Samakal:
2025-11-03@02:20:18 GMT

কক্ষ ও বেঞ্চ সংকট পড়ালেখা মাঠে

Published: 24th, January 2025 GMT

কক্ষ ও বেঞ্চ সংকট পড়ালেখা মাঠে

শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে আকলাশ শ্যামপুর শিবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের খোলা মাঠে পাঠদান করতে হচ্ছে। কখনও কখনও রোদ-বৃষ্টির কারণে মাঝেমধ্যেই পাঠদান বন্ধ রাখতে হয়।
জানা গেছে, উপজেলা সদর থেকে ১২ কিলোমিটার দক্ষিণে আলমপুর ইউনিয়নে আকলাশ শ্যামপুর শিবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অবস্থান। ১৯৪৫ সালে শ্যামপুর গ্রামের শফিরউদ্দিন মণ্ডলের দান করা ৩৩ শতাংশ জমির ওপর বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। স্থানীয় বাসিন্দা এবং ম্যানেজিং কমিটির উদ্যোগে মাটির দেয়াল দিয়ে শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ করা হয়। মাটির সেই কক্ষগুলো কোনো রকমে মেরামত করে পাঠদান চলছিল। ১৯৯৪ ও ২০১০ সালে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উদ্যোগে ১১ কক্ষের দুটি ভবন নির্মাণ করা হয়। ৬টি কক্ষ অফিস কক্ষ, শিক্ষক কক্ষ, লাইব্রেরি, কম্পিউটার ল্যাব, ছাত্রী কমন রুম ও বিজ্ঞানাগার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। অন্য কক্ষগুলোতে শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছিল। শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এক বছর ধরে পাঁচটি কক্ষে গাদাগাদি করে বসে লেখাপড়া করছিল শিক্ষার্থীরা। স্থান সংকুলান না হয়ে মাঠেও চলে কয়েকটি শ্রেণির পাঠদান। শ্রেণিকক্ষের সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যালয়টিতে রয়েছে বেঞ্চ ও টেবিলের সংকটও। 
অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাহাদ হোসেন জানায়, পুরোনো ক্লাসে বসার জায়গা হয় না। এক বছর ধরে কক্ষের বাইরে মাঠে বসে ক্লাস করতে হচ্ছে। বেঞ্চ না থাকায় মাটিতে বসতে হয়। এতে বই, খাতা, পরনের কাপড়ে ধুলাবালি জমে ময়লা হয়। এভাবে স্কুলে এসে পড়ালেখা করতে মন চায় না। 
সহকারী শিক্ষক শফিকুল আলম শফিক বলেন, বিদ্যালয়ে পড়াশোনার মান ভালো। সুনাম ও খ্যাতি রয়েছে। অথচ অবকাঠামো কম। খোলা মাঠে পাঠদান করতে হচ্ছে। প্রচণ্ড শীত, বর্ষা, তীব্র রোদে লেখাপড়ায় মন বসাতে পারে না শিক্ষার্থীরা। এ কারণে অভিভাবকদের কথা শুনতে হয়। ভবন নির্মাণ এখন সময়ের দাবি। এ দাবি পূরণ না করলে শিক্ষার মান ধরে রাখা যাবে না।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আজিজুল হাসান জোয়ারদার বলেন, শিক্ষার্থীর সংখ্যা হিসেবে আরও কক্ষের প্রয়োজন। সেই সঙ্গে রয়েছে বেঞ্চ-সংকট। কক্ষের অভাবে মাঠে ক্লাস করাতে বাধ্য হচ্ছি। সংকটের বিষয়টি জেলা, উপজেলা শিক্ষা অফিসসহ সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরকে অবহিত করা হয়েছে। কোনো সমাধান হয়নি। 
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে জেলাভিত্তিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের জন্য চাহিদাপত্র পেলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ওই বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের সুপারিশ করা হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কল জ শ ক ষ র থ ভবন ন র ম ণ

এছাড়াও পড়ুন:

প্রস্থেটিক মেকআপ আর্টে সোনালী মিতুয়ার বাজিমাত

বাংলাদেশের মেকআপ আর্ট জগতে নীরবে নতুনত্ব যোগ করে যাচ্ছেন সোনালী মিতুয়া। তার শৈল্পিক ইলিউশন এবং বডি পেইন্টিংগুলো আন্তর্জাতিক মানের, যা দেখে চোখ ফেরানো দায়। বর্তমানে ফিনল্যান্ডে মেকআপের ওপর উচ্চশিক্ষা নিচ্ছেন এই শিল্পী, যার ক্যানভাসে শৈশবের প্রথম গন্ধ ছিল তেল রং আর থিনারের তীব্রতা। মেকআপ ব্যবহার করে তিনি যে ক্যানভাস তৈরি করেন-তা এক কথায় অনন্য, অসাধারণ। 

সোনালী মিতুয়া কখনও তার মুখে ফুটে ওঠে ফাটল ধরা পৃথিবী, যেখান থেকে গজিয়ে ওঠে সবুজ লতা। কখনও দেখা যায় তার মুখটাই এক অর্ধেক যন্ত্র, অর্ধেক প্রকৃতি, যেন মানুষ আর মেশিনের মাঝের এক অদ্ভুত, কাব্যময় দ্বন্দ্ব।আর কখনও সেই মুখটাই অন্ধকারে মিলিয়ে যায়, শুধু দেখা যায় এক ভয়ঙ্কর কালো গহ্বর — যেন মানুষের শূন্য আত্মা। এগুলো কোনো সিনেমার দৃশ্য না।এগুলো এক তরুণী মেকআপ আর্টিস্টের সৃষ্ট জীবন্ত শিল্পকর্ম।

আরো পড়ুন:

একা বাস করতে পারে যে পাখি

কেউ কটূক্তি করলে কী করবেন?

সোনালী মিতুয়ার মেকআপে একটা গল্প, একটা দর্শন, একটা গভীর বার্তা লুকিয়ে থাকে। যেখানে অধিকাংশ মানুষ মেকআপকে শুধু প্রসাধনের জগতে দেখে, সে সেখানে মেকআপকে তুলেছে এক উচ্চমাত্রার শিল্প হিসেবে। তার হাতে রঙ মানে—চামড়ার ওপরে নয়, বরং আত্মার ভাষা প্রকাশের এক মাধ্যম।

তার কাজে দেখা যায় প্রস্থেটিক মেকআপের প্রভাব— যেখানে মুখ বদলে যায়, গড়ে ওঠে নতুন রূপ, নতুন চরিত্র। এমন কৌশল একদিন তাকে সিনেমার পর্দায় প্রস্থেটিক আর্টিস্ট হিসেবে বড় জায়গায় নিয়ে যাবে—
এ কথা বলার জন্য বিশেষজ্ঞও হতে হয় না। 

এই মেয়েটির সবচেয়ে বড় শক্তি তার কল্পনাশক্তি। সে মুখের ভেতরেই ফুটিয়ে তোলে গল্প—একদিকে প্রকৃতি, ফুল, প্রজাপতি; অন্যদিকে প্রযুক্তি, ধ্বংস আর শূন্যতা। দেখলে মনে হয়, এই দুইয়ের টানাপোড়েনেই গড়ে উঠেছে তার শিল্পজগৎ।

বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের জন্য এই মেয়েটি এক অনুপ্রেরণা। সে প্রমাণ করছে—শিল্পের ভাষা যদি শক্ত হয়, তাহলে দেশের সীমা পেরিয়ে বিশ্বেও পৌঁছানো যায়। যেখানে মেকআপকে এখনো অনেকেই কেবল সাজের কাজ মনে করেন, এই মেয়েটি সেখানে দেখিয়েছে — মেকআপও হতে পারে দর্শন, প্রতিবাদ আর সৃষ্টির ক্যানভাস। 

তিনি জানেন,  প্রস্থেটিক আর্টে (বিশেষত কৃত্রিম অঙ্গ, ক্ষত বা ফ্যান্টাসি চরিত্র তৈরি) করা যায় দক্ষতার সাথে।  বর্তমানে বাংলাদেশের সিনেমায় যেখানে প্রস্থেটিকের ব্যবহার খুবই সীমিত, সেখানে সোনালী মিতুয়ার মতো একজন আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিল্পী আছেন, তার হাতেই তৈরি হতে পারে বাংলাদেশের ইতিহাসের চরিত্রদের নিখুঁত রূপ, অথবা আমাদের ফ্যান্টাসি সিনেমার ভিনগ্রহের প্রাণী।

সোনালী মিতুয়ার কাজগুলো দেখলেই বোঝা যায়, তিনি মেকআপকে স্রেফ সৌন্দর্যবর্ধনের মাধ্যম হিসেবে দেখেন না, বরং এটিকে একটি শক্তিশালী গল্প বলার হাতিয়ার মনে করেন। 

একটা ছবিতে দেখা যাচ্ছে একজন মানুষ প্রকৃতির মাঝে ফাটল ধরা পাথরের মতো এক রূপ ধারণ করেছেন। সবুজ, হলুদ ও লালের মিশ্রণে চোখের অংশটি গভীর এবং রহস্যময়, আর ফাটলের ভেতর দিয়ে বেরিয়ে আসা লতা-পাতা জীবনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এটি তার পরিবেশ-সচেতনতা এবং ফ্যান্টাসি আর্টের দক্ষতা প্রমাণ করে।

সাদাকালো স্কেচের মতো দেখতে এই মেকআপটি অত্যন্ত কঠিন এবং চোখে পড়ার মতো। মুখের প্রতিটি অংশে পেন্সিল বা চারকোল দিয়ে আঁকা হ্যাচিংয়ের মতো স্ট্রোকগুলো ত্রিমাত্রিক চেহারাটিকে দ্বিমাত্রিক কমিক-বুক বা নয়ার চলচ্চিত্রের চরিত্র হিসেবে ফুটিয়ে তুলেছে।

চোখ ও মুখের চারপাশে মাকড়সার জাল এবং ফুলা, রক্তবর্ণ চোখের পাপড়ি ভীতি ও কষ্টের এক শক্তিশালী অনুভূতি জাগায়। এটি বিশেষ করে হ্যালোইন বা হরর থিমের জন্য পারফেক্ট।

গভীর অন্ধকারে তোলা এই ছবিটি ‘অন্ধকার গহ্বর’ বা ‘কৃষ্ঞগহ্বর’ থিমের একটি চমকপ্রদ ইলিউশন মেকআপ। নিখুঁত কনট্যুরিং এবং রঙের ব্যবহারে মুখের এক অংশে যেন সত্যিই একটি ফাঁকা, গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বর্তমান সংকটের জন্য সরকার দায়ী, দলগুলোর চাপে সিদ্ধান্ত বদল
  • প্রস্থেটিক মেকআপ আর্টে সোনালী মিতুয়ার বাজিমাত