ঢাকার শাহবাগে ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকদের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদ ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে এর জবাবদিহিতা চেয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীর।

সোমবার (২৭ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে থিওলজি অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদ ভবনের সামনে থেকে একটি মিছিল বের করেন ইবি শাখা বাংলাদেশ জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়া। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থান ও কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম, সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদতুল্লাহ শেখ, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের ইবি শাখার সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল রাহাত, ছাত্রশিবিরের ইবি শাখার ছাত্র অধিকার বিষয়ক সম্পাদক মো.

জাকারিয়া প্রমুখ।

সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম  বলেন, “ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে মাদ্রাসা জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। এটি তাদের ন্যায্য এবং যৌক্তিক অধিকার। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হলো, কোন সরকারই এখন পর্যন্ত তাদের এ দাবি মেনে নেয়নি।”

তিনি বলেন, “অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করা প্রত্যেক নাগরিকের গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু এর পরিবর্তে স্বৈরাচারীভাবে শিক্ষকদের ওপর পুলিশের হামলা চালানো হয়েছে, যা অত্যন্ত নিন্দনীয়। আমরা এ নির্মম ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। শিক্ষকদের এ যৌক্তিক দাবি দ্রুত বাস্তবায়ন এবং তাদের প্রতি এমন অমানবিক আচরণ বন্ধ করার দাবি জানাচ্ছি।”

এদিকে, সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে।

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের জাহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য দেন, মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুম বিল্লাহ, আইন বিভাগের শিক্ষার্থী শাহিদুল ইসলাম শাহেদ, সিরাজুল ইসলাম, রসায়ন বিভাগের রাকিব আহমেদ প্রমুখ।

এ সময় বক্তারা বলেন, ঢাকায় স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক ঐক্যজোট তারা ছয় দফা দাবি জানিয়ে আসছে। অথচ পুলিশ শিক্ষকদের ওপর ন্যাক্কারজনক হামলা চালিয়েছে। এ হামলার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিচার দাবি করছি। জাতির বিবেককে লাঞ্ছিত করার অধিকার কারোর নেই। যে কেউ যৌক্তিক দাবি নিয়ে কথা বলার অধিকার আছে। কিন্তু এভাবে স্বৈরাচারীদের মত আবারো আচারণ করল পুলিশ। দাবি মেনে নিয়ে শিক্ষকদের অধিকার ফিরিয়ে দিক রাষ্ট্র। 

গতকাল রবিবার (২৬ জানুয়ারি) চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে শাহবাগ থানার সামনে অবস্থান নেওয়া ইবতেদায়ি শিক্ষকদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান নিক্ষেপ ও লাঠিপেটা করে পুলিশ।

ঢাকা/তানিম/সাইফুল/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইবত দ য় র স মন ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

বাদ পড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের দাবি

জাতীয়করণ থেকে বাদ পড়া দেশের সব সচল বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন থেকে এই জানিয়েছেন সমিতিটি।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ২০১৩ সালে তৎকালীন সরকার সারা দেশে সব বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণের ঘোষণা দেয়। তবে ২০১৩ সালের গেজেট মূলে ২০১২ সালের মে মাসে সারা দেশে ৩০ হাজার ৩৫২টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও সেই সময়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে ৪ হাজার ১৫৯টি বিদ্যালয় বাদ রেখে ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়।

আরো পড়ুন:

পরীক্ষার দিন বাদ দিয়ে নিয়মিত ক্লাস নেওয়ার নির্দেশ

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অস্থিরতায় সরকার যথেষ্ট উদ্বিগ্ন: উপদেষ্টা

তৃতীয় ধাপের বিদ্যালয়গুলোকে জাতীয়করণের ক্ষেত্রে ২০১২ সালের মে মাসের আগে স্থাপিত ও পাঠদানের অনুমতির জন্য আবেদন করে রাখা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করতে হবে বলে জোর দাবি তোলেন বক্তারা।

মানববন্ধনে বক্তারা আরো বলেন, একই যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তৎকালীন কিছু কর্মকর্তা কর্মস্থলে না থাকায়, সব শর্ত পূরণ করার পরেও ৪ হাজার ১৫৯টি বিদ্যালয় জাতীয়করণের অন্তর্ভুক্ত হয়নি। এই বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে থেকে ২০১২ সালের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষাসহ ১ হাজার ৩০০ বিদ্যালয় জাতীয়করণের জন্য উপজেলা ও জেলায় যাচাই-বাচাই করা হয়েছে, যা মন্ত্রণালয় সংরক্ষণ করা আছে।

জাতীয়করণকালীন সময়ে পাঠদানের অনুমতি ও রেজিট্রেশনের কার্যক্রম স্থগিত রাখায় এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা বেতন-ভাতার সুবিধা ও ছাত্র-ছাত্রীরা উপবৃত্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সতিমির নেতারা তাদের বক্তব্যে তুলে ধরেন।

মানববন্ধনে সংগঠনের সভাপতি মামুনুর রশিদ খোকন বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে পাঠদান পরিচালনা করলেও বিদ্যালয়গুলো জাতীয়করণ না হওয়ায় আমরা শিক্ষকরা মানবেতর যীবন যাপন করছি। আমরা অন্যের শিশুকে জ্ঞানের আলো দিলেও আমাদের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়নি। এই অবস্থা দূর করতে শিক্ষাসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”

বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির মহাসচিব মো. ফিরোজ উদ্দিন বলেন, “২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি সব বিদ্যালয় জাতীয়করণের ঘোষণা দেওয়া হলেও ফ্যাসিস্ট সরকার বিগত দিনে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে ৪ হাজার ১৫৯টি বিদ্যালয় সুকৌশলে বাদ দেয়। এই বিষয়ে আমরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”

সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ আলী লিটন বলেন, “বর্তমান সরকার শিক্ষাবান্ধব সরকার। শত প্রতিকূলতার মাঝেও বিশ্বদরবারে তারা আজ বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ের চিঠি দ্রুত বাস্তবায়ন করা হলে সারা দেশের প্রায় ১০ লাখ শিক্ষার্থী উপবৃত্তি ও টিফিনসহ প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত হবে; সেই সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়ন হবে।”

মানববন্ধনে সারা দেশ থেকে আসা বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সদস্যদের দেখা যায়।

ঢাকা/রায়হান/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাদ পড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের দাবি