সেন্টার ফর কমিউনিকেশন অ্যাকশন বাংলাদেশ-সিক্যাব-এর নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ জেইন আল-মাহমুদ বলেছেন, “বিভিন্ন সংস্থার জরিপে দেখা গেছে, নব্বইয়ের দশকে যেখানে ৮০শতাংশ পোশাক শ্রমিক নারী ছিলেন, এখন তা ৫০-৬০ শতাংশে নেমে এসেছে। বাংলাদেশে তৈরি পোশাক শিল্পের মতো অন্য কোনো খাতে এত বিপুল সংখ্যক নারীদের কাজের সুযোগ নেই। পুরুষেরা চাকরি হারালে বিকল্প কাজ পায়, কিন্তু নারীদের জন্য সেই সুযোগ সীমিত। পোশাক খাতে নারী শ্রমিক কমে গেলে অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এটা উদ্বেগজনক।” 

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে গাজীপুরের টেকনগপাড়ায় সাগর সৈকত কনভেনশন সেন্টারে সেন্টার ফর কমিউনিকেশন অ্যাকশন বাংলাদেশ (সি-ক্যাব) আয়োজিত এক কর্মশালায় পোশাকশিল্পে নারীর ক্ষমতায়নে গণমাধ্যমের ইতিবাচক ভূমিকা এবং কীভাবে গার্মেন্টস শিল্পের নারী শ্রমিকদের জীবন-ঘনিষ্ঠ কাহিনী গণমাধ্যমে উঠে আসতে পারে, সেই বিষয়ে আলোচনা করা হয়। 

এইচ অ্যান্ড এম ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে সি-ক্যাব ও ১৪টি সহযোগী সংস্থা ‘অপরাজিতা’ প্রকল্পের মাধ্যমে নারী গার্মেন্টস কর্মীদের ক্ষমতায়নে কাজ করছে। কর্মশালায় জানানো হয়, আইএলও-২০১৯ এবং বিবিএস ২০১২ এর সার্ভে অব মেনুফ্যাকচারিং ইন্ড্রাস্ট্রিজ’র প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী নব্বইয়ের দশকে যেখানে ৮০% পোশাক শ্রমিক নারী ছিলেন, এখন তা ৫০-৬০ শতাংশে নেমে এসেছে। 

সি-ক্যাবের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ জেইন আল-মাহমুদ বলেন, “বাংলাদেশে তৈরি পোশাক শিল্পের মতো অন্য কোনো খাতে এত বিপুল সংখ্যক নারীদের কাজের সুযোগ নেই। পুরুষেরা চাকরি হারালে বিকল্প কাজ পায় কিন্তু নারীদের জন্য সেই সুযোগ সীমিত। তাই পোশাক খাতে নারী শ্রমিক কমে গেলে সামাজিক সমস্যা ও অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।” 

বক্তারা জানান, প্রতিবেদন তৈরির সময় নারীদের শুধুমাত্র ভুক্তভোগী হিসেবে না দেখে, তাদের সফলতার গল্পগুলো তুলে ধরতে হবে। কর্মশালায় দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা অংশ নেন এবং পোশাকখাতে নিয়োজিত নারীদের জীবনমান উন্নয়নের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। 

সি-ক্যাবের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার ফারজিয়া আহমেদ ও হাসান জেমস ‘অপরাজিতা’ প্রকল্পের কার্যক্রম এবং নারী কর্মীদের ওপর পরিচালিত গবেষণার তথ্য তুলে ধরেন। কর্মশালার শেষে সি-ক্যাব নারী পোশাককর্মীদের নিয়ে গভীর বিশ্লেষণী প্রতিবেদন তৈরির জন্য ১০জন সাংবাদিককে ফেলোশিপ প্রদানের ঘোষণা দেয়। সি-ক্যাব বিভিন্ন সামাজিক সমস্যার সমাধানে গবেষণা ও যোগাযোগের মাধ্যমে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করে যাচ্ছে। 

কর্মশালায় সাংবাদিকরা মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন। পরে এ সংক্রান্ত রিপোর্টিংয়ের জন্য তাদেও কাছ থেকে পয়েন্ট সংগ্রহ করেন আয়োজক কর্তৃপক্ষ। 

সি-ক্যাব ২০১৮ সাল থেকে নারী শ্রমিকসহ বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা ও বিশ্লেষণ ধর্মী কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির কমিউনিকেশন অফিসার আখিউজ্জামান মেনন।

ঢাকা/রেজাউল/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ