এত পাখি একসাথে আগে কখনো দেখেনি স্থানীয়রা
Published: 18th, January 2025 GMT
অতিথি পাখির নিরাপদ অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে লক্ষ্মীপুরের জনেস্বর দিঘী। হাজারো পাখির কলকাকলিতে এখন মুখরিত হয়ে উঠেছে পুরো গ্রাম। সদরের উত্তর জয়পুরে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী এ দিঘীর পাড়ে পাখির জলকেলি আর নয়নাভিরাম দৃশ্য উপভোগ করতে দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন পাখি প্রেমীরা।
এসব পাখি সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের দাবী এলাকাবাসীর। জেলা প্রশাসক বলছেন বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।
লক্ষ্মীপুর সদরের হাজিরপাড়া থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে উত্তর জয়পুর এলাকায় অবস্থিত প্রায় ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী জনেস্বর দিঘী এটি। এখানে ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রায় দুই একরের দিঘীতে এখন শীতকালের অতিথি পাখির অভয়ারণ্য। চারপাশে বাঁশ ঝাড়ে ঘেরা জনেস্বর দিঘীর জলে অতিথি পাখির (বালিহাঁস) আগমনে দিঘীর সৌন্দর্য আরও ফুটে উঠেছে। দিঘীজুড়ে হাজার হাজার পাখির এ যেন এক মিলন মেলা।
প্রতিদিন ভোর রাতে ঝাঁক বেঁধে দিঘীতে নামে এসব পাখিরা। আর সন্ধ্যা নামলে নান্দনিক কসরতে ডানা মেলে আকাশে উড়াউড়ি করে তারা। পাখির কিচির মিচির শব্দে ও জলকেলিতে পুরো এলাকা মুখর হয়ে উঠে। ঘুম ভাঙ্গে দিঘী পাড়ের বাসিন্দাদের। স্থানীয়রা নিজেদের উদ্যোগেই সবাই মিলে এসব পাখিদের নিরাপত্তায় কাজ করছেন। পাখির বিশ্রামে বাঁশ ও কঞ্চি দিয়ে গড়ে তুলেছেন অভয়াশ্রম।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, পাখিদের জলকেলি, খুঁনসুটি আর কিচির মিচির শব্দ উপভোগ করতে প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে পরিবার পরিজন নিয়ে ছুটে আসছেন পাখি প্রেমীরা। এমন অসংখ্য পাখি এক সঙ্গে আর দেখা হয়নি। মন খারাপ হলেই দিঘীর পাড়ে ছুটে আসেন অনেকে। একটু বসে পাখি দেখে মনে শান্তি নিয়ে ফিরেন দর্শনার্থীরা। দিঘীটির পাশে তেমন বসার স্থান না থাকায় অনেকে দাঁড়িয়ে নয়নাভিরাম দৃশ্য উপভোগ করেন।
স্থানীয়দের দাবি, পাখি ও ভ্রমণ পিপাসুদের নিরাপত্তায় এবং পর্যটন শিল্প বিকাশে ভূমিকা রাখতে পারে দিঘীটি।
লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার জানান, জনেস্বর দিঘীসহ একাধিক স্থানে অতিথি পাখির অভয়াশ্রমের খবর শুনেছেন তিনি। তবে এসব স্থানে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় পর্যটন স্পট করতে কিছুটা বাধা হলেও পাখিদের নিরাপত্তাসহ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
ঢাকা/লিটন/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রুয়া নির্বাচন স্থগিতের প্রতিবাদে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে ছাত্রশিবিরের বিক্ষোভ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের (রুয়া) কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন স্থগিতের প্রতিবাদে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সাড়ে চারটার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এ কর্মসূচি শুরু করেন তাঁরা। এর আগে তাঁরা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক হয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, রুয়া অ্যাডহক কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৯ মে পুনর্মিলনী এবং ১০ মে রুয়ার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গঠনতন্ত্র লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জন করেন বিএনপিপন্থী সাবেক শিক্ষার্থীরা। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দুই পক্ষের নির্বাচন নিয়ে পাল্টাপাল্টি যুক্তি চলতে থাকে।
এদিকে গতকাল ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে রুয়া নির্বাচন কমিশনের প্রধান কমিশনার পদত্যাগ করেন। সেই সঙ্গে গতকাল বুধবার গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদের বাসভবনে ককটেল হামলার ঘটনা ঘটে। এ পরিস্থিতিতে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্ত জানিয়ে নোটিশ জারি করেন রুয়ার অ্যাডহক কমিটির আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ করছেন।
এ সময় বিক্ষোভকারীরা ‘সিলেকশন না ইলেকশন, ইলেকশন ইলেকশন’, ‘প্রশাসন জবাব দে, রুয়া কি তোর বাপের রে’, ‘রুয়া নিয়ে টালবাহানা, চলবে চলবে না’, ‘অ্যাডহক না নির্বাচন, নির্বাচন নির্বাচন’, ‘সিন্ডিকেট না রুয়া, রুয়া রুয়া’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।
এ সময় ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতা-কর্মীদেরও উপস্থিত থেকে বক্তব্য দিতে দেখা গেছে। পরে জামায়াত ইসলামীর কয়েকজন নেতাও কর্মসূচিতে যোগ দেন। একপর্যায়ে বিকেল পৌনে ছয়টার দিকে বিক্ষোভকারীদের একটি প্রতিনিধি দল উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনার জন্য বাসভবনের ভেতরে প্রবেশ করে। বিকেল ছয়টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ চলছিল।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘১০ মে রুয়া নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আজ হঠাৎ সেই নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেছে প্রশাসন। এই সিদ্ধান্তে ক্যাম্পাসের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা মনঃক্ষুণ্ন হয়েছে। যারা রুয়া নির্বাচন দিতে পারে না, তারা রাকসু নির্বাচন কীভাবে বাস্তবায়ন করবে? ১০ মের নির্বাচন সেই একই তারিখে হতে হবে। এই সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।’