোফাজ্জল হোসেন বলেন, উলুকান্দি গ্রামের দুই পক্ষের সীমানা নিয়ে মামলা জটিলতার কারণে কাজটি যথাসময়ে শেষ করা যায়নি। তবে নতুন করে কাজের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ের লোকজন রাস্তাটি পরিদর্শন করে সিদ্ধান্ত জানালে কাজ শুরু করা হবে।

তিতাস উপজেলা প্রকৌশলী শহিদুল ইসলামের ভাষ্য, চূড়ান্ত নোটিশের পর কাজটি বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছিল। জমি বরাদ্দ নিয়ে সমস্যার কারণে প্রকল্পটি বাতিল না করে স্থিতিবস্থায় রাখা হয়েছিল। এ সমস্যা সমাধানে কয়েক দফা বৈঠক করা হয়। সে সমস্যার সমাধান হয়েছে। দ্রুতই এ রাস্তার কাজ শুরু হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প ক করণ র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

শত্রুতার জেরে সাত গরুকে বিষ প্রয়োগের অভিযোগ, মারা গেছে ৩টি

গোপালগঞ্জে পূর্ব শত্রুতার জেরে খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তিনটি গরু হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আরো চারটি গরু অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ফলে দুই কৃষক পরিবারের অন্তত পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। গত শনিবার (১ নভেম্বর) মধ্যরাতে সদর উপজেলার সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।

জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ ও পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। কীভাবে গরুগুলো মারা গেছে তা খতিয়ে দেখতে নমুনা সংগ্রহ করেছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ। পুলিশ বলছে, তারা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।

আরো পড়ুন:

‎নামাজরত বাবাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ, ৩ পুলিশ আহত

গাইবান্ধায় ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা: মামলা দায়ের 

এলাকাসাসী জানান, সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামের দুই ভাই মো. রাসুল গাজী ও হাসিব গাজী কৃষি কাজ করে সংসার চালান। তারা খামার করে কয়েকটি গরু লালন-পালন করছেন। শনিবার মধ্যরাত সাড়ে ১২টার দিকে গরুর গোঙানির শব্দ শুনে পাশের বাড়ির এক আত্মীয় ছুটে গিয়ে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন দুই ভাইকে। তারা স্থানীয় পশু চিকিৎসককে খবর দেন। সকাল হওয়ার আগেই তিনটি গরু মারা যায়। একই গোয়াল ঘরে থাকা একটি বড় ষাঁড়, একটি বাছুর ও অপর গোয়ালে থাকা দুটি ষাঁড় এখনো অসুস্থ। 

ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক মো. রাসুল গাজী জানান, শত্রুতা করেই খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তাদের গরুগুলোকে হত্যা করা হয়েছে। রাতেই টের পেয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করলেও বাঁচানো যায়নি গরুগুলো। দুই ভাইয়ের আরো চারটি গরু অসুস্থ রয়েছে। এতে তাদের অন্তত ৫-৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। 

তিনি জানান, এ ঘটনায় সদর থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

কারা তাদের গরু হত্যা করেছেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাসুল গাজী বলেন, “ঘর থেকে বের হয়ে কয়েকজনকে দৌঁড়ে যেতে দেখেছি। তাদের চেহারা দেখতে পারিনি। ফলে কাউকে চিনতে পারিনি।” 

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক হাসিব গাজী বলেন, ‍“কারো সঙ্গে আমাদের শত্রুতা থাকতেই পারে। এই অবলা পশুগুলো কার কী ক্ষতি করেছে। কোন অপরাধে এদের হত্যা করা হলো। আমরা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”

এলাকাবাসী মো. ইমদাদ শেখ বলেন, “গত শনিবার রাতে বৃষ্টি হয়। এই সুযোগে গরুগুলোকে বিষ খাইয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমরা চাই দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।”

গোপালগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গোবিন্দ চন্দ্র সর্দার বলেন, “সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামে কয়েকটি গরুকে বিষ খাওয়ানো হয় এমন খবর পেয়ে সকালে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে যান। তিনি অসুস্থ গরুগুলোকে চিকিৎসা দেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পয়জনজনিত কারণেই গরুগুলো মারা গেছে। মারা যাওয়া গরুর নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলেই গরু তিনটির মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।”

গোপালগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহ আলম বলেন, “আমি ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে গিয়ে তদন্ত শুরু করি। মারা যাওয়া গোরুগুলোর নমুনা সংগ্রহ ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/বাদল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ