গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় সেতু ভেঙে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে ১০ গ্রামের হাজার হাজার মানুষ। এতে যাতায়াত, মালপত্র ও কৃষিপণ্য আনা-নেয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।

গত ডিসেম্বরের একেবারে শেষে দিকে উপজেলার লেবুতলা-ডুমরিয়া বাজার সড়কের চিথলিয়া গ্রামের কাটা খালের ওপর নির্মিত সেতুটি ভেঙে পড়ে। এ অবস্থায় স্থানীয়রা খালের স্লুইসগেটের ওপর কাঠ বিছিয়ে কোনো রকমে বিকল্প যাতায়াতের ব্যবস্থা করেছেন। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সেতুর পাশে দিয়ে স্থাপিত পানি সরবরাহ লাইন ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। সেতুটি ভেঙে পড়ার পর থেকে ওই সড়ক দিয়ে যানবাহন, মানুষের চলাচল ও পণ্য পরিবহন বন্ধ হয়ে যায়। কয়েকদিন আগে স্থানীয়রা স্লুইচ গেটের ওপর কাঠ বিছিয়ে কোনোরকমে যাতায়াতের ব্যবস্থা করেছে। তবে ভারী মালামাল ও যানবাহন চলাচল করতে পারছেন না। 

চিথলিয়া গ্রামের বাসিন্দা গৃহবধূ কনিকা তালুকদার বলেন, “ডুমরিয়া ইউনিয়নের ১০ গ্রামের হাজার হাজার মানুষ এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন। এ এলাকার মধ্যে ১টি হাই স্কুল, ২টি প্রাইমারী স্কুল, একটি বাজার, পানির ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, ধর্মীয় উপসনালয়, কমিউনিটি ক্লিনিকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রয়েছে। নতুন বছরের একদিন আগে এ সড়কের কাটাখালের সেতুটি নদী ভাঙনের কবলে পড়ে ভেঙে যায়। তারপর থেকে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সেতুর পাশে স্থাপিত ইউনিয়ন পানি সরবরাহ পাইপ লাইনও ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।” 

টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটাগাতী সরদারপাড়া গ্রামের গৃহবধূ সুখি বেগম বলেন, “নিয়মিত আমি এ পথে যাতায়াত করি। সেতু ভেঙে গেছে। তাই আমাদের অনেকটা পথ ঘুরে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এতে সময় ক্ষেপণ হচ্ছে বেশি।”

তিনি আরো বলেন, “গত ১০ জানুয়ারি স্থানীয়রা ওই খালের স্লুইস গেটের ওপর কাঠ বিছিয়ে কোনো রকম যোগাযোগ স্থাপন করেছে। তাও অন্তত ৫০০ মিটার পথ ঘুরে কাচা রাস্তার উপর দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।” 

স্থানীয় ভ্যানচালক জনি তালুকদার বলেন, “সেতু ভেঙে ১০ দিনের মতো এখানে গাড়ি চালাতে পারিনি। পরে স্লুইচ গেটে কাঠ বিছিয়ে দিয়ে স্থানীয়রা যাতায়াতের ব্যবস্থা করেছে। এখন ভারী যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। এমনকি অনেক পণ্য পরিবহন করা যাচ্ছে না। আমরা সেতু সংস্কার করে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান চাই।” 

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী ফয়সাল আহমেদ বলেন, “গত ৩০ ডিসেম্বর লেবুতলা-ডুমরিয়া বাজার সড়কের শৈলদহ নদী ও কাটা খালের সংযোগ স্থলের সেতুটি ভেঙে যায়। শৈলদহ নদীর ভাঙনের কবলে পড়ে সেতুটি ভেঙে খালের মধ্যে পড়ে গেছে। আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি।” 

তিনি আরো বলেন, “বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে তাৎক্ষনিকভাবে জানিয়েছি। বিকল্প পথে চলাচলের ব্যবস্থা করতে আমরা গত ১৬ জানুয়ারি এলজিইডির গোপালগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর চিঠি দিয়েছি। চিঠিতে কিছু কাজ করার জন্য অর্থ বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ পেলে আমরা ওই সেতুর বিকল্প চলাচলের ব্যবস্থা করতে পারব।”

ঢাকা/বাদল/ইমন   

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ব যবস থ র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

বিদ্যুৎ না থাকায় ডিইপিজেডে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ

ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ডিইপিজেড) আজ সোমবার দুপুর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এ কারণে দুপুরের পর ডিইপিজেডের সব কারখানায় শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হয়েছে। ডিইপিজেডের জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড পাওয়ারের বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় এ সংকট তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. শরীফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ ইউনাইটেড পাওয়ারের ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রকল্পটিতে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এতে তারা উৎপাদন করতে না পারায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে না। ফলে ডিইপিজেডে প্রায় ৯০টি কারখানার এক লাখের মতো শ্রমিককে ছুটি দেওয়া হয়।

বিদ্যুতের সংযোগ না থাকায় বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়েছে উল্লেখ করে মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার যদি এটি অব্যাহত থাকে, তবে সংকট আরও বাড়বে। শ্রমিকেরা কাজ না করতে পেরে বিক্ষুব্ধ হলে বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠবে। কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়া এ ধরনের ঘটনায় বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘তিতাস বলছে, ইউনাইটেড পাওয়ারের কাছে বিল বকেয়া রয়েছে। তারা বকেয়া পরিশোধ করেনি। এ ব্যাপারে আদালতে দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলছে। কিন্তু আমাদের কথা হচ্ছে, বেপজাকে কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশ না দিয়ে হঠাৎ করে এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন। এ ধরনের পদক্ষেপের আগে ডিইপিজেডের গুরুত্ব বিবেচনা করে আলোচনার মধ্য দিয়ে বিষয়টির সমাধান করা উচিত ছিল।’

এ বিষয়ে ইউনাইটেড পাওয়ার প্ল্যান্টের ব্যবস্থাপক মো. মমতাজ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্যাসের কোনো প্রেশার নেই। প্রেশার শূন্য। কিন্তু কেন তিতাস কর্তৃপক্ষ এমনটি করল, সে ব্যাপারে এখানকার (আশুলিয়া অঞ্চলের) তিতাসের লোকজন কিছু বলতে পারেননি। আমরা নিজেরাও বিষয়টি নিয়ে জানি না। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমার জানামতে, বকেয়া নিয়ে কোনো ধরনের মামলা নেই। তিতাস কেন গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিল, সেটি জানা নেই।’

জানতে চাইলে তিতাসের আশুলিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু ছালেহ মুহাম্মদ খাদেমুদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, গ্যাসের বিল বকেয়া থাকায় গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এটি সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের সিদ্ধান্ত। দুপুরের দিকে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আদানির সঙ্গে চুক্তি ক‌রে শুল্ক ফাঁকি
  • শিল্প খাতের উৎপাদন যেন ব্যাহত না হয়
  • কারাগারে গাঁজা সরবরাহ করতে গিয়ে নিজেই কারাগারে
  • ‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা কী
  • ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ নেই, ৯০ কারখানায় ছুটি
  • মঙ্গলবার ৭ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব জায়গায়
  • পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে আরও ২৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কিনছে ভারত
  • পর্তুগাল ও স্পেনে নজিরবিহীন বিদ্যুৎ বিপর্যয়, পর্যুদস্তু জনজীবন
  • হাসপাতালে ডায়রিয়ার প্রকোপ শয্যা ও স্যালাইন সংকট
  • বিদ্যুৎ না থাকায় ডিইপিজেডে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ