‘সংস্কারের ব্যাপারে বিএনপিকে কারোর ছবক নেওয়া লাগবে না’
Published: 21st, January 2025 GMT
সংস্কারের ব্যাপারে বিএনপিকে কারোর ছবক নেওয়া লাগবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। আজ মঙ্গলবার দুপুরে যশোর চেম্বার অব কমার্সের উদ্যোগে ‘খুলনা বিভাগের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে রাজনৈতিক অঙ্গীকার’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর যত সংস্কার হয়েছে তার ৯০ শতাংশ বাস্তবায়ন করেছে বিএনপি।
বিএনপি এ নেতা বলেন, সংস্কার অনেক দলের কাছে নতুন কিছু হতে পারে; তবে বিএনপির জন্য নয়। বাংলাদেশের অর্থনীতি আজ যেখানে এসেছে, এটা বিএনপির সংস্কারের কারণেই। একদলীয় শাসন থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র; সরকার চালিত মুক্ত অর্থনীতি থেকে মুক্তবাজার অর্থনীতি চালুর মধ্য দিয়ে সংস্কার শুরু করেছেন জিয়াউর রহমান। প্রতিটি পদক্ষেপে সংস্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশ আজ এখানে এসেছে। আমরা একটি শক্তিশালী অর্থনীতি করেছিলাম; সেটা অব্যাহত থাকলে অনেক আগেই উন্নতশালী দেশে পরিণত হতো বাংলাদেশ। কিন্তু বিগত সময়ে লুটপাটের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সাবেক এই বাণিজ্য মন্ত্রী বলেন, বিএনপি শুধু ৩১ দফাই দেয়নি; তার আগে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ভিশন ২০৩০ মাধ্যমে দেশ সংস্কারের প্রস্তাব তুলে ধরে ছিলেন। সেখানে দুই বারের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী হতে পারবে না, দুই কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ, সবগুলো দেওয়া হয়েছে ছয় বছর আগে। আর দেড় বছর আগে ৩১ দফা তৈরি করেছি, আমাদের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে যারা সংশ্লিষ্ট ছিল তাদের মতামতের ভিত্তিতে। সকলের মিলেই জাতির কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
নতুন ভ্যাট ও শুল্কে জনগণ আরও চাপে পড়বে উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, মানুষ নিত্যপণ্যের বাড়তি দামে নাকাল হয়ে পড়েছে। অনেকের দৈনন্দিন জীবন চালাতে কঠিন হয়ে পড়েছে মূল্যস্ফীতির কারণে। সরকারকে বলছি, এই কর, এই ভ্যাট প্রত্যাহার করতে হবে। আপনাদের এখন করা উচিত, স্বৈরাচার সরকারের বাজেট বাতিল করা। আপনারা এখন অন্তর্বর্তী বাজেট ঘোষণা করেন। কারণ স্বৈরাচারের বাজেট তো দুর্নীতির বাজেট।
স্থানীয় একটি অভিজাত হোটেলে যশোর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মিজানুর রহমান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন সাবেক এমপি ও শিল্পোদ্যোক্তারা সলিমুল হক কামাল, বিজিএমইএ সাবেক সহসভাপতি মাহমুদুল হাসান বাবুল, বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শামসুর রহমান প্রমুখ। মতিবিনিময় সভায় খুলনা বিভাগের ১০ জেলার ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা নিজ নিজ জেলায় বিভিন্ন সমস্যা ও প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশের উন্নতির পেছনে শ্রমিকদের অবদান অনস্বীকার্য : ডিসি
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ব্যাপক উন্নতির পেছনে শ্রমিকদের অবদান অনস্বীকার্য। দেশের এই উন্নয়নের ধারাকে এগিয়ে নিতে হলে শ্রমিক ও মালিকের মধ্যে মানবিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে।
মালিক পক্ষকে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি, কর্মপরিবেশ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। শ্রমিকদের ঠকিয়ে কখনো শিল্প এগোতে পারে না। কিন্তু অনেক মালিক পক্ষ শ্রমিকদের চরমভাবে অধিকার থেকে বঞ্চিত করে থাকে।
মে দিবসে শ্রমিকদের কথা ভেবে মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে ভ্রাতিত্বের বন্ধন গড়ে তুলতে হবে। শ্রমিক ও মালিকের ইতিবাচক সম্পর্কই শিল্প উন্নয়ন সম্ভব। এই উন্নয়নই আগামীর বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ করবে।
বৃহস্পতিবার (১ মে) সকালে মহান মে দিবস এবং জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শ্রমিক-মালিক এক হয়ে, গড়বো দেশ নতুন করে’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বিভাগীয় শ্রম দপ্তর নারায়ণগঞ্জ এবং কল কারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তর নারায়ণঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে বিভাগীয় শ্রম দপ্তর নারায়ণগঞ্জ এর পরিচালক আফিফা বেগমের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ এর অতিরিক্ত ডিআইজি মোঃ আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক আল মেহেদি, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, জেলা জামায়াতের আমীর মইনুদ্দিন আহমেদ, মহানগর জামায়াতের আমীর আব্দুল জব্বার, চেম্বার অব কমার্সের সহ-সভাপতি সোহেল মোর্শেদ সারোয়ার সহ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও শ্রমিকবৃন্দ।
এ সময় মো. জাহিদুল ইসলাম মিঞা আরও বলেন. আমরা যারা শ্রমিক রয়েছি আমাদের সমস্যা থাকবে, দাবি থাকবে। কিন্তু অন্যের কথার দ্বারা আমাদের প্রভাবিত হওয়া চলবেনা। পৃথিবীর প্রতিটি দেশের মানুষের দাবি রয়েছে। যখন দাবি শেষ হয়ে যাবে তখন পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে।
তাই আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনে আগামী প্রজন্মের কথা ভেবে আমাদেরকে যৌক্তিক চিন্তাভাবনা করতে হবে। আমাদের দক্ষতা বাড়াতে হবে, আচরণকে পরিশুদ্ধ করতে হবে। তাহলেই আমাদের যে স্বপ্ন সুন্দর দেশ গড়ার সেটা সত্যি হবে।
তিনি আরও বলেন, ১৮৮৬ সালের ১ মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে কেনো হাজার হাজার মানুষ তাদের ৮ ঘন্টা শ্রমের দাবীতে রাস্তায় নেমে এসেছিলো। এটা কেনো ইউরোপে হলো না ? কারন ইউরোপীয়ানরা ১৫০০ সালের পর থেকে বিভিন্ন যুদ্ধে জড়িয়ে ছিলো আর আমেরিকানরা তখন তাদের নীতি পরিবর্তন করেছিলো।
তারা নিজেদের উন্নয়ন ও শিল্পায়ন চেয়েছিলো। তখন থেকেই তারা শিল্পায়ন শুরু করে এবং শিল্প শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কথা বলার সুযোগ হয়েছে। যদি দেশের উন্নয়ন না হতো, শিল্পায়ন না হতো তাহলে শিল্প শ্রমিকদের কথা বলার কোন সুযোগ হতোনা। আজকে নারায়ণগঞ্জে এত বড় রেলী হয়েছে শ্রমিক ও মালিকদের নিয়ে। এটা কি অন্য জেলায় সম্ভব, না এটা সম্ভব নয়।
পরিশেষে তিনি দেশ ও বহির্বিশ্বে কর্মরত সকল শ্রমিক ভাইবোনদের মহান মে দিবসের শ্রদ্ধা ও শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, বিগত দিনগুলিতে কর্মস্থলে দূর্ঘটনার শিকার হয়ে ও অধিকারের দাবিতে যে সকল শ্রমিক ভাই বোন মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের সকলকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি এবং সকলের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।