সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে খাল খননে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার উত্তর ফেঞ্চুগঞ্জ ইউনিয়নের কয়েকটি হাওরে কৃষকদের সুবিধা দিতে খাল খননে প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়।
অকাল বন্যার হাত থেকে স্থানীয় কৃষকদের ফসল রক্ষা ও বছরব্যাপী তাদের চাহিদামতো সেচ সুবিধা নিশ্চিতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এ প্রকল্প হাতে নেয়। এর আওতায় ইউনিয়নের মানিককোনা এলাকার দুই কিলোমিটার দীর্ঘ বড় খাল খননের জন্য ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ১ কোটি ১৮ লাখ টাকা। চলমান ওই প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ পর্যন্ত বড় খালটি খনন করা হয়েছে নাম মাত্র। খালের গভীরতা ও প্রশস্ততার কাজ নিয়ম মেনে করা হয়নি বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী।
গত সোমবার মানিককোনা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, প্রায় এক মাস ধরে চলমান এলজিইডির ওই প্রকল্পের কাজের তথ্য সংযোজিত কোনো সাইনবোর্ড নেই। তা ছাড়া খালের কোন অংশ কত গভীরতায় খনন করা হয়েছে, তা জানা যায়নি। নানা অজুহাতে খালের বেশ কিছু জায়গা একেবারে খনন করা হচ্ছে না। তা ছাড়া খননকৃত খালের মাটি পাড়েই স্তূপ করে রাখা হয়েছে। যে কোনো সময় সেগুলো আবার খালে পড়ে তা ভরাট হয়ে যেতে পারে।
এদিকে খননকৃত খালের একাধিক স্থানে পাড়ে ফাটল দেখা দিয়েছে। খাল খননে অনিয়মের অভিযোগ তুলে স্থানীয় এলাকাবাসী এক সপ্তাহ আগে মানিকগঞ্জ বাজারে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করলে তাদের চাঁদাবাজ দাবি করা হয় সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে। বড় খাল খননের ক্ষেত্রে এলজিইডির কার্যাদেশপ্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স লতিফ ট্রেডার্সের কোন প্রতিনিধি প্রকল্পের কাজ তদারক করেন, তাঁরও দেখা মেলেনি।
এ ব্যাপারে কয়েক দিন ধরে সমকালের পক্ষ থেকে লতিফ ট্রেডার্সের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ঠিকাদার বা তাঁর প্রতিনিধি সাড়া দেননি। এলাকাবাসী জানায়, এ নিয়ে ঠিকাদারকে এলাকায় দেখা না গেলেও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও তাঁর সমর্থকরা এ ব্যাপারে আগ্রহী বেশি। এলজিইডির মাঠ পর্যায়ের যথাযথ তদারকির অভাবে প্রকল্পে দুর্নীতি হচ্ছে। এতে সরকারি টাকা অপচয়ই নয়, দুর্ভোগ পোহাতেও হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
মানিকগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী নিয়ামত আলী জানান, দুর্নীতির কারণে খাল খননের কাজ যথাযথভাবে হচ্ছে না। উত্তর ফেঞ্চুগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফয়সল আহমদ জানান, এই খালের কাজ নিয়ে স্থানীয় এলজিইডি প্রকৌশলীর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি এ ব্যাপারে কোনো সদুত্তর দেননি।
ইউপি চেয়ারম্যান আবজাল হোসেন জানান, চলমান প্রকল্পের কাজে অনিয়ম দেখলে সংশ্লিষ্টদের কাছে অভিযোগ করেন। এখানে তাঁর ব্যক্তিগত কোনো স্বার্থ নেই। চলমান কাজের ওপর তাঁর নজরদারি রয়েছে।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: খ ল খনন প রকল প চলম ন

এছাড়াও পড়ুন:

রুয়া নির্বাচন স্থগিতের প্রতিবাদে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে ছাত্রশিবিরের বিক্ষোভ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের (রুয়া) কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন স্থগিতের প্রতিবাদে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সাড়ে চারটার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এ কর্মসূচি শুরু করেন তাঁরা। এর আগে তাঁরা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক হয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, রুয়া অ্যাডহক কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৯ মে পুনর্মিলনী এবং ১০ মে রুয়ার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গঠনতন্ত্র লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জন করেন বিএনপিপন্থী সাবেক শিক্ষার্থীরা। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দুই পক্ষের নির্বাচন নিয়ে পাল্টাপাল্টি যুক্তি চলতে থাকে।

এদিকে গতকাল ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে রুয়া নির্বাচন কমিশনের প্রধান কমিশনার পদত্যাগ করেন। সেই সঙ্গে গতকাল বুধবার গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদের বাসভবনে ককটেল হামলার ঘটনা ঘটে। এ পরিস্থিতিতে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্ত জানিয়ে নোটিশ জারি করেন রুয়ার অ্যাডহক কমিটির আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ করছেন।

এ সময় বিক্ষোভকারীরা ‘সিলেকশন না ইলেকশন, ইলেকশন ইলেকশন’, ‘প্রশাসন জবাব দে, রুয়া কি তোর বাপের রে’, ‘রুয়া নিয়ে টালবাহানা, চলবে চলবে না’, ‘অ্যাডহক না নির্বাচন, নির্বাচন নির্বাচন’, ‘সিন্ডিকেট না রুয়া, রুয়া রুয়া’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।

এ সময় ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতা-কর্মীদেরও উপস্থিত থেকে বক্তব্য দিতে দেখা গেছে। পরে জামায়াত ইসলামীর কয়েকজন নেতাও কর্মসূচিতে যোগ দেন। একপর্যায়ে বিকেল পৌনে ছয়টার দিকে বিক্ষোভকারীদের একটি প্রতিনিধি দল উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনার জন্য বাসভবনের ভেতরে প্রবেশ করে। বিকেল ছয়টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ চলছিল।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘১০ মে রুয়া নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আজ হঠাৎ সেই নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেছে প্রশাসন। এই সিদ্ধান্তে ক্যাম্পাসের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা মনঃক্ষুণ্ন হয়েছে। যারা রুয়া নির্বাচন দিতে পারে না, তারা রাকসু নির্বাচন কীভাবে বাস্তবায়ন করবে? ১০ মের নির্বাচন সেই একই তারিখে হতে হবে। এই সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ