চব্বিশের জুলাই আর আজকের দিনের মধ্যে পার্থক্য আছে কিনা, প্রশ্ন নেবুলার
Published: 16th, January 2025 GMT
ঢাকায় এনসিটিবি কার্যালয়ের সামনে গতকাল আদিবাসী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে আজ সংক্ষুব্ধ ছাত্র জনতার বিক্ষোভ মিছিলে লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১-২২ সেশনের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী তাসমিয়া নেবুলা পুলিশের করা লাঠিচার্জে আহত হন। পরে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সমকালের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
পুলিশের লাঠিচার্জে আহত হওয়া ঘটনা বর্ণনা করে নেবুলা বলেন, আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশ প্রথমে জলকামান নিক্ষেপ করে। আমরা যখন সেখান থেকে দৌড়ে পালিয়ে যাই, তখন টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। একজন সাউন্ড গ্রেনেডের কারণে অলরেডি আহত হয়েছে। কিন্তু পুলিশ সেই অবস্থায়ও আমাদেরকে লাঠিচার্জ করেছে এবং আহত করেছে।
তিনি বলেন, আমি চোখমুখে অন্ধকার দেখছিলাম। ঠিক সেই মুহূর্তে আমার একদম পাশে সাউন্ডগ্রেনেড পড়ে। মনে হচ্ছিল আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলব। হাঁটতে পারছিলাম না। দৌড়াতেও পারছিলাম না। আমার বন্ধুরা পাশে দাঁড়ায়। তখনও পুলিশ লাঠিচার্জ করে। সেখান থেকে হাসপাতালে আসি। এমন পরিস্থিতিতে চব্বিশের জুলাই আর আজকের দিনের মধ্যে কোনো পার্থক্য আছে কি, প্রশ্ন রাখেন নেবুলা।
ঢাবির এই শিক্ষার্থী আরও বলেন, আসলেই কি আমরা স্বাধীনতা অর্জন করতে পেরেছি? কোনো পরিবর্তন কি এসেছে? আজকে আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে যেভাবে হামলা করা হলো; জুলাই আর এটার মধ্যে কোনো পার্থক্য আছে কি?
নেবুলা বলেন, আমি যখন জ্ঞান হারিয়ে ফেলি আমাকে নিয়ে দুইজন হাসপাতালে যাচ্ছিল। সেই অবস্থায় পুলিশ আমাদের ওপর লাঠিচার্জ করে। তখন আমরা বারবার বলছিলাম একজন অলরেডি আহত হয়েছেন। তারপরও পুলিশ লাঠিচার্জ করতে ছাড়েনি।
প্রসঙ্গত, গতকাল বুধবার ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতার’ ব্যানারে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর একদল লোক পাঠ্যবইয়ে গ্রাফিতিটি পুনর্বহালের দাবিতে এনসিটিবির সামনে কর্মসূচি পালন করতে যান। একই সময়ে পাঠ্যপুস্তকে ‘আদিবাসী’ শব্দ প্রবেশ এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানবিরোধী অখণ্ড ভারতের কল্পিত গ্রাফিতি সংযোজনের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তিসহ পাঁচ দফা দাবিতে ‘স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি’ নামে একটি সংগঠন বুধবার সকালে এনসিটিবি ভবন ঘেরাও এর কর্মসূচি দেয়। সকাল থেকেই ‘স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি’র ব্যানারে একদল লোক এনসিটিবির সামনে অবস্থান নিয়ে ছিলেন। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে সেখানে যান ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা’র ব্যানারধারীরা।
‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা’র ব্যানারধারীরা এনসিটিবির সামনে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পুলিশ গিয়ে দুই পক্ষকে সরিয়ে দিয়ে মাঝে অবস্থান নেয়। তখন দুই পাশ থেকে দুই পক্ষ পরস্পরবিরোধী স্লোগান দিতে থাকে। দুপুর ১টার দিকে কিছু লোক সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতার ব্যানারে আসা দলটির ওপর হামলা চালায়। এতে সাংবাদিক ও নারীসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। তারই প্রতিবাদে আজকের এই কর্মসূচি ছিল।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ল ঠ চ র জ কর ছ ত র জনত এনস ট ব অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত
নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।
কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।
১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)
আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)
ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।
৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)
ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।
৪. ঋণের মেয়াদ
কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।
৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)
শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।
৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)
ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।
৭. প্রসেসিং ফি
আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।
৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)
বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।
৯. জামানত (কোলেটারাল)
ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।
১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও
আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।