সড়কে দুটি বড় আকারের গজারিগাছ কাটা অবস্থায় পড়েছিল। পাশের জঙ্গল থেকে দা হাতে বেরিয়ে আসে একদল ডাকাত। দা দেখে দৌড়ে উল্টো দিকে পালিয়ে বেঁচে ফিরেছেন। গাজীপুরের শ্রীপুরের ব্যস্ততম মাওনা-কালিয়াকৈর আঞ্চলিক সড়কে ডাকাতের মুখোমুখি হওয়ার অভিজ্ঞতা বলতে গিয়ে যাত্রী রাশেদুল ইসলাম এভাবে ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছিলেন।

গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১০টায় ওই সড়কের হাশিখালি সেতুর পশ্চিম পাশে এ ঘটনা ঘটে। রাশেদুল ইসলাম বলেন, তিনি মাওনা চৌরাস্তায় ইলেকট্রনিক পণ্যের ব্যবসা করেন। কাজ শেষে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় তাঁরা পাঁচজন বাড়িতে ফিরছিলেন। হঠাৎ হাশিখালি সেতুর কাছে সড়কে দুটি গজারিগাছ পড়ে থাকতে দেখে সবাই আতঙ্কিত হন। মুহূর্তেই পাশের জঙ্গল থেকে ১০–১২ জন হাতে দা নিয়ে সড়কে আসে। এ সময় তাঁরা দ্রুত গাড়ি ঘুরিয়ে উল্টো মাওনা বাজারের দিকে চলে যান। তাঁদের মতো আরও অনেকেই এমন পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে হাশিখালি সেতুর পাশে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের উত্তর পাশে একটি গজারিগাছের গোড়ার দিকের অংশ কাটা। একইভাবে দক্ষিণ পাশেও আরেকটি গাছ কাটা দেখা যায়। এর কিছুটা পশ্চিম পাশে আরও একটি স্থানে গাছ কেটে রাখার দৃশ্য দেখা যায়। স্থানীয় লোকজন বলেন, ডাকাতদের কাটা গাছের টুকরা রাতেই সড়ক থেকে সরানো হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা গাড়িচালক মো.

সোহেল রানা বলেন, রাতে ডাকাতেরা ডাকাতি করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা দিগ্‌বিদিক ছুটে পালিয়ে যায়। সড়কটিতে গত ৩ মার্চ ডাকাতেরা পুলিশের দুই সদস্যকে কুপিয়ে আহত করেছিল। তিনি সড়কে পুলিশের তৎপরতা বাড়ানোর দাবি জানান।

সড়কে নিয়মিত চলাচলকারী শিরিশগুরি গ্রামের বাসিন্দা মো. রুহুল আমিন বলেন, ডাকাত দল ঘটনাস্থলের পশ্চিম ও পূর্ব পাশে অন্তত ৩০০ মিটার দূরত্বে দুটি জায়গায় গাছ ফেলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছিল। হাশিখালি সেতুর আশপাশে ও বদনিভাঙা মোড়ে নিয়মিত ডাকাতির ঘটনা ঘটে। আতঙ্কে লোকজন সড়কটিতে রাত ৯টার পর চলাচল করতে ভয় পান।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবদুল বারিক বলেন, ডাকাতির প্রস্তুতিকালে তাঁরা খবর পান। সঙ্গে সঙ্গে সেখানে পুলিশ পাঠালে দুর্বৃত্তরা দৌড়ে পালিয়ে যায়।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

কাজ না করেই অর্ধেক টাকা তুলে নেন ঠিকাদার

সড়কে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের প্রতিবাদে গাজীপুরের কাপাসিয়ায় মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। এমনকি ওই সড়কের কাজ না করেই অর্ধেক টাকা উঠিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করেন তারা। গতকাল সোমবার দুপুরে সদর ইউনিয়নের সূর্য নারায়ণপুর এলাকার কর্মসূচিতে শতাধিক মানুষ অংশ নেন। তারা সড়কটির কাজ যথাযথভাবে করার দাবি জানান। 
স্থানীয় সূত্র জানায়, সূর্য নারায়ণপুরের আব্দুর রশিদের বাড়ি থেকে বক্তারটেক পর্যন্ত ২৮০ ফুট দীর্ঘ রাস্তাটিতে ইট বিছিয়ে (সলিং) ৮ ফুট চওড়া করার কথা। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের অধীনে কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) প্রকল্পের আওতায় এ কাজের প্রাক্কলন ধরা হয়েছে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা। সদর ইউপির ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আল আমিন পালোয়ান এ কাজের ঠিকাদার। কিন্তু এলাকাবাসী সড়কটিতে নিম্নমানের ইট ব্যবহার ও বালু না দিয়েই কাজ শুরুর অভিযোগ করেছেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আল আমিন পালোয়ান একই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। যে কারণে গত সরকারের আমলে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ না করেই টাকা আত্মসাৎ করেছেন। গণঅভ্যুত্থানের পর একাধিক মামলায় আসামি হয়ে পালিয়ে যান। কিন্তু সম্প্রতি এলাকায় এসে ওই সড়কের কাজ না করেই অর্ধেক টাকা উঠিয়ে নিয়েছেন। নিম্নমানের সামগ্রী বসানোর প্রতিবাদ করলে এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির গুজব ছড়িয়েছেন তিনি। এমনকি নানা মাধ্যমে আল আমিন হুমকিও দিচ্ছেন। 
সেখানে বক্তব্য দেন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা মঈনুল ইসলাম, ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল বাসার কাজল, মো. রানা শেখ প্রমুখ। তাদের অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে আল আমিন পালোয়ানের নম্বরে কল দিয়েও সংযোগ মেলেনি। 
কাপাসিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. তামান্না তাস্‌নীম বলেন, একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে সরেজমিন পরিদর্শনে যেতে বলেছেন। তিনি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বালু বেশি দিয়ে সড়কের ঢালাই, ক্ষোভ
  • যশোর-খুলনা মহাসড়ক যেন চাষের জমি
  • গাইবান্ধায় ইপিজেডের পক্ষে-বিপক্ষে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি
  • বৃষ্টি হলেই সড়কে হাঁটুপানি, দুর্ভোগে ২০ হাজার মানুষ
  • ‘তোর পাকা রাস্তা তুই তুইলি লিয়্যা যা’
  • কাজ না করেই অর্ধেক টাকা তুলে নেন ঠিকাদার