এসএসসির ফল: বরিশাল বোর্ডে শীর্ষে পিরোজপুর জেলা
Published: 10th, July 2025 GMT
এসএসসিতে বরিশাল বোর্ডে পাসের হারের দিক থেকে গত বছরের মতো এবারো পিরোজপুর জেলায় সবার শীর্ষে রয়েছে। আর সবার নীচের অবস্থানে রয়েছে বরগুনা জেলা।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ইউনুস আলী সিদ্দিকী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক জিএম শহীদুল ইসলাম।
অধ্যাপক মো.
আরো পড়ুন:
শাবিপ্রবিতে জুলাই শহীদদের স্মরণে ১ আগস্ট ম্যারাথন
বরিশাল বোর্ডের ১৬ বিদ্যালয়ে শতভাগ ফেল
এরপর দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বরিশাল জেলার পাসের হার ৫৭ দশমিক ২০, যা গত বছর ছিল ৯০ দশমিক ৬৪। তৃতীয় অবস্থানে থাকা পটুয়াখালী জেলার পাসের হার ৫৫ দশমিক ৭২, যা গত বছর ছিল ৮৩ দশমিক ৮০। চতুর্থ অবস্থানে থাকা ভোলা জেলার পাসের হার ৫৪ দশমিক ৭০, যা গত বছর ছিল ৮৯ দশমিক ২৭। পঞ্চম অবস্থানে থাকা ঝালকাঠি জেলার পাসের হার ৫১ দশমিক ৭৭, যা গত বছর ছিল ৯০ দশমিক ৫২ এবং ষষ্ঠ অবস্থানে থাকা বরগুনা জেলার পাসের হার ৫০ দশমিক ৮৪, যা গত বছর ছিল ৮৩ দশমিক ৮০।
অপরদিকে, এ বছর বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের পাসের হার সব থেকে বেশি। এরপর ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক বিভাগের অবস্থান। জিপিএ-৫ এর দিক থেকে সবচেয়ে বেশি পেয়েছে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এ বিভাগে মোট ২ হাজার ৯২০ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।
এছাড়া মানবিক বিভাগ থেকে ১ হাজার ৫৯২ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে ৩৫ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।
ঢাকা/পলাশ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এসএসস র ফল গত বছর ছ ল অবস থ ন বর শ ল দশম ক
এছাড়াও পড়ুন:
‘মোগো যহন সেতু হইল তহন রাস্তা ছেল না, এহন রাস্তা হইছে কিন্তু সেতু নাই’
বরগুনার তালতলী উপজেলার বেহালা গ্রামে চার বছর আগে ধসে গেছে একমাত্র সেতুটি। সেখানে কাঠ-বাঁশের সাঁকো দিয়েই ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলাচল করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। দীর্ঘ সময়েও সেতুটি পুনর্নির্মাণ না হওয়ায় স্কুল, বাজার ও জরুরি যাতায়াতে গ্রামবাসীকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
বঙ্গোপসাগর তীরসংলগ্ন বেহালা গ্রামটি বেশ বড়। গ্রামের দক্ষিণ দিকটায় মানুষের বসতি। এরপর সরু পিচঢালা রাস্তা আর দক্ষিণে মাইলের পর মাইল ফসলের খেত, গোলগাছের বাগান। গ্রামটির অধিকাংশ বাসিন্দা কৃষিকাজের ওপর নির্ভরশীল। এ ছাড়া অধিকাংশ পরিবারই দরিদ্র-নিম্নমধ্যবিত্ত।
স্থানীয় বাসিন্দারা বরেন, আশপাশে কোনো বাজার নেই। তাই গ্রামবাসীকে বাজার-সদাই কিংবা কোনো প্রয়োজনে ছুটতে হয় ১৫ কিলোমিটার দূরে তালতলী উপজেলা সদরে। গ্রামটির চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি কাঁচা থেকে পাকা হয়েছে। কিন্তু এরপরও যোগযোগ মসৃণ হয়নি। এখন বেহালা গ্রামের মানুষের দুঃখ কেবল একটি, সেটি একটি সেতুর অভাব।
সরেজমিনে দেখা যায়, আমতলী-তালতলীর মূল সড়কে উঠতে হলে বেহালা খাল পারাপার হতে হয়। খালটিতে বাঁধ দিয়ে বদ্ধ খালে পরিণত করে মাছ চাষ করা হয়। বিশাল খালের ওপর আগে লোহার অবকাঠামোর ওপর সিসি ঢালাই দেওয়া স্ল্যাবের সেতু ছিল। সেটি ২০২২ সালের মার্চে ভেঙে পড়ে। এরপর বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে বেহালা গ্রাম। প্রায় চার বছর পরও সেটিকে আর নির্মাণে উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তাই প্রথমে খেয়ায় এবং পরে বাঁশের অবকাঠামোর ওপর কাঠের তক্তা দিয়ে পায়ে পারাপারের জন্য একটি নড়বড়ে সাঁকো তৈরি করা হয়েছে। স্থানীয় সরকারের প্রকৌশল অধিদপ্তর এডিবির অর্থায়নে এই সাঁকো নির্মাণ করে দিয়েছে। এখন সেই ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকোই বেহালার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন কড়ইবাড়িয়া ও আশপাশের ১০ গ্রামের মানুষ তালতলী, আমতলী এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করতেন। একই পথে বেহালা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও তিনটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহস্রাধিক শিক্ষার্থী আসা-যাওয়া করত। সেতুটি ভেঙে পড়ায় এখন সবাইকে টানা দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। গ্রামের কেউ গুরুতর অসুস্থ হলে অ্যাম্বুলেন্স যেতে পারে না। স্থানীয় কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য আনা-নেওয়া করতেও ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা কালিপদ মাঝি পেশায় ইজিবাইকচালক। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘মোগো যহন সেতু হইল, তহন রাস্তা ছেল না। এখন রাস্তা হইছে, কিন্তু সেতু নাই। মোগো কপালডাই ক্যামন যেন পোড়া!’
উত্তর বেহালা গ্রামের কেশব শিকারি নামে এক কৃষক বললেন, ‘মোগো গ্রামের মানুষের জন্মই অইছে, নাই নাই হোনার লইগ্গা। নাইলে হারা জাগায় এত্ত কাম-কাইজ হয়, মোগো এই ছোট্ট কামডা (সেতু) ক্যা অয় না।’
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্র জানা গেছে, তালতলী উপজেলার কড়ইবাড়িয়া ইউনিয়নের বেহালা খালের ওপর লোহার অবকাঠামোর সেতুটি প্রায় ২৫ বছর আগে নির্মিত হয়েছিল। কিন্তু নির্মাণের পর সেটির সংস্কার না করায় অ্যাঙ্গেলগুলো লোনা পানিতে ক্ষয় হয়েছে। এতে অবকাঠামো নড়বড়ে হয়ে গেছে। পরে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকা সেতুটি ২০২২ সালের মার্চে হঠাৎ করে পুরো কাঠামোসহ ধসে খালে পড়ে। এরপর সেই অবস্থায় পড়ে আছে।
অধিদপ্তরটির তালতলী উপজেলা প্রকৌশলী মো. শাখাওয়াত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘শুধু বেহালা নয়, তালতলী উপজেলার অন্তত আটটি সেতুর অবস্থাই খারাপ। আমরা অনেক আগে এগুলো নির্মাণের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব দিয়েছি। অনেকগুলোর জন্য স্কিমও পাঠিয়েছি। কিন্তু সাড়া মিলছে না। আমরা নিজেরাই বিষয়টি নিয়ে হতাশ।’