গোপালগঞ্জে সেতু ভেঙে খালে, ভোগান্তিতে ১০ গ্রামের মানুষ
Published: 22nd, January 2025 GMT
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় সেতু ভেঙে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে ১০ গ্রামের হাজার হাজার মানুষ। এতে যাতায়াত, মালপত্র ও কৃষিপণ্য আনা-নেয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
গত ডিসেম্বরের একেবারে শেষে দিকে উপজেলার লেবুতলা-ডুমরিয়া বাজার সড়কের চিথলিয়া গ্রামের কাটা খালের ওপর নির্মিত সেতুটি ভেঙে পড়ে। এ অবস্থায় স্থানীয়রা খালের স্লুইসগেটের ওপর কাঠ বিছিয়ে কোনো রকমে বিকল্প যাতায়াতের ব্যবস্থা করেছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সেতুর পাশে দিয়ে স্থাপিত পানি সরবরাহ লাইন ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। সেতুটি ভেঙে পড়ার পর থেকে ওই সড়ক দিয়ে যানবাহন, মানুষের চলাচল ও পণ্য পরিবহন বন্ধ হয়ে যায়। কয়েকদিন আগে স্থানীয়রা স্লুইচ গেটের ওপর কাঠ বিছিয়ে কোনোরকমে যাতায়াতের ব্যবস্থা করেছে। তবে ভারী মালামাল ও যানবাহন চলাচল করতে পারছেন না।
চিথলিয়া গ্রামের বাসিন্দা গৃহবধূ কনিকা তালুকদার বলেন, “ডুমরিয়া ইউনিয়নের ১০ গ্রামের হাজার হাজার মানুষ এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন। এ এলাকার মধ্যে ১টি হাই স্কুল, ২টি প্রাইমারী স্কুল, একটি বাজার, পানির ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, ধর্মীয় উপসনালয়, কমিউনিটি ক্লিনিকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রয়েছে। নতুন বছরের একদিন আগে এ সড়কের কাটাখালের সেতুটি নদী ভাঙনের কবলে পড়ে ভেঙে যায়। তারপর থেকে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সেতুর পাশে স্থাপিত ইউনিয়ন পানি সরবরাহ পাইপ লাইনও ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।”
টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটাগাতী সরদারপাড়া গ্রামের গৃহবধূ সুখি বেগম বলেন, “নিয়মিত আমি এ পথে যাতায়াত করি। সেতু ভেঙে গেছে। তাই আমাদের অনেকটা পথ ঘুরে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এতে সময় ক্ষেপণ হচ্ছে বেশি।”
তিনি আরো বলেন, “গত ১০ জানুয়ারি স্থানীয়রা ওই খালের স্লুইস গেটের ওপর কাঠ বিছিয়ে কোনো রকম যোগাযোগ স্থাপন করেছে। তাও অন্তত ৫০০ মিটার পথ ঘুরে কাচা রাস্তার উপর দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।”
স্থানীয় ভ্যানচালক জনি তালুকদার বলেন, “সেতু ভেঙে ১০ দিনের মতো এখানে গাড়ি চালাতে পারিনি। পরে স্লুইচ গেটে কাঠ বিছিয়ে দিয়ে স্থানীয়রা যাতায়াতের ব্যবস্থা করেছে। এখন ভারী যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। এমনকি অনেক পণ্য পরিবহন করা যাচ্ছে না। আমরা সেতু সংস্কার করে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান চাই।”
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী ফয়সাল আহমেদ বলেন, “গত ৩০ ডিসেম্বর লেবুতলা-ডুমরিয়া বাজার সড়কের শৈলদহ নদী ও কাটা খালের সংযোগ স্থলের সেতুটি ভেঙে যায়। শৈলদহ নদীর ভাঙনের কবলে পড়ে সেতুটি ভেঙে খালের মধ্যে পড়ে গেছে। আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি।”
তিনি আরো বলেন, “বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে তাৎক্ষনিকভাবে জানিয়েছি। বিকল্প পথে চলাচলের ব্যবস্থা করতে আমরা গত ১৬ জানুয়ারি এলজিইডির গোপালগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর চিঠি দিয়েছি। চিঠিতে কিছু কাজ করার জন্য অর্থ বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ পেলে আমরা ওই সেতুর বিকল্প চলাচলের ব্যবস্থা করতে পারব।”
ঢাকা/বাদল/ইমন
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ব যবস থ র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশে আতঙ্ক-উত্তেজনা, ট্রাম্প আসলে কী চান
যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর ভাইস অ্যাডমিরাল রিচার্ড কোরেল ভেবেছিলেন, দেশটির পারমাণবিক বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে তাঁর নিয়োগ নিশ্চিত হওয়া নিয়ে গত বৃহস্পতিবার শুনানি সহজভাবেই শেষ হবে। তবে তাঁর সাক্ষ্য গ্রহণের আগের দিন বুধবার রাত ৯টা ৪ মিনিটে সে আশা ভেঙে গেছে।
ওই সময় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘোষণা দিয়ে বিশ্বকে চমকে দেন। বলেন, তিনি মার্কিন বাহিনীকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা অবিলম্বে শুরু করতে বলেছেন। তাঁর যুক্তি, যুক্তরাষ্ট্র এ ক্ষেত্রে রাশিয়া ও চীনের পেছনে থাকতে পারে না।
ট্রাম্প বলেন, ‘পারমাণবিক অস্ত্রে রাশিয়া দ্বিতীয় এবং চীন বেশ দূরে তৃতীয় অবস্থানে। কিন্তু দেশটি পাঁচ বছরের মধ্যে আমাদের সমপর্যায়ে উঠে আসতে পারে।’
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সিনেটে সশস্ত্র বাহিনী কমিটির প্রায় ৯০ মিনিটের শুনানিতে ট্রাম্পের মন্তব্য নিয়ে বারবার কোরেলকে প্রশ্ন করা হয়। ট্রাম্পের মন্তব্যে অনেক আইনপ্রণেতাই এ সময় ছিলেন বিভ্রান্ত। এ থেকে বোঝা যায়, রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ওয়াশিংটন ও এর বাইরে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন।
মার্কিন কর্মকর্তারা পরিষ্কার করেননি যে ট্রাম্প পারমাণবিক অস্ত্র সরবরাহ ব্যবস্থার পরীক্ষা করতে বলছেন, নাকি বিস্ফোরক পরীক্ষায় ৩৩ বছরের নিষেধাজ্ঞা শেষ করতে চাইছেন। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ট্রাম্পের নির্দেশ বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে ও প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়াতে পারে, যা শীতল যুদ্ধের ভয়ংকর স্মৃতি ফিরিয়ে আনে।কমিটির শীর্ষ ডেমোক্র্যাট সদস্য সিনেটর জ্যাক রিড কোরেলকে প্রশ্ন করেন, যুক্তরাষ্ট্র আবারও পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা শুরু করলে তা কি বিশ্বে পারমাণবিক অস্ত্রের প্রতিযোগিতা বাড়াবে এবং অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করবে।
কোরেল বলেন, ‘যদি আমাকে স্ট্র্যাটেজিক কমান্ডের (স্ট্র্যাটকম) কমান্ডার হিসেবে নিশ্চিত করা হয়, আমার কাজ হবে, পারমাণবিক পরীক্ষাবিষয়ক যেকোনো আলোচনা সম্পর্কে সামরিক পরামর্শ দেওয়া।’
ভাইস অ্যাডমিরাল কোরেলকে গত সেপ্টেম্বরে ট্রাম্প স্ট্র্যাটকমের প্রধান করার জন্য মনোনীত করেন। স্ট্র্যাটকম পারমাণবিক হামলা প্রতিরোধ ও আক্রমণের সক্ষমতা নিয়ে কাজ করে। কোরেল পুরো শুনানিতে সতর্কভাবে প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।
পারমাণবিক অস্ত্রে রাশিয়া দ্বিতীয় ও চীন বেশ দূরে তৃতীয় অবস্থানে। কিন্তু দেশটি পাঁচ বছরের মধ্যে আমাদের সমপর্যায়ে উঠে আসতে পারে।ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন প্রেসিডেন্টশুনানির এক পর্যায়ে স্বতন্ত্র সিনেটর অ্যাঙ্গাস কিং প্রশ্ন করেন, ট্রাম্প কি পারমাণবিক ডিভাইসের বিস্ফোরক পরীক্ষা নয়, বরং ক্ষেপণাস্ত্র বা অন্য সরবরাহ ব্যবস্থা পরীক্ষার কথা বলছেন কি না।
জবাবে কোরেল বলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্টের উদ্দেশ্য জানি না, তবে এটি এমন একটি ব্যাখ্যা হতে পারে, আমি তা মেনে নিই।’
দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে গত বৃহস্পতিবার মুখোমুখি বৈঠকে যোগ দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সি চিন পিং