শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে আকলাশ শ্যামপুর শিবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের খোলা মাঠে পাঠদান করতে হচ্ছে। কখনও কখনও রোদ-বৃষ্টির কারণে মাঝেমধ্যেই পাঠদান বন্ধ রাখতে হয়।
জানা গেছে, উপজেলা সদর থেকে ১২ কিলোমিটার দক্ষিণে আলমপুর ইউনিয়নে আকলাশ শ্যামপুর শিবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অবস্থান। ১৯৪৫ সালে শ্যামপুর গ্রামের শফিরউদ্দিন মণ্ডলের দান করা ৩৩ শতাংশ জমির ওপর বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। স্থানীয় বাসিন্দা এবং ম্যানেজিং কমিটির উদ্যোগে মাটির দেয়াল দিয়ে শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ করা হয়। মাটির সেই কক্ষগুলো কোনো রকমে মেরামত করে পাঠদান চলছিল। ১৯৯৪ ও ২০১০ সালে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উদ্যোগে ১১ কক্ষের দুটি ভবন নির্মাণ করা হয়। ৬টি কক্ষ অফিস কক্ষ, শিক্ষক কক্ষ, লাইব্রেরি, কম্পিউটার ল্যাব, ছাত্রী কমন রুম ও বিজ্ঞানাগার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। অন্য কক্ষগুলোতে শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছিল। শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এক বছর ধরে পাঁচটি কক্ষে গাদাগাদি করে বসে লেখাপড়া করছিল শিক্ষার্থীরা। স্থান সংকুলান না হয়ে মাঠেও চলে কয়েকটি শ্রেণির পাঠদান। শ্রেণিকক্ষের সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যালয়টিতে রয়েছে বেঞ্চ ও টেবিলের সংকটও।
অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাহাদ হোসেন জানায়, পুরোনো ক্লাসে বসার জায়গা হয় না। এক বছর ধরে কক্ষের বাইরে মাঠে বসে ক্লাস করতে হচ্ছে। বেঞ্চ না থাকায় মাটিতে বসতে হয়। এতে বই, খাতা, পরনের কাপড়ে ধুলাবালি জমে ময়লা হয়। এভাবে স্কুলে এসে পড়ালেখা করতে মন চায় না।
সহকারী শিক্ষক শফিকুল আলম শফিক বলেন, বিদ্যালয়ে পড়াশোনার মান ভালো। সুনাম ও খ্যাতি রয়েছে। অথচ অবকাঠামো কম। খোলা মাঠে পাঠদান করতে হচ্ছে। প্রচণ্ড শীত, বর্ষা, তীব্র রোদে লেখাপড়ায় মন বসাতে পারে না শিক্ষার্থীরা। এ কারণে অভিভাবকদের কথা শুনতে হয়। ভবন নির্মাণ এখন সময়ের দাবি। এ দাবি পূরণ না করলে শিক্ষার মান ধরে রাখা যাবে না।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আজিজুল হাসান জোয়ারদার বলেন, শিক্ষার্থীর সংখ্যা হিসেবে আরও কক্ষের প্রয়োজন। সেই সঙ্গে রয়েছে বেঞ্চ-সংকট। কক্ষের অভাবে মাঠে ক্লাস করাতে বাধ্য হচ্ছি। সংকটের বিষয়টি জেলা, উপজেলা শিক্ষা অফিসসহ সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরকে অবহিত করা হয়েছে। কোনো সমাধান হয়নি।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে জেলাভিত্তিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের জন্য চাহিদাপত্র পেলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ওই বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের সুপারিশ করা হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কল জ শ ক ষ র থ ভবন ন র ম ণ
এছাড়াও পড়ুন:
অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস, পাহাড়ে ভূমিধসের শঙ্কা
আজ শ্রাবণের ১৬ তারিখ। প্রকৃতির নিয়মে এ মাসে বৃষ্টি বেশি ঝরে। আজও ঢাকার আকাশ মেঘলা। বুধবার রাত থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। কখনও ঝুম বৃষ্টি কখনও গুঁড়ি গুঁড়ি। তবে সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উপকূলীয় ও পাহাড়ি এলাকায় অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। রয়েছে ভূমিধসের ঝুঁকি।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন স্থানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও কক্সবাজারের পাহাড়ি এলাকায় কোথাও কোথাও ভূমিধসের ঝুঁকি রয়েছে।
আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অতিভারী বৃষ্টির কারণে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম মহানগরীর কিছু এলাকায় সাময়িক জলাবদ্ধতা দেখা দিতে পারে। নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়াসহ বাস, রিকশা ও সাধারণ চলাচলে বিঘ্ন ঘটতে পারে।
বঙ্গোপসাগরে উত্তাল থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। নদী ও সমুদ্রবন্দর এলাকায় অবস্থানরত নৌযানগুলোকে সাবধানতার সঙ্গে চলাচলের নির্দেশ দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সারা দেশে আজ দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে, রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে।
শুক্রবার ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়, এবং রংপুর, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে।
শনিবারও সারা দেশে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। বিশেষ করে ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে অধিকাংশ এলাকায় এবং অন্যান্য বিভাগে অনেক জায়গায় দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে। সারা দেশে দিনের ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
রবিবার রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগে অনেক জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও হতে পারে অতি ভারী বৃষ্টিপাত।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বর্ধিত পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী পাঁচ দিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে।
গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে কক্সবাজার ৬৮ মিলিমিটার। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল সৈয়দপুরে ৩৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ঢাকা/ইভা