সম্মিলিতভাবে ১৮ কোটি মানুষের বঞ্চনা ঘোচাতে চাই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন।

তিনি বলেন, “আমাদের সিভিল সার্ভিসের লোকজন আন্দোলন করছে জনপ্রশাসন দপ্তরে, তাদের দাবি দাওয়া নিয়ে। তারা বঞ্চিত, তারা বঞ্চনার শিকার। দেশের ১৮ কোটি মানুষ যে বঞ্চিত হল, তারা কোথায় যাবে? তাদের বঞ্চনার কথা কার কাছে বলবে? তাদের বঞ্চনার কথা কে দেখবে, ইলেকশন কমিশন? আমরা সম্মিলিতভাবে তাদের বঞ্চনা ঘোচাতে চাই। তারা যে এতদিন বঞ্চিত হয়েছেন ভোটের অধিকার থেকে, এতদিনে সুযোগ এসেছে আমাদের কাছে, ইনশাআল্লাহ আমরা এ সুযোগ নেব।”

সোমবার (২০ জানুয়ারি) সকালে সাভারে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচির উদ্বোধনী আয়োজনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি। ‘সঠিক তথ্যে ভোটার হবো, নির্বাচনে ভোট দিব’ স্লোগানে সাভার উপজেলা পরিষদে আয়োজিত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উদ্বোধন করা হয়েছে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচি। এর মধ্য দিয়েই আজ থেকে সারা দেশে শুরু হলো ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম।

আরো পড়ুন:

অনিশ্চিত বুমরাহকে রেখেই ভারতের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দল ঘোষণা

মাথায় চ্যাম্পিয়নস ট্রফি, বিপিএলে তাড়াহুড়ো নেই সৌম্যর

এসময় উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশে সিইসি বলেন, “আমি আপনাদের সবার সহযোগিতা চাই। আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব না। জাতির কাছে যে ওয়াদা আমরা করেছি, সেই ওয়াদা পালনে আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া লড়াই কঠিন হবে।”

প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনাররা হালনাগাদ কার্যক্রম নিয়ে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন এবং সুষ্ঠ ও নির্ভুল তথ্য নিয়ে হালনাগাদ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন। দুপুর ১২টায় সাভার উপজেলা পরিষদে বেলুন ও কবুতর উড়িয়ে তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম উদ্বোধন ঘোষণা করেন সিইসি।

নির্বাচন কমিশনাররা তাদের বক্তব্যে, হালনাগাদের সময় জন্মনিবন্ধন বা শিক্ষা সনদ অনুযায়ী নাম, বয়স ও স্থায়ী ঠিকানা সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ করা এবং দ্বৈত ভোটার বা দুইবার ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত না করার বিষয়ে তথ্য সংগ্রহকারীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানান। শতভাগ নির্ভুল হালনাগাদ ভোটার তালিকা করতে সবার সহযোগিতা কামনা করেন তারা।

এদিকে, প্রথমবারের মতো ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে পেরে উচ্ছ্বসিত নতুন ভোটাররা। সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগের প্রত্যাশা তাদের।

এবারের তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রমে ২০০৮ সালের ১ জানুয়ারি বা তার পূর্বে জন্মগ্রহণকারী নাগরিক এবং বিগত সময়ে যারা হালনাগাদে বাদ পড়েছেন তাদের তথ্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে সংগ্রহ করবে নির্বাচন কমিশনের নিয়োগপ্রাপ্ত তথ্য সংগ্রহকারীরা। এজন্য দেশব্যাপী ৬০ হাজার তথ্য সংগ্রহকারী কাজ করবে। আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে এই কার্যক্রম। সুষ্ঠুভাবে কাজ সম্পন্ন করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তথ্য সংগ্রহকারীরা।

নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- নির্বাচন কমিশনার অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো.

সানাউল্লাহ, আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, বেগম তাহমিদা আহমদ এবং আব্দুর রহমানেল মাছউদ, পুলিশের ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি একেএম আওলাদ হোসেন, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী। 

ঢাকা/সাব্বির/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র সহয গ ত

এছাড়াও পড়ুন:

সংস্কার ও নির্বাচন উভয়টি প্রয়োজন: তারেক রহমান

‘সংস্কার ও নির্বাচন উভয়টি প্রয়োজন’-এমন দলীয় ভাবনার কথা তুলে ধরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান-আপনারা একটু সতর্ক থাকবেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একটি অংশ সংস্কার এবং নির্বাচনকে দাঁড় করিয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পরিকল্পিতভাবে বিরোধ উসকে দিতে চায়। গণতন্ত্রকামী জনগণের মনে এই ধরনের বিশ্বাস জন্ম দিতে শুরু করেছে।”

বৃহস্পতিবার (১ মে) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন। লন্ডন থেকে সমাবেশে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হন তিনি।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে স্বল্পমেয়াদি এবং দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার প্রস্তাবনা প্রণয়নের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “কোনো রাজনৈতিক দলের আপত্তি নেই। তবে পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বিচার বিভাগ এবং নির্বাচন কমিশনকে প্রস্তুত করুন। সুনির্দিষ্টভাবে আগামী জাতীয় নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা করুন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কর্মপরিকল্পনায় পথনকশা, গণতন্ত্রকামী জনগণের সামনে সুস্পষ্ট থাকলে জনগণের সন্দেহ, সংশয় কেটে যাবে।”

আরো পড়ুন:

বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র আর গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র একই: গয়েশ্বর

লড়াইয়ের মাধ্যমে অধিকার আদায় করে নিতে হবে: নজরুল ইসলাম

তারেক রহমান বলেন, “ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে জনগণের পক্ষে, জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্যই বিএনপিসহ বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নিঃশর্ত সমর্থন দিচ্ছে। তবে গণতন্ত্রকামী জনগণ মনে করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি অনির্দিষ্টকালের জন্য সমর্থন অব্যাহত রাখা যৌক্তিক নয়।”

পলাতক স্বৈরাচার যাতে আর মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার সুযোগ না পায়, এজন্য জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

তিনি বলেন, “ফ্যাসিস্ট কিংবা স্বৈরাচার হওয়ার মন্ত্র দেশের সংবিধান কিংবা দেশের আইনে লেখা থাকে না। বরং সংবিধান ও আইন না মানার কারণে ফ্যাসিবাদের জন্ম হয়। একজন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যখন থেকে নিজেকে কিংবা নিজেদের একমাত্র অনিবার্য অপরিহার্য মনে করে… জনগণের ওপর একক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে শুরু করে; তখন থেকেই ফ্যাসিবাদের যাত্রা শুরু হয়।”

“এই কারণে বলতে চাই, কোনো ব্যক্তি অথবা গোষ্ঠীর মনে বিনা ভোটে ক্ষমতা দীর্ঘায়িত সুপ্ত ভাবনা মনের আকাঙ্ক্ষা যেন রাষ্ট্র ও সরকারকে ফ্যাসিবাদের প্রতি প্রলুব্ধ করতে না পারে, সেজন্যই জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, নির্বাচিত জাতীয় সংসদ এবং জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা করা দরকার।”

“গণবিপ্লব ও গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদ অথবা স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর বিশেষ পরিস্থিতিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিংবা অন্তর্বর্তীকালীন যে সরকার গঠিত হয়, তা অবৈধ না হলেও জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত সরকারের বিকল্প নয় এবং বিকল্প হতে পারে না”, বলেও সবাইকে স্মরণ করিয়ে দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে এবং শ্রমিক দলের প্রচার-প্রকাশনা সম্পাদক মঞ্জরুল ইসলাম মঞ্জুর সঞ্চালনায় এই সমাবেশে শ্রমিক দলের প্রধান সমন্বয়ক শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপির শ্রম বিষয়ক সহ-সম্পাদক হুমায়ুন কবীর খান, ফিরোজ-উজ-জামান মোল্লা মামুন, শ্রমিক দলের সালাহউদ্দিন সরকার, আবুল কালাম আজাদ, মেহেদি আলী খান, আবুল খায়ের খাজা, মোস্তাফিজুল করীম, সুমন ভুঁইয়া, প্রয়াত শ্রমিক নেতা আবদুল্লাহ আল নোমানের ছেলে সাঈদ আল নোমান বক্তব্য রাখেন।

বিএনপির নেতাদের মধ্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইয়েদুল আলম বাবুল, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানি, কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন বক্তব্য রাখেন।

ঢাকা/আসাদ/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ