Samakal:
2025-05-01@03:27:19 GMT

কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করুন

Published: 23rd, January 2025 GMT

কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করুন

বুধবার যেইভাবে গাজীপুর ও সাভারের আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে শ্রমিকরা দফায় দফায় অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর চালাইয়াছে, উহা অনাকাঙ্ক্ষিত ও উদ্বেগজনক। সমকালসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনসূত্রে জানা যাইতেছে, বেক্সিমকো গ্রুপের কয়েকটি কারখানা মাসখানেক পূর্বে বন্ধ হইবার কারণে শ্রমিকরা বর্তমানে কর্মহারা। একদিকে তাহাদের কর্মসংস্থানের জন্য কারখানা খুলিয়া দেওয়া জরুরি, অন্যদিকে বকেয়া পারিশ্রমিক পরিশোধও কম গুরুত্বপূর্ণ নহে। আমরা দেখিয়াছি, ইহার পূর্বেও শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণ উপায়ে দাবি আদায়ে রাস্তায় নামিয়াছেন; সপ্তাহখানেক পূর্বে কারখানা খুলিয়া দিবার জন্য মানববন্ধনও করিয়াছেন। আমরা মনে করি, শ্রমিকদের দাবি ন্যায্য এবং কেবল তাহাদের কর্মসংস্থানের জন্যই নহে, বরং দেশের অর্থনৈতিক উৎপাদনশক্তি চালু রাখিবার তাগিদ হইতেও কারখানা খুলিয়া দেওয়া জরুরি। 

আমরা জানি, গত মধ্য ডিসেম্বরে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বেক্সিমকোর শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলির শ্রম ও ব্যবসায় পরিস্থিতি পর্যালোচনা-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের কমিটির সভার সিদ্ধান্তের পর ১৬টি কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যাহা সত্য, প্রতিষ্ঠানগুলির মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষমতাচ্যুত সরকারের আমলে প্রভাব খাটাইবার অভিযোগ রহিয়াছে এবং তজ্জন্য মামলাও চলমান। কিন্তু কেবল সেই কারণে এই সকল কারখানা বন্ধ হইতে পারে না। বন্ধের কারণরূপে সরকার কারখানাগুলিতে কার্যাদেশ না থাকা ও ঋণখেলাপি হইবার যেই অজুহাত দিয়াছে, উহাও গ্রহণযোগ্য হইতে পারে না। সরকারের উচিত হইবে, যেই কোনো মূল্যে কারখানাগুলি সচল ও শ্রমিকদের কর্মসংস্থান নিশ্চিতকরণে গুরুত্ব দেওয়া। শ্রম সচিবের বক্তব্যে আমরা আশ্বস্ত হইতে চাই, সরকার কারখানাগুলি বিক্রয় করিয়া নূতন মালিকানায় দ্রুত খুলিয়া দিবার ব্যবস্থা লইয়াছেন এবং এতদ্বিষয়ে উল্লেখযোগ্য বৈঠকও হইয়াছে। পাঁচ মাস ধরিয়া শ্রমিকদের বেতন পরিশোধের মাধ্যমে সরকারের সদিচ্ছাও স্পষ্ট। আমরা মনে করি, এই প্রক্রিয়া আরও দ্রুততর করা জরুরি। 

বুধবার যেইভাবে চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়কের বিভিন্ন জায়গায় দফায় দফায় অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর চালানো হইয়াছে, উহা নিরাপত্তারও প্রশ্ন বটে। লাঠিসোটা লইয়া মহাসড়কের শতাধিক যানবাহনে নির্বিচার ভাঙচুর চালানো ও অগ্নিসংযোগ, খবর সংগ্রহ করিতে গিয়া সংবাদকর্মীর ওপর হামলা গ্রহণযোগ্য নহে। তথাকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হইয়াছে কেন?
কয়েক মাস পূর্বে যখন শিল্প এলাকায় এই ধরনের অস্থিরতা দেখা দেয়, তখন শ্রমিক-কর্মচারী, তৎসহিত কারখানার নিরাপত্তা চাহিয়াছিলেন সাভারের আশুলিয়ার পোশাকশিল্প মালিকরা। অন্যায় দাবি ও গুজব ছড়াইয়া অস্থিরতা তৈরি করা হইতেছে কিনা, উহা দেখিবার তাগিদ দিয়াছিলেন তাহারা।

এমনিতেই জ্বালানি সংকট, শ্রমিক অসন্তোষ ও ব্যাংক খাতে অস্থিতিশীলতায় এক ধরনের সংকটে রহিয়াছে দেশের তৈরি পোশাক খাত। ইহার মধ্যে নূতন করিয়া শ্রমিক অসন্তোষ সমগ্র পোশাক খাতের জন্যই অশনিসংকেত। বলাবাহুল্য, কারখানা বন্ধ হইলে কর্মহীন হইবার ঝুঁকিতে থাকে কারখানার শ্রমিক-কর্মচারীরা। উহাদের কর্মসংস্থানের জন্য তো বটেই, দেশের অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি হিসাবে উৎপাদন অব্যাহত রাখিবার জন্যও কারখানা খোলা রাখা জরুরি। আমরা প্রত্যাশা করি, বন্ধ থাকা কারাখানাগুলি যত দ্রুত সম্ভব খুলিয়া দিতে সরকার তৎপর ও আন্তরিক হইবে। যেইভাবে ইহার সমাধানে শ্রমিক ও শিল্পের স্বার্থ রক্ষা হইবে, সেইভাবে উহা করিতে হইবে। একই সঙ্গে শ্রমিকরা শিল্প এলাকার পরিবেশ ও নিরাপত্তা রক্ষায় দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করিবে। সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহনীর সতর্কতারও বিকল্প নাই।   
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

‘ভারতকে থামান’, জাতিসংঘকে শাহবাজ শরিফ

ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে হামলাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট উত্তেজনার মধ্যে নয়াদিল্লিকে দায়িত্বশীল আচরণ ও সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানাতে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে অনুরোধ জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ।

প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ জোর দিয়ে বলেছেন, ভারতের পক্ষ থেকে সিন্ধু অববাহিকার পানিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা পাকিস্তানের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।

জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে এক ফোনালাপে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান। দুই নেতার এ আলাপে দক্ষিণ এশিয়ার সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহের ওপর আলোকপাত করা হয়।

গুতেরেসের সঙ্গে আলাপে শাহবাজ বলেন, ভারতের কোনো দুর্ভাগ্যজনক আচরণের জবাবে পাকিস্তান তার সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা পূর্ণ শক্তি দিয়ে রক্ষা করবে।

ভারতের কোনো দুর্ভাগ্যজনক আচরণের জবাবে পাকিস্তান তার সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা পূর্ণ শক্তি দিয়ে রক্ষা করবে।শাহবাজ শরিফ, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী

ভারত–নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে গত মঙ্গলবার থেকে উত্তেজনা বেড়ে গেছে। ঘটনার পরপরই কোনো প্রমাণ ছাড়াই ভারত ওই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে।

জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে আলাপে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের নিন্দা জানায়। বৈশ্বিক সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে পাকিস্তানের বড় ত্যাগের কথাও তুলে ধরেন তিনি।

ভারতের অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে শাহবাজ বলেন, পেহেলগামের ঘটনায় পাকিস্তানকে যুক্ত করার যেকোনো চেষ্টা অগ্রহণযোগ্য। পাশাপাশি তিনি ওই ঘটনায় নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।

‘সন্ত্রাসবাদ’-এর অজুহাতে কাশ্মীরিদের স্বাধীনতা আন্দোলনকে অবমূল্যায়ন করার ‘ভারতীয় চেষ্টায়’ গভীর উদ্বেগ জানান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে জম্মু ও কাশ্মীরে ভারতের ‘রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত সন্ত্রাসের’ বিষয়ে তুলে ধরেন তিনি।

‘সন্ত্রাসবাদ’-এর অজুহাতে কাশ্মীরিদের স্বাধীনতা আন্দোলনকে অবমূল্যায়ন করার ‘ভারতীয় চেষ্টায়’ গভীর উদ্বেগ জানান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে জম্মু ও কাশ্মীরে ভারতের ‘রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত সন্ত্রাসের’ বিষয়ে তুলে ধরেন তিনি।

গুতেরেসকে শাহবাজ বলেন, সিন্ধু অববাহিকার পানিকে অস্ত্র বানানোর ভারতের প্রয়াস গ্রহণযোগ্য নয়। এ অববাহিকার পানিকে ২৪ কোটি পাকিস্তানির জীবনীশক্তি হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভারত কোনো দুর্ভাগ্যজনক আচরণ দেখালে, এর জবাবে পাকিস্তান তার সার্বভৌমত্ব ও ভৌগলিক অখণ্ডতা রক্ষায় সর্বশক্তি নিয়োগ করবে।

জাতিসংঘ মহাসচিবের প্রতি ভারতকে সংযত আচরণ করার পরামর্শ দেওয়ার ও নিরাপত্তা পরিষদের প্রাসঙ্গিক প্রস্তাবসমূহ অনুযায়ী কাশ্মীর সমস্যার ন্যায়সংগত সমাধানে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

শাহবাজ বলেন, পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একটি দায়িত্বশীল সদস্য ও নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য হিসেবে বৈশ্বিক শান্তি ও নিরাপত্তা ত্বরান্বিত করায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

মহাসচিব গুতেরেস ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং সংঘাত এড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দেন, যা দুঃখজনক পরিণতি বয়ে আনতে পারে। উত্তেজনা প্রশমনের প্রচেষ্টায় নিজের মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা রাখার প্রস্তাব দেন তিনি।স্টিফেন ডুজারিক, জাতিসংঘের মুখপাত্র

এদিকে জাতিসংঘের একজন মুখপাত্র বলেন, মহাসচিব গুতেরেস পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রামানিয়াম জয়শংকরের সঙ্গে কথা বলেছেন। এসব আলাপে গুতেরেস আইনি পন্থায় ন্যায়বিচার অনুসরণের গুরুত্ব তুলে ধরেন।

আরও পড়ুনসিমলা চুক্তি স্থগিত করার পাকিস্তানের হুমকি কি যুদ্ধ ঘোষণার শামিল২০ ঘণ্টা আগে

জাতিসংঘ মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেন, মহাসচিব ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং সংঘাত এড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দেন, যা দুঃখজনক পরিণতি বয়ে আনতে পারে। উত্তেজনা প্রশমনের প্রচেষ্টায় নিজের মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা রাখার প্রস্তাব দেন তিনি।

আরও পড়ুন৩৬ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানে ভারতের হামলার পরিকল্পনার গোয়েন্দা তথ্য আছে৭ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনভারত-পাকিস্তানের প্রতি উত্তেজনা না বাড়ানোর আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের১ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শারীরিক শাস্তি শিশুর বিকাশে বড় বাধা, বিলোপ জরুরি
  • ‘ভারতকে থামান’, জাতিসংঘকে শাহবাজ শরিফ
  • রাজনৈতিক দলের সমর্থন ছাড়া প্রক্সি ভোট বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়: সিইসি