ঠিকাদারের কাছে ১০ লাখ টাকা ঘুষ দাবি, কর্মকর্তাকে বদলি
Published: 19th, January 2025 GMT
রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে খাদ্য বিভাগে বস্তা সরবরাহ করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন এক ঠিকাদার। প্রতিটি বস্তা গ্রহণের জন্য তার কাছে গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) পক্ষ থেকে বস্তপ্রতি ৪ টাকা ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের জন্য ১ টাকা করে ঘুষ দাবি করা হয়েছে। দুই কর্মকর্তার জন্য এই ঘুষের দফারফা করছিলেন খাদ্য বিভাগেরই এক পরিদর্শক। বিষয়টি খাদ্য অধিদপ্তরে জানাজানি হলে তাকে তাৎক্ষণিক সিলেটে বদলি করা হয়েছে।
এদিকে, ঘুষ চাওয়ার ব্যাপারে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। ঢাকার মেসার্স হারুন অ্যান্ড সন্সের স্বত্ত্বাধিকারী হারুন-অর-রশিদ গত ৮ জানুয়ারি এই অভিযোগ করেন। হারুন জানান, বস্তাপ্রতি তিনি সর্বোচ্চ ২ টাকা দিতে রাজি ছিলেন। মধ্যস্থতাকারী কর্মকর্তা ৫ টাকার নিচে নামেননি। ফলে তার বস্তা ফেরত দেওয়া হয়েছে।
হারুন মধ্যস্থতাকারী কর্মকর্তা হিসেবে খাদ্য বিভাগেরই পরিদর্শক আবদুর রহিমের নাম উল্লেখ করেছেন। এই আবদুর রহিম দীর্ঘসময় রাজশাহীতে কর্মরত ছিলেন। অনিয়ম-দুর্নীতির বহু অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর ও পাবনায় তিনি বিপুল সম্পদ গড়েছেন। একাধিকবার তিনি বিভাগীয় শাস্তির মুখোমুখি হয়েছেন। এবার ঘুষ চাওয়ার ঘটনা জানাজানি হলে তাকে সিলেটে বদলি করা হয়েছে। তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জেই থাকতে তিনি গিয়েছেন হাইকোর্টে।
দুই কর্মকর্তার জন্য ঘুষের দেনদরবার করার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পরিদর্শক আবদুর রহিম বলেন, ‘‘আমি তদন্ত কমিটির সামনে আমার বক্তব্য উপস্থাপন করেছি। ঠিকাদার আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছেন। অভিযোগের কারণে সিলেটে বদলির বিষয়টিও সঠিক না।’’
খাদ্য বিভাগ থেকে জানা গেছে, আমন ২০২৪-২৫ সংগ্রহ সফল করার লক্ষ্যে মেসার্স হারুন অ্যান্ড সন্সের সঙ্গে ৩০ কেজি ধারণক্ষমতার ৬ লাখ পিস বস্তা সংগ্রহের চুক্তি করেছে খাদ্য অধিদপ্তর। প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যে ৪ লাখ পিস বস্তা সরবরাহ করেছে। শুধু চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর খাদ্য গুদামের ২ লাখ পিস বস্তা সরবরাহ করতে পারেনি ঘুষ চাওয়ার কারণে।
মেসার্স হারুন অ্যান্ড সন্স রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার খেতুর খাদ্যগুদামে ৫০ হাজার, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমনুরা খাদ্যগুদামে আড়াই লাখ, রহনপুর খাদ্যগুদামে এক লাখ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর খাদ্যগুদামে দুই লাখ খালি বস্তা সরবরাহের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল। প্রতিষ্ঠানটি শুরুতে রহনপুরে এক লাখ বস্তা সরবরাহ করে। এরপর চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর খাদ্যগুদামে এক ট্রাক বস্তা পাঠানোর পর অনৈতিক আবদারের মুখে পড়ে প্রতিষ্ঠানটি।
লিখিত অভিযোগে হারুন অ্যান্ড সন্স জানায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর খাদ্যগুদামের ওসি শাকিলা নাসরিন নভেম্বরের শেষ দিকে তাকে ফোন করেন এবং জরুরি ভিত্তিতে তার গুদামে বস্তা সরবরাহ করতে বলেন। তার কথায় তিনি এক ট্রাক বস্তা পাঠান গত ১ ডিসেম্বর। ট্রাকে ৩১ হাজার পিস বস্তা ছিল। বস্তা যাওয়ার পর ওসি শাকিলা নাসরিন সেগুলো গ্রহণে গড়িমশি করতে থাকেন। একপর্যায়ে তিনি জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের পরিদর্শক আবদুর রহিমের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন ঠিকাদার হারুন-অর-রশিদকে। হারুন ওই কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তখন রহিম তাকে বলেন, বস্তাপ্রতি ওসিকে ৪ টাকা ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে ১ টাকা করে দিতে হবে। তাহলে তার বস্তা গ্রহণ করা হবে।
এই ঘটনার পর পরিদর্শক রহিমকে বদলি করা হলেও ওসি শাকিলা নাসরিন আছেন বহাল তবিয়তে। অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্যের জন্য শনিবার (১৯ জানুয়ারি) শাকিলা নাসরিনকে তিনবার ফোন দেওয়া হয়। তিনি ফোন ধরেননি। পরবর্তীতে তার ফোন নম্বরে ক্ষুদেবার্তা পাঠানো হয়। এরপরও তার সাড়া মেলেনি। এ কারণে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মুহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘‘আমার নাম করে আবদুর রহিম ঘুষ দাবি করেছেন কি-না, এটি আমার জানা নেই। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। তদন্তে সঠিক ঘটনা বের হয়ে আসবে।’’
ঠিকাদার হারুন অর-রশিদ জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর খাদ্যগুদামে তাকে ২ লাখ পিস বস্তা সরবরাহ করতে হবে। এই বস্তার জন্য তার কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা ঘুষ আদায়ের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। হয়রানি এড়াতে তিনি বস্তাপ্রতি সর্বোচ্চ ২ টাকা করে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পরিদর্শক রহিম রাজি হননি। এ অবস্থায় তিনি বস্তাভর্তি ট্রাক ফেরত পাঠাতে বলেন কিন্তু ওসি শাকিলা সেটিও করছিলেন না। ৩ দিন তার ট্রাক আটকে রাখা হয়। ফলে তাকে অতিরিক্ত ৭২ হাজার টাকা ট্রাকভাড়া দিতে হয়। ৩ দিন পর বস্তাভর্তি ট্রাক ফেরত পাঠানো হয় গুদাম থেকে।
হারুন অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, গুদামে ঘুষের জন্য বস্তা দিতে না পেরে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসক জানান, হার্টের মাইনর অ্যাটাক হয়েছে। মানসিক চাপে তিনি হার্ট অ্যাটাক করেন জানিয়ে এই ঠিকাদার অভিযোগের সঙ্গে তার চিকিৎসার সমস্ত কাগজপত্রও দাখিল করেছেন।
হারুন জানান, হাসপাতাল থেকে ছুটি পেয়ে তিনি বস্তা না নেওয়ার ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ করেন। এরপর খাদ্য বিভাগ বিষয়টির তদন্ত করছে। ওসি শাকিলা নাসরিন তদন্ত কমিটির কাছে দাবি করছেন, সরবরাহ করা বস্তা ছিল ওজনে কম। হারুন প্রশ্ন তোলেন, ‘‘বস্তায় ত্রুটি থাকলে তিন দিন কেন আটকে রাখলেন? ৩ দিন বস্তা আটকে রেখে রোদে শুকানো হয়েছে। এরপর বলা হচ্ছে যে বস্তা ছিল ওজনে কম।’’ হারুন বলেন, ‘‘তদন্ত কমিটি ৩ দিন ট্রাক আটকে রাখার ব্যাখ্যা চেয়েছিল। তারা সিসি ক্যামেরার ফুটেজও চেয়েছিল। ওসি দাবি করেন, সিসি ক্যামেরা নেই। কিন্তু এখনও গুদামে ক্যামেরা আছে।’’
ঠিকাদার হারুনের অভিযোগ তদন্ত করছেন খাদ্য অধিদপ্তরের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক সেলিমুল আজম। তিনি জানান, ঠিকাদার হারুনের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত শেষ হয়েছে। আগামী দু’-একদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন মহাপরিচালকের কাছে হস্তান্তর করা হবে। তদন্তে কী পাওয়া গেছে তা এখনই জানাতে চাননি তিনি।
ঢাকা/কেয়া/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরবর হ করত ক আবদ র র তদন ত ক কর ছ ন র জন য ব ষয়ট
এছাড়াও পড়ুন:
৭৭ মেট্রিক টন চাল তুলে নিয়েছেন ডিলার, উপকারভোগীরা জানেন ‘বরাদ্দ হয়নি’
মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলায় গত জুলাই মাসে ট্রেডিং করপোরেশন বাংলাদেশের (টিসিবি) উপকারভোগীদের জন্য ৭৭ দশমিক ৮ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ করা হয়েছিল। প্রক্রিয়া অনুযায়ী উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে এ চাল খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির (ওএমএস) একজন ডিলার (পরিবেশক) তুলেও নেন। তবে ওই মাসে টিসিবির অন্য পণ্য পেলেও চাল পাননি বলে অভিযোগ করেছেন উপকারভোগীরা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মহম্মদপুরের ৮ ইউনিয়নে টিসিবির উপকারভোগী কার্ডধারী আছেন ১৫ হাজার ৫৬৭ জন। এসব উপকারভোগী নিজেদের কার্ড দেখিয়ে প্রতি মাসে একবার ইউনিয়নের টিসিবির নিয়োগ করা ডিলারের কাছ থেকে বাজারের চেয়ে কম মূল্যে তেল, চিনি, ডাল ও চাল কিনতে পারেন। গত জুলাইয়ে ডিলারদের কাছ থেকে তেল, চিনি ও ডালের একটি প্যাকেজ কিনতে পেরেছেন তাঁরা। ওই মাসে চালের বরাদ্দ আসেনি বলে জানানো হয় কার্ডধারীদের।
মহম্মদপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে পাওয়া নথিতে দেখা গেছে, গত ৩০ জুলাই উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. মজনুর রহমান স্বাক্ষরিত দুইটি বিলি আদেশে (ডিও) উপজেলার হোসেনিয়া কান্তা ঋতু নামে একজন ওএমএস ডিলারের অনুকূলে ৭৭ দশমিক ৮৩৫ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। ওই দিনই মহম্মদপুর ও বিনোদপুর খাদ্যগুদাম থেকে এ চাল তুলেও নেওয়া হয়।
সেখানে ৩০ টাকা কেজিতে চাল পাওয়া যায়। বাজার থেকে ওই চাল কিনতে কেজিতে প্রায় ৫০ টাকা লাগে। জুলাই মাসে চাল না পাওয়ায় কিছুটা কষ্টই হইছে।শরিফা, টিসিবির কার্ডধারী, রাজাপুর ইউনিয়নটিসিবি ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন টিসিবি উপকারভোগীদের চাল ছাড়া অন্য পণ্য সরাসরি তাঁদের নিয়োগ করা ডিলারদের কাছে সরবরাহ করে। চালের বরাদ্দ দেওয়া হয় খাদ্য বিভাগ থেকে। এ অনুযায়ী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে প্রথমে খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে নিয়োগ করা ওএমএস বা খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলারদের অনুকূলে ২৬ টাকা কেজি দরে চাল বরাদ্দ দেয়। সেই চাল ওই ডিলারদের কাছ থেকে ২৮ টাকা কেজি দরে নেন টিসিবির ডিলাররা। এরপর তাঁরা ৩০ টাকা কেজি দরে ওই চাল উপকারভোগীদের কাছে বিক্রি করেন।
উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের পারুল নামে টিসিবির এক উপকারভোগী ১ সেপ্টেম্বর জানান, আগস্ট মাসে চাল, ডাল, তেল ও চিনির প্যাকেজ পেলেও জুলাই মাসে তাঁদের চাল ছাড়া অন্য তিন ধরনের পণ্যের প্যাকেজ দেওয়া হয়েছিল। জুলাই মাসে তাঁদের জানানো হয় চাল বরাদ্দ হয়নি।
বিষয়টি জানতে উপজেলার ৮ ইউনিয়নে টিসিবির নিয়োগ করা ৮ জন ডিলারের সঙ্গে কথা বলেছেন এই প্রতিবেদক। তাঁদের মধ্যে মহম্মদপুর সদর, নহাটা, পলাশবাড়ীয়া, বালিদিয়া, রাজাপুর ও বাবুখালী ইউনিয়নের ডিলার জানিয়েছেন, জুলাই মাসে তাঁদেরকে চাল দেওয়া হয়নি। নহাটা ও রাজাপুর ইউনিয়নের ডিলার মিলন ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মিলন ঘোষ ৪ সেপ্টেম্বর বলেন, ‘জুলাই মাসে আমাদের বলা হইছিল চাল বরাদ্দ নেই। এ কারণে চাল ছাড়া অন্য পণ্যগুলো বিক্রি করেছি। তবে অ্যাপে দেখাইছিল চাল। কিন্তু আমরা পাইনি।’
হোসনিয়া কান্তা উপজেলার বিনোদপুর এলাকার ওএমএস ডিলার। গত ২৫ জুলাই লটারির মাধ্যমে তিনিসহ তিনজন উপজেলায় ওএমএস ডিলার হিসেবে নিয়োগ পানঅবশ্য বিনোদপুর ও দীঘা ইউনিয়নের দুই ডিলার দাবি করেছেন তাঁরা অন্যান্য পণ্যের সঙ্গে চালও কার্ডধারীদের কাছে বিক্রি করেছেন। তবে দুই ইউনিয়নের অন্তত ১০ জন উপকারভোগীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে তাঁরা কেউই চাল পাননি। এর মধ্যে বিনোদপুর বাজারের একজন ফল ব্যাবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘জুলাই মাসে ডিলার জানাইছিল চাল ফুরায় গেছে।’
হোসনিয়া কান্তা উপজেলার বিনোদপুর এলাকার ওএমএস ডিলার। গত ২৫ জুলাই লটারির মাধ্যমে তিনিসহ তিনজন উপজেলায় ওএমএস ডিলার হিসেবে নিয়োগ পান বলে খাদ্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে। এ বিষয়ে জানতে হোসেনিয়া কান্তার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায়নি। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে সরবরাহ করা তাঁর মুঠোফোনে সোমবার যোগাযোগ করা হলে একজন ধরে জানান, ওই নম্বর হোসেনিয়া কান্তা ঋতু নামে কেউ ব্যবহার করেন না।
জানতে চাইলে টিসিবির ঝিনাইদহ ক্যাম্প অফিসের উপপরিচালক আকরাম হোসেন সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘টিসিবির চাল খাদ্য বিভাগ থেকে সরবরাহ করা হয়। আর বিতরণ কার্যক্রম তদারকির জন্য প্রতিটি উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে একটি কমিটি রয়েছে। যেখানে প্রতি ইউনিয়নে একজন ট্যাগ অফিসার আছেন, যিনি এগুলো তদারকি করেন।’
জেলার কয়েকজন চাল ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২৬ টাকা কেজি দরে কেনা এসব চাল বাজারে প্রায় ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। উপকারভোগীদের কাছে তা ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করার কথা। এ হিসাবে উপকারভোগীদের ফাঁকি দিয়ে এ চাল বাজারে বিক্রি করতে পারলে কেজিতে ২২ থেকে ২৪ টাকা লাভ হয়।
চাল না পাওয়ার বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেননি বলে জানিয়েছেন মহম্মদপুরের ইউএনও শাহীনুর আক্তার। সোমবার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘চাল দেওয়া হয়নি এখন পর্যন্ত এমন অভিযোগ কেউ দেয়নি। খাদ্য অফিস থেকে আমি যত দূর জানতে পেরেছি তাতে সবকিছু দেওয়া হয়ে গেছে। বরাদ্দ থাকলে তা আটকে রাখার সুযোগ নেই। তারপরও কোনো অভিযোগ থাকলে খতিয়ে দেখব।’
হঠাৎ এক মাসে চাল না পাওয়ায় বিপাকে পড়েন উপকারভোগীরা। রাজাপুর ইউনিয়নের শরিফা নামের টিসিবি কার্ডধারী এক নারী বলেন, ‘সেখানে ৩০ টাকা কেজিতে চাল পাওয়া যায়। বাজার থেকে ওই চাল কিনতে কেজিতে প্রায় ৫০ টাকা লাগে। জুলাই মাসে চাল না পাওয়ায় কিছুটা কষ্টই হইছে।’