যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসের বড় অংশ দাবানলে বিপর্যস্ত। এতে এখন পর্যন্ত ২৪ জন নিহত হয়েছেন। পুড়ে গেছে ১২ হাজার ৩০০-এরও বেশি স্থাপনা। লস অ্যাঞ্জেলেস শহরের আশপাশের এলাকার বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কারণ এখনও দাবানল চলমান।
কীভাবে শুরু হলো
ক্যালিফোর্নিয়া ডিপার্টমেন্ট অব ফরেস্ট্রি অ্যান্ড ফায়ার প্রটেকশনের (ক্যাল ফায়ার) তথ্য অনুসারে, ৭ জানুয়ারি সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে (১৮:৩০ গ্রিনউইচ সময়) লস অ্যাঞ্জেলেসের প্যাসিফিক প্যালিসেডস এলাকায় প্রথম আগুন শুরু হয়। তদন্তকারীরা এখনও সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে ভয়ানক অগ্নিঝড়ের সঠিক কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন।
ক্যালিফোর্নিয়ায় সাধারণত জুন ও জুলাই মাসে দাবানল সৃষ্টি হয়। দাবানল অক্টোবর পর্যন্তও চলতে পারে। এবার জানুয়ারি মাসেই সৃষ্টি হলো। অথচ জানুয়ারি সবচেয়ে ঠান্ডা সময়।
আগুনের উৎপত্তিস্থল দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়া। জায়গাটি খরা পরিস্থিতির সম্মুখীন। কয়েক মাস ধরে উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাতও হয়নি। মার্কিন খরা মনিটরের সর্বশেষ মানচিত্র দেখাচ্ছে–৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ পর্যন্ত ক্যালিফোর্নিয়ার ৪০.
ইউএস এনভায়রনমেন্টাল প্রটেকশন এজেন্সির (ইপিএ) একটি প্রতিবেদন অনুসারে, জলবায়ু পরিবর্তন দাবানলের পরিধি, ঋতুর দৈর্ঘ্য ও পুড়ে যাওয়া এলাকা বাড়াতে ভূমিকা রেখেছে। ‘সান্তা আনা’ থেকে আসা শুষ্ক ও গরম বাতাসই সম্ভবত এ অঞ্চলে দাবানলের কারণ।
শুষ্ক মরুভূমির বাতাস এ অঞ্চলের ভেতর থেকে উপকূলের দিকে চলে যায়। শুষ্ক প্রকৃতির দাবানল তৈরিতে এ বাতাস ভূমিকা রাখে। কারণ, এর প্রভাবে পরিবেশে আর্দ্রতা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়। এর ফলে গাছপালা খুব শুষ্ক হয়ে যায় এবং অগ্নিস্পর্শকতার হয়ে ওঠে। এই পরিস্থিতিতে যে কোনো স্ফুলিঙ্গ থেকে আগুন শুরু হতে পারে। এটি সিগারেটের আগুন, যানবাহন বা বৈদ্যুতিক গোলযোগের আগুন হতে পারে।
আবহাওয়াবিদ ড্যানিয়েল এহরেসম্যানের মতে, ৭ জানুয়ারি রাতে ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত দমকা হাওয়া রেকর্ড করা হয়েছে। শুকনো গাছপালা ছাড়াও লস অ্যাঞ্জেলেসে অন্যান্য দাহ্য পদার্থ রয়েছে। যেমন–ঝুলন্ত বৈদ্যুতিক তার ও কাঠের টেলিফোন পোল।
‘সান্তা আনা’ বাতাস অতীতে ক্যালিফোর্নিয়ায় চরম দাবানলের সঙ্গে যুক্ত ছিল, যার মধ্যে ২০১৮ সালের নভেম্বরে উলসি অগ্নিকাণ্ডে তিনজন মারা গিয়েছিল এবং ১৬শ কাঠামো ধ্বংস হয়েছিল।
বিশেষজ্ঞরা অবশ্য সতর্ক করেছেন যে এ বছর আবহাওয়ার অবস্থা ভয়াবহ হবে।
ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, লস অ্যাঞ্জেলেসের জলবায়ু বিজ্ঞানী ড্যানিয়েল সোয়েন সোমবার একটি লাইভস্ট্রিমে বলেছেন, ‘আমরা সত্যিই আগের মতো ভেজা মৌসুমের পর এই মৌসুমের মতো শুষ্ক কোনো ঋতু দেখিনি, ঘাস ও গাছপালার এই অতিরিক্ত বৃদ্ধি এবং অবিলম্বে এই মাত্রার বাতাসের ঘটনা ঘটে। তবুও বাতাস অবিশ্বাস্যভাবে শুষ্ক।’
এ দাবানল কতটা ভয়াবহ
প্রশান্ত মহাসাগরীয় প্যালিসেডস অঞ্চল থেকে আগুনের সূত্রপাত। সেখান থেকে দ্রুত অন্যান্য এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। ৭ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টার দিকে (০২:০০ গ্রিনউইচ) ইটনে দাবানল লাগে। লস অ্যাঞ্জেলেসের উত্তর-পশ্চিমে সান ফার্নান্দো উপত্যকার সিলমারে একই দিনে হার্স্ট ফায়ার নামে তৃতীয় দাবানল সৃষ্টি হয়।
৮ জানুয়ারি ক্যালিফোর্নিয়ায় আরও পাঁচটি দাবানল লাগে। লস অ্যাঞ্জেলেসের লিডিয়া, সানসেট এবং উডলি; ভেনচুরার অলিভাস ও রিভারসাইডে এ দাবানল সৃষ্টি হয়। ১০ জানুয়ারি জানা যায় যে সান ফার্নান্দো উপত্যকার একটি পাড়া ওয়েস্ট হিলসে ‘কেনেথ দাবানল’ ছড়িয়ে পড়েছে। এলাকাভিত্তিক নামাঙ্কন।
অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির স্কুল অব লাইফ সায়েন্সেসের ইমেরিটাস অধ্যাপক স্টিফেন পাইন বলেন, ‘শক্তিশালী বাতাসই এ দাবানলের মূল চালিকাশক্তি। ঘূর্ণিঝড়ের সমশক্তির বাতাস। এমন আগুন থামানোর শক্তি পৃথিবীতে নেই বললেই চলে। অগ্নিনির্বাপণ কর্মীদের সাধ্যের পরিধির বহু ওপরে এ দাবানল। বাতাস বন্ধ না হওয়া বা জ্বালানি ফুরিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত এসব চলতে থাকবে।’
‘আগুন ছড়িয়ে পড়ার একটি প্রাথমিক প্রক্রিয়া আগুনের সুনামি নয়: এটি অঙ্গারের তুষারঝড়। অঙ্গারগুলো জ্বলন্ত সম্মুখভাগের অনেক সামনের ভবনগুলো জ্বালিয়ে দিতে পারে। তারপর কাঠামোগুলো একটি প্রাথমিক জ্বালানিতে পরিণত হয় এবং আগুন একটি কাঠামো থেকে অন্য কাঠামোতে লাফিয়ে নগর দাবানল হিসেবে ছড়িয়ে পড়ে।’
নিয়ন্ত্রণ
আগুনের চারপাশে পরিধি বা নিয়ন্ত্রণরেখা স্থাপন করা হয়েছে যেন এর নিয়ন্ত্রণসীমা বোঝা যায় এবং ছড়িয়ে পড়া রোধ করা যায়। আগুনের চারপাশে তৈরি যে কোনো ভৌত বাধা এই নিয়ন্ত্রণরেখা তৈরি করতে পারে। যেমন অগভীর পরিখা তৈরি। ক্যালিফোর্নিয়ার আগুনের এখনও বড় অংশ অনিয়ন্ত্রিত, যার অর্থ আরও ছড়িয়ে পড়া থেকে কোনো প্রতিরোধ নেই।
সরকারের প্রতিক্রিয়া
ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম ৭ জানুয়ারি রাতে একটি এক্স পোস্টে বলেছিলেন, ৭ হাজার ৫০০ অগ্নিনির্বাপণ কর্মী বর্তমানে মাঠে রয়েছেন। সংখ্যাটি পরবর্তী সময়ে আরও বেড়েছে। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আগুনের ফেডারেল প্রতিক্রিয়ার ওপর মনোযোগ দেওয়ার জন্য তাঁর আসন্ন ইতালি সফর বাতিল করেছেন। বাইডেন তাঁর ‘এক্স’ (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে পোস্ট করেছেন– পাঁচটি এয়ারট্যাঙ্কার ও ১০টি অগ্নিনির্বাপক হেলিকপ্টার সরবরাহ করা হয়েছে তখন পর্যন্ত। তবে বড় বাধা তীব্র বাতাস।
লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির দমকলপ্রধান অ্যান্থনি ম্যারোন এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, নেভাদাসহ আরও ছয়টি রাজ্য থেকে অগ্নিনির্বাপণ কর্মীদের ক্যালিফোর্নিয়ায় পাঠানো হচ্ছে। অতিরিক্ত এক হাজার কর্মীসহ ২৫০টি ইঞ্জিন কোম্পানিকে উত্তর ক্যালিফোর্নিয়া থেকে দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় স্থানান্তর করা হচ্ছে। কিন্তু আগুনের পরিধির সাপেক্ষে পর্যাপ্ত নির্বাপকসামগ্রী নেই। প্যালিসেডসে পানির ঘাটতির কারণে কিছু অগ্নিনির্বাপক হাইড্রেন্ট জলশূন্য হয়ে গেছে। লস অ্যাঞ্জেলেস ডিপার্টমেন্ট অব ওয়াটার অ্যান্ড পাওয়ারের প্রধান নির্বাহী জ্যানিস কুইনোনেস সংবাদ সম্মেলনে বলেন, প্যাসিফিক প্যালিসেডস তিনটি জলাধারের ওপর নির্ভরশীল। প্রতিটিতে প্রায় ১০ লাখ গ্যালন (প্রায় ৩৭ লাখ ৮০ হাজার লিটার) জল থাকে। কুইনোনেস আরও বলেন, পানি নিয়ে যথেষ্ট দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। লস অ্যাঞ্জেলেস ফায়ার ডিপার্টমেন্ট (LAFD) হলিউড, হার্স্ট এবং প্যালিসেডসের জন্য সরিয়ে নেওয়ার আদেশ জারি করেছে।
আগুন এখনও শেষ হয়নি। বাতাস না কমে যাওয়া পর্যন্ত শেষ হবে না, বলছেন কর্তাব্যক্তিরা। তারা শীত শেষের বৃষ্টির মুখাপেক্ষী হয়ে আছেন। অন্যথায় জ্বালানি থাকা পর্যন্ত আগুন জ্বলবে।
এরপর কী হবে
বাতাসের গতি কমে গিয়ে প্রায় ৩০-৫০ মাইল (৫০-৮০ কিমি/ঘণ্টা) বেগে নেমে এসেছে। কিন্তু আগুন এখনও সক্রিয়।
বাতাস কমে যাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হচ্ছে এবং শিগগির লাল পতাকার আগুনের সতর্কতা প্রত্যাহার করা হবে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন থাকবে।
স্টিফেন পাইন বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ড-পরবর্তী পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অগোছালো, দীর্ঘ ও ব্যয়বহুল হবে। আজকাল যে ধরনের প্লাস্টিক ও বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি স্বাভাবিকভাবেই ঘরবাড়িগুলোয় ব্যবহৃত হয়, সেসবের ধ্বংসাবশেষের প্রভাবে অগ্নিনির্বাপণ-পরবর্তী পরিবেশ বিষাক্ত হয়ে ওঠার ঝুঁকি আছে। আবার সব সাজিয়ে-গুছিয়ে তোলা হয়তো দুঃস্বপ্নতুল্য হবে। বীমা পরিশোধ, প্রযোজ্যতা এসব নিয়ে জটিলতা দেখা দেবে। রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত পরিপূরক উদ্যোগগুলো কতটা কাজ করবে বলা কঠিন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: লস অ য ঞ জ ল স র
এছাড়াও পড়ুন:
নেপাল, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা: দক্ষিণ এশিয়ায় জেন–জি বিপ্লবের পরবর্তী নিশানা কে
লোহার ফটক ভাঙার শব্দে চারপাশ কেঁপে উঠল। বিক্ষুব্ধ লোকজন তখন দৌড়ে ঢুকে পড়লেন ভবনের ভেতরে। কয়েক ঘণ্টা আগেও যেসব প্রতিবন্ধক ছিল ক্ষমতার প্রতীক, মুহূর্তেই সেগুলো গুঁড়িয়ে দিল জনতার ঢল।
প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের করিডর ভরে গেল কাদামাখা পায়ে হাঁটার শব্দে। কেউ জানালার কাচ ভাঙলেন, কেউ আবার দামি চাদর আর জুতা নিয়ে গেলেন।
নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা যে বাড়ি এত দিন ছিল সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে, সেদিন কয়েক ঘণ্টার জন্য তাঁরাই তা দখলে নিলেন।
এ দৃশ্য নেপালের গত সপ্তাহের। আবার এটি শ্রীলঙ্কার ২০২২ সালের কিংবা বাংলাদেশের ২০২৪ সালেরও চিত্র।
এসব আন্দোলনের আসল শক্তি হলো তরুণদের স্বপ্ন দেখা—একটা ভালো রাজনীতি আর ভালো অর্থনীতির ভবিষ্যৎ কল্পনা করার ক্ষমতা। কিন্তু সেই কল্পনার সঙ্গে বাস্তব জীবনের বড় পার্থক্য তাঁরা বুঝতে পারছেন। স্বপ্নের সঙ্গে বাস্তবের এ ফারাকই তাঁদের ক্ষোভ বাড়িয়ে দিয়েছে।পল স্ট্যানিল্যান্ড, শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক৩০ মিলিয়ন (৩ কোটি) মানুষের দেশ নেপাল, ভারত ও চীনের মাঝখানে অবস্থিত। সেখানকার সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ প্রথাগত নির্বাচনী গণতন্ত্রের চেনা ধারা ভেঙে দিয়েছে। আর দক্ষিণ এশিয়ার এ দেশগুলোয় একের পর এক সরকার পতনে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণ প্রজন্ম বিশ্বকে নতুন এক প্রশ্নের মুখে ফেলেছেন—দক্ষিণ এশিয়াই কি জেন–জি (জেনারেশন জেড) প্রজন্মের বিপ্লবের কেন্দ্রস্থল?
শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক পল স্ট্যানিল্যান্ড আল–জাজিরাকে বলেন, ‘এটা সত্যিই চোখে পড়ার মতো। এখানে একধরনের নতুন অস্থির রাজনীতির জন্ম হচ্ছে।’
গত বৃহস্পতিবার প্রায় ১০ হাজার নেপালি তরুণ–তরুণী অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করেছেন। এ তরুণ–তরুণীদের অনেকে প্রবাসী। তবে কোনো নির্বাচনী ব্যালটে নয়, বার্তা আদান–প্রদানের মাধ্যম ডিসকর্ডে ভোট দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে বাছাই করেছেন। এর আগে তিন দিনের দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতিবিরোধী বিক্ষোভ সহিংসতায় রূপ নেয় এবং সেনাসদস্য ও পুলিশের দমন–পীড়নে ৭০ জনের বেশি নিহত হন। এখন নেপাল সরকার ঘোষণা করেছে, আগামী মার্চে নতুন নির্বাচন হবে।
প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলির জেন–জি প্রজন্মকে উপহাস করার কয়েক দিনের মধ্যেই তাঁর পদত্যাগ দেখিয়ে দিয়েছে—দক্ষিণ এশিয়ার তরুণেরা বিদ্যমান রাজনৈতিক ব্যবস্থায় আস্থাহীন হলে নিজেরাই ক্ষমতা হাতে তুলে নিচ্ছেন এবং নিজেদের নিয়ন্ত্রণে অন্তর্বর্তী প্রশাসন কে হবে, তা–ও নির্ধারণ করছেন।
শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ ও নেপালের আন্দোলনের পেছনে প্রতিটির নিজস্ব ইতিহাস ও অনন্য প্রেক্ষাপট আছে। তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, এর মধ্যে মিলও আছে—নতুন প্রজন্ম আর ভাঙা প্রতিশ্রুতি মেনে নিচ্ছে না।স্ট্যানিল্যান্ড বলেন, এটি দক্ষিণ এশিয়ার জন্য নাটকীয় পরিবর্তন। এ অঞ্চল দীর্ঘদিন ধরেই রাজনৈতিক আন্দোলনের সাক্ষী, তবে সরকার পতনের ঘটনা বিরল।
‘এ ধরনের আন্দোলন বিভিন্ন দেশে সংঘটিত সামরিক অভ্যুত্থান থেকে আলাদা। দক্ষিণ এশিয়ার সংকট বরাবরই অন্যভাবে সমাধান হয়েছে, এবার সেটা ভিন্নপথে যাচ্ছে’, বলেন স্ট্যানিল্যান্ড।
শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ ও নেপালের আন্দোলনের পেছনে প্রতিটির নিজস্ব ইতিহাস ও অনন্য প্রেক্ষাপট আছে। তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, এর মধ্যে মিলও আছে—নতুন প্রজন্ম আর ভাঙা প্রতিশ্রুতি মেনে নিচ্ছে না।
এ ছাড়া দেশগুলোর আন্দোলন একে অন্যের কাছ থেকেও শিক্ষা নিচ্ছে।
তিন দেশের আন্দোলনের মূল কারণ এক—বৈষম্য আর দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনৈতিক অভিজাত শ্রেণি। এ শ্রেণি তরুণ প্রজন্মের বাস্তব চাওয়া-পাওয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল।মীনাক্ষী গাঙ্গুলি, এইচআরডব্লিউর দক্ষিণ এশিয়ার উপপরিচালক কলম্বো থেকে ঢাকা হয়ে কাঠমান্ডু: আন্দোলনের পটভূমিনেপালে সাম্প্রতিক জেন–জি আন্দোলনের সূত্রপাত সরকারের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করার সিদ্ধান্ত থেকে। সরকার বলেছিল, প্ল্যাটফর্মগুলোর অপব্যবহার হচ্ছে এবং নিয়ম মেনে নিবন্ধন করছে না। তবে ক্ষোভের প্রকৃত কারণ অন্য—বৈষম্য, দুর্নীতি আর স্বজনপ্রীতি; তা–ও এমন একটি দেশে, যেখানে প্রবাসী নেপালিদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতির এক–তৃতীয়াংশ অবদান রাখছে।
হাজার হাজার কিশোর–কিশোরী স্কুলের ইউনিফর্ম পরেই রাস্তায় নেমে আসে। ৭০ জনের বেশি নিহত হয়, আহত হয় শত শত।
শ্রীলঙ্কার কলম্বোতে প্রেসিডেনশিয়াল সচিবালয়ের সামনে বিক্ষোভকারীদের যাওয়া ঠেকাতে সড়ক অবরোধ করে পুলিশের বিশেষ টাস্কফোর্স