বিতর্কিত কাণ্ডে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) এবার শিরোনামে। বরারবরই এমন কাণ্ড ঘটতে থাকলেও এবার মাত্রাটা একটু বেশি। বিশেষ করে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো ক্রিকেটারদের পাওনা বুঝিয়ে না দেওয়ায় বারবার ক্রিকেট বোর্ড বিদ্ধ হয়েছে তীব্র সমালোচনায়। 

এবার যেন হুশ ফিরেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি)। শর্ত ভঙ্গ করা ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি বোর্ড ক্রিকেটারদের আশ্বস্ত করছে যে, “শংকিত হওয়ার কিছু নেই।’’ 

শনিবার (১৭ জানুয়ারি) বিসিবির বোর্ড সভায় বিষয়টি নিয়ে লম্বা সময় আলোচনা হয়েছে। বিতর্কিত কাণ্ডে জড়িত ফ্র্যাঞ্চাইজিসহ ৭টি ফ্র্যাঞ্চাইজিকে ডেকেছে বিসিবি। ৪৮ ঘন্টার মধ্যে সমাধানের পথে হাটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশের ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। 

আরো পড়ুন:

নিয়তি মেনে বিশ্বমানের হওয়ার স্বপ্ন বোনা

শেষ বলে এনামুলের সেঞ্চুরি, ৭ রানে খুলনার জয়

বোর্ড মিটিং শেষে মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান ইফেতখার রহমান মিঠু বলেন, “আমরা সম্প্রতি দেখছি কিছু দলের ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক এবং অন্যান্য বিষয়ে সমস্যা হচ্ছে। আমরা এটা আমলে নিয়েছি এবং ইতোমধ্যে এটার ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার শুরু করেছি। বিপিএলের সঙ্গে আমাদের নাম ও বিসিবির সম্মান জড়িত। তাই এটা সিরিয়াসলি দেখব। ক্রিকেটারদের শঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, আমরা (বিসিবি) এটা দেখব।’’ 

“আমরা ইতোমধ্যে সকল ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকপক্ষদের ডেকেছে। ইতোমধ্যে যেসব হয়েছে তা আমরা মেনে নিচ্ছি”-আরো যোগ করেন মিঠু। 

সংবাদ সম্মেলনে থাকা বিপিএল এনকোয়ারিং কমিটির সদস্য মাহবুব আনাম বলেন, “এটা নিয়ে আমাদের বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এ ব্যাপারে তাৎক্ষনিক যে সিদ্ধান্ত নেওয়ার বা পদক্ষেপ নেওয়ার সেটা বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল ও ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকরা মিলে বসে আলোচনা করে নেব। বেশ কিছু দূরত্ব তৈরি হয়েছে। আমরা সেই দূরত্বগুলো মেটাতে হবে এবং ক্রিকেটারদের আশ্বস্ত করতে হবে যে বিপিএলের পারিশ্রমিকের যে নিয়ম আছে তা মেনে চলতে হবে।”

“ফ্র্যাঞ্চাইজি চুক্তির মধ্যে যেসব দিকগুলো মেনে চলতে হবে, দল মালিকরা তারা যেন সেসব মেনে চলে তা নিশ্চিত করার জন্য যা করার দরকার বিসিবি সেটাই করছি। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সে কার্যক্রমগুলো চলমান থাকবে।”

১৫ জানুয়ারি বিতর্কিত কাণ্ডে শিরোনাম হয় পাঁচ বছর পর বিপিএলে ফেরা দল দুর্বার রাজশাহী। চেক বাউন্স হওয়ায় অনুশীলনে নামে না দলটির ক্রিকেটাররা, এরপর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রেসিডেন্ট ফারুক আহমেদ ছুটে যান চট্টগ্রামে। 

মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে আশ্বস্ত করেন ক্রিকেটারদের। ৬৮ লাখ টাকা নেন গ্যারান্টি মানি। পরিস্থিতি শান্ত করেন।

একই কাণ্ড ঘটে চিটাগং কিংসের ক্রিকেটারদের সঙ্গে। তাদেরও চেক বাউন্স হয়। রাজশাহীর মতো বয়কটের পথে হাঁটেননি তারা। তবে একসঙ্গে তিনজন বিদেশি ক্রিকেটার একাদশ থেকে বাদ পড়ার পেছনে পাওনা-দেওনা ইস্যুই কাজ করেছে বলে জানা গেছে। 

ঢাকা/রিয়াদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব প এল

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ