৩ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে আবার মাঠে নামার হুঁশিয়ারি নাহিদের
Published: 10th, July 2025 GMT
৩ আগস্টের মধ্যে সরকার জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদ প্রকাশ করতে ব্যর্থ হলে ছাত্র–জনতাকে সঙ্গে নিয়ে আবার মাঠে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে মাগুরায় এক সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘৩ আগস্টের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদ দেখতে চাই। ওই দিন আমরা শহীদ মিনারে থাকব। এর মধ্যে সরকার জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে ব্যর্থ হলে সারা দেশের ছাত্র–জনতাকে সঙ্গে নিয়ে আবার আন্দোলনে নামব।’
জুলাই পদযাত্রার দশম দিনে মাগুরায় আসেন এনসিপির নেতারা। ঝিনাইদহ থেকে বেলা ১টা ২০ মিনিটে মাগুরা সদর উপজেলা পরিষদের সামনে এসে পদযাত্রা শুরু করেন এনসিপি নেতারা। ভায়না মোড় হয়ে শহরের কলেজ রোড, চৌরঙ্গী মোড়, সৈয়দ আতর আলী সড়ক ও ঢাকা রোড বাসস্ট্যান্ড ঘুরে আবার ভায়নার মোড়ে এসে যাত্রা শেষ হয়। বেলা আড়াইটার দিকে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও সংগঠক সাদিয়া ফারজানা দিনা।
ঢাকা–খুলনা মহাসড়কের ভায়না এলাকার ছয় রাস্তার মোড়ে স্বাধীনতা স্মৃতিস্তম্ভের পাদদেশে দাঁড়িয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বৈষম্যহীন, গণতান্ত্রিক, চাঁদাবাজ-সন্ত্রাস ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশের জন্যই আমাদের লড়াই। আমাদের সেই লড়াই কিন্তু শেষ হয়নি। আমরা সেই বার্তা দিতেই এসেছি।’
এনসিপির এই নেতা বলেন, মাগুরায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে এনসিপির সাংগঠনিক বিস্তার ঘটবে। দুর্নীতি ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে মাগুরাবাসীকে সরব থাকার আহ্বান জানান তিনি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে এই মাগুরার দশজন শহীদ হয়েছেন। আপনাদের সেই সন্তানদের রক্তের মর্যাদা আজ আমাদের সবাইকে মিলে দিতে হবে। মনে রাখতে হবে, তাঁরা রক্ত দিয়েছেন একটা নতুন বাংলাদেশের জন্য, বাংলাদেশকে নতুনভাবে গড়ে তোলার জন্য। সে কারণেই আমরা মাঠে নেমেছি।’
পদযাত্রায় আরও অংশ নেন এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা প্রমুখ। পদযাত্রা ও পথসভা শেষে নড়াইলের উদ্দেশে যাত্রা করেন এনসিপির নেতারা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন হ দ ইসল ম ন এনস প র পদয ত র
এছাড়াও পড়ুন:
বিমানবন্দরে ক্রিকেটারদের হেনস্থা, জড়িতদের ধরতে আইন–শৃঙ্খলা বাহিনীর সাহায্য চেয়েছে বিসিবি
ঢাকার হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরে বুধবার রাতে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের সঙ্গে অসদাচরণ করা ব্যক্তিদের ভিডিও ফুটেজ দেখে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে আইন–শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এ ছাড়া এক ফেসবুক পোস্টে মিরপুরে শনিবার থেকে শুরু ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের খেলা দেখতে গেলে দর্শকদের ‘শায়েস্তা’ করার হুমকিদাতাকেও খুঁজছে আইন–শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বিসিবির একজন দায়িত্বশীল পরিচালক বৃহস্পতিবার রাতে প্রথম আলোকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে বুধবার রাতে দেশে ফিরে বেশ বাজে অভিজ্ঞতাই হয়েছে বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ওপেনার মোহাম্মদ নাঈমসহ কয়েকজন ক্রিকেটারকে হেনস্থা করেছেন একদল লোক।
এ ঘটনার কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এসব ভিডিওতে দেখা যায়, বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার সময় কিছু লোক নাঈমের গাড়ির খুব কাছে গিয়ে ‘ভুয়া, ভুয়া’ বলে দুয়ো দিচ্ছে, গালাগাল করছে। একই দৃশ্য দেখা গেছে তাসকিন আহমেদ বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার সময় তাঁর গাড়ির আশেপাশেও। এসব ভিডিওতে ক্রিকেটারদের উদ্দেশে করা গালাগালও স্পষ্ট শোনা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিসিবির ওই পরিচালক মুঠোফোনে এই প্রতিবেদককে বলেছেন, ‘দুটি বিষয়ই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর নজরে আনা হয়েছে। তাঁরা এই দুই ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। সরকার বিষয়টিকে খুবই গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে।’
এশিয়া কাপের পর আরব আমিরাতে আফগানিস্তানকে টি–টোয়েন্টি সিরিজে ৩–০ তে ধবলধোলাই করলেও ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশ উল্টো ধবলধোলাই হয়েছে। বিমানবন্দরে ক্রিকেটারদের প্রতি সে কারণেই ক্ষোভ জানিয়েছে কিছু লোক। তবে তাদের ক্ষোভের প্রকাশ ছিল আক্রমণাত্মক।
বাংলাদেশ দল খারাপ খেলায় ক্ষোভ জানিয়ে দেওয়া এক ব্যক্তির ফেসবুক পোস্টের ভাষাও একই রকম আক্রমণাত্মক। তাঁর বাসা মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের খুব কাছে উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, ‘মিরপুরের কিছু ভাই ব্রাদার মিলে একটা টিম গঠন করতেসি, যারা এই অবস্থায়ও মাঠে এই দলের খেলা দেখতে আসবেন, তাদের শায়েস্তা করার জন্য।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘প্রিয় দলের খেলা দেখতে এসে কেউ বেধড়ক মার খেলে বা highly Injured হলে মিরপুরবাসীকে দায় দিতে পারবেন না।’
এ ধরনের ফেসবুক পোস্টকে বাংলাদেশ দলের দর্শক–সমর্থক এবং ক্রিকেটারদের জন্যও নিরাপত্তার হুমকি মনে করেন বিসিবির ওই পরিচালক, ‘খেলায় খারাপ ফলাফল হতে পারে। সে জন্য সমালোচনাও হতে পারে। কিন্তু এ ধরণের উসকানিমূলক হুমকি কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমরা স্টেডিয়ামকে ক্রিকেটার ও দর্শকদের জন্য নিরাপদ রাখতে চাই।’
বিসিবির অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, তারা মনে করে এই ঘটনার পেছনে একটি রাজনৈতিক দলের মদদ থাকতে পারে। আইন–শৃঙ্খলাবাহিনী সেটিও খতিয়ে দেখবে।
বিমাবন্দরের ঘটনায় হতাশা প্রকাশ করে এর আগে ক্রিকেটার নাঈম এক ফেসবুক পোস্টে দাবি করেন, ব্যর্থ হলেও ক্রিকেটাররা সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করেন।
নাঈম লিখেছেন, ‘আজ যেভাবে আমাদের প্রতি ঘৃণা (প্রকাশ করা হয়েছে), গাড়িতে আক্রমণ করা হয়েছে, তা সত্যিই কষ্ট দেয়। আমরা মানুষ, ভুল করি, কিন্তু কখনো দেশের প্রতি ভালোবাসা-চেষ্টার ঘাটতি রাখি না। প্রতিটা মুহূর্তে চেষ্টা করি দেশের জন্য, মানুষের জন্য, আপনাদের মুখে হাসি ফোটাতে।’