৩ সেকেন্ডের ভিডিও নিয়ে নায়ক-নায়িকার চুলোচুলি
Published: 28th, January 2025 GMT
ভারতের দক্ষিণী সিনেমার তারকা অভিনয়শিল্পী ধানুশ ও নয়নতারা। একসঙ্গে কাজও করেছেন তারা। ব্যক্তিগত সম্পর্কও মন্দ ছিল না। তারপরও এক পলকে বদলে গেছে তাদের সম্পর্কের রসায়ণ। ৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিওকে কেন্দ্র করে চুলোচুলি শুরু করেছেন এই নায়ক-নায়িকা।
মূলত, গত বছরের নভেম্বরে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্সে মুক্তি পেয়েছে নয়নতারার তথ্যচিত্র ‘নয়নতারা: বিয়ন্ড দ্য ফেয়ারিটেল’। এই তথ্যচিত্রে ব্যবহৃত ৩ সেকেন্ডের ভিডিও ফুটেজ নিয়ে বৈরিতার সূত্রপাত্র। মাস দুয়েক আগে বিবৃতি-পাল্টাবিবৃতি দেয় নয়নতারা ও ধানুশ। তারপরই তাদের দ্বন্দ্ব গড়ায় আদালতে। অনুমতি না নিয়ে ভিডিও ফুটেজ ব্যবহার করার অভিযোগে নয়নতারা ও তার স্বামী ভিগনেশ শিবানের বিরুদ্ধে মামলা করেন ধানুশ।
তথ্যচিত্রে নয়নতারা অভিনীত ‘নানুম রাউডি ধান’ সিনেমার কয়েকটি ছবি ও বিহাইন্ড দ্য সিন ব্যবহার করা হয়েছে। ২০১৫ সালে মুক্তি পাওয়া এই সিনেমার প্রযোজক ছিলেন ধানুশ। তার অভিযোগ, অনুমতি ছাড়াই তথ্যচিত্রে ওই সব দৃশ্য ব্যবহার করেছেন নয়নতারা। নয়নতারা ও ভিগনেশ ছাড়াও ধানুশের অভিযোগ রয়েছে লস গাটোস প্রোডাকশন সার্ভিসেস ইন্ডিয়া এলএলপির বিরুদ্ধেও।
আরো পড়ুন:
নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারছেন না রাশমিকা
যে তারকারা পাচ্ছেন পদ্ম পুরস্কার
নয়নতারা-ধানুশের চুলোচুলি শেষ হয়নি। ধানুশের দায়েরকৃত মামলার খারিজ চেয়ে পিটিশন দায়ের করেছিল নেটফ্লিক্স। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) এ মামলার শুনানি ছিল। ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, ধানুশের দায়েরকৃত মামলার খারিজ চেয়ে দায়েরকৃত নেটফ্লিক্সের পিটিশন খারিজ করে দিয়েছেন মাদ্রাজ হাই কোর্ট। ধানুশের ওয়ান্ডারবার প্রোডাকশনের দায়ের করা মূল কপিরাইট মামলার শুনানি আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।
নয়নতারার ক্যারিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ একটি মাইলফলক এই তথ্যচিত্র। ফলে অভিনেত্রী চেয়েছিলেন, সিনেমার কিছু ফুটেজ ও গানের অংশবিশেষ ব্যবহার করবেন তথ্যচিত্রে। যেহেতু কপিরাইটের বিষয় রয়েছে, তাই ধানুশের কাছে অনুমতি চান নয়নতারা। দীর্ঘ দুই বছর বারবার অনুরোধ করার পরও রাজি হননি ধানুশ।
পরে ‘নয়নতারা: বিয়ন্ড দ্য ফেয়ারিটেল’-এর ট্রেইলারে ‘নানুম রাউডি ধান’ সিনেমার ৩ সেকেন্ডের একটি ফুটেজ ব্যবহার করা হয়। এতেই চটে যান ধানুশ। আইনি নোটিশ পাঠিয়ে ১০ কোটি রুপি ক্ষতিপূরণ দাবি করেন নয়নতারার কাছে। ধানুশের এমন ব্যবহারে কষ্ট পান অভিনেত্রী। তার অভিযোগ, প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে এমনটা করেছেন ধানুশ।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
রশিটানা নৌকায় নদী পার, শহরে যাতায়াত হেঁটে
এপার থেকে দেখলে মনে হবে নদীটির ওপারে সভ্য সমাজের বাইরের কোনো জনগোষ্ঠীর বসবাস। যাদের এ সমাজে বিচরণ সীমিত রাখতে নদীপথে একটি রশিটানা খেয়া নৌকা ছাড়া যাতায়াতের সব পথ বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে।
মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার এই অংশটুকু বিভক্ত করেছে জুড়ী নদী। যার এক প্রান্তে জুড়ী সদর এলাকার একাংশ। অপর প্রান্তে রয়েছে সাগরনাল ইউনিয়নের কাশিনগর, রানীমুড়া, পাতিলাসাঙ্গর ও বটনিঘাট, জায়ফরনগর ইউনিয়নের মনতৈল, চম্পকলতা, গৌরীপুর ও মোহাম্মদ নগর (সরকারি গুচ্ছগ্রাম) এবং গোয়ালবাড়ি ইউনিয়নের মাগুরা। এসব গ্রামে ১২ সহস্রাধিক মানুষের বসবাস। এ ইউনিয়নের মানুষকে জুড়ীর মূল অংশে আসতে হলে একমাত্র পথ হচ্ছে ৫ থেকে ৬ কিলোমিটার হেঁটে ঘাটে এসে রশিটানা নৌকায় নদী পার হওয়ার পর আরও দুই কিলোমিটার হেঁটে শহরে পৌঁছানো।
উপজেলার এ অংশের বাসিন্দা ব্যবসায়ী আব্দুল আজিজ ক্ষোভ আর হতাশা নিয়ে বলেন, মাঝেমধ্যে মনে হয় আমরা সদর ও শহরের সভ্য, আধুনিক সমাজ থেকে বিচ্যুত। যাদের একটা ভালো সড়ক নাই, একটা স্কুল নাই, একটা সেতু জোটে না যে এলাকার মানুষের বারবার অনুরোধেও। তাদের আর কী বলা যায়।
সড়ক যোগাযোগ না থাকায় ব্রিটিশ শাসনামলে জুড়ী নদীর তৎকালীন সদজুড়ী খাল এ অংশ পারাপারের জন্য রশিটানা নৌকার ব্যবহার শুরু হয়। ২০২৫ সালে এসেও সেই রশি টানাটানি বন্ধ হয়নি।
উপজেলা সদরের নিকটবর্তী সাগরনাল ইউনিয়নের কাশিনগর গ্রাম থেকে বীর গোগালী গ্রামের (রানীমুড়া ঘাট) মধ্যে অবস্থিত জুড়ী নদী। এই নদীই স্থানীয় উপজেলার উল্লিখিত অংশের বাসিন্দাদের সদরসহ অন্য এলাকায় যাওয়ার একমাত্র পথ। এই নদী তাদের পার হতে হয় রশিটানা নৌকায় করে। স্থানীয় ব্যবসায়ী, কৃষকসহ অন্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের বাড়ির উঠানে কোনোদিন চাকাবিশিষ্ট কোনো যান যায়নি। নদীর এই অংশে একটা সেতু অন্তত ৫ থেকে ৭ হাজার মানুষের ভাগ্য আমূল পাল্টে দিতে পারে। কেন সেটা করা হচ্ছে, তা তাদের জানা নেই।
ইউনিয়নের একাধিক এলাকা ও ঘাটপাড় ঘুরে দেখা যায়, নদী পথে নিয়মিত পার হচ্ছেন গ্রামবাসী। সেজন্য ৫ থেকে ৬ কিলোমিটার পথ হেঁটে স্থানীয়দের আসতে হয় ঘাটে। নৌকায় নদী পার হয়ে সেখান থেকে আবার দুই কিলোমিটার পথ হেঁটে পৌঁছাতে হয় উপজেলা শহরে।
যোগাযোগের দুরবস্থার কারণে উপজেলার এই অংশে নেই কোনো স্কুল বা বড় বাজার। ক্রমে ঝিমিয়ে পড়ছে সামাজিক অর্থনীতি ও উৎপাদনমুখী কৃষিখাত। একটি সেতুর অভাবে ওই তিন ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে উৎপাদিত কৃষিপণ্য সদরসহ জুড়ীর বিভিন্ন বাজারে যাইয়ার সুযোগ পাচ্ছে না। এতে করে উপজেলার এই অংশের কৃষির সম্ভাবনা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন দুটিই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
জায়ফর নগর ইউপি চেয়ারম্যান মাছুম রেজা বলেন, পাশের ইউনিয়নের কাশিনগর গ্রামের মানুষের যাতায়াতের সমস্যা দীর্ঘদিনের। আধুনিক সমাজে এমন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন জনবসতি নেই। রশিটানা নৌকায় করে তাদের এ পারে আসতে হচ্ছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিশুরাও ওভাবে বিদ্যালয়ে যাচ্ছে। এ ঘাটে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা একান্ত দরকার।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বাবলু সূত্রধর বলেন, কাশিনগর রানীমুড়া খেয়াঘাটে সেতুর প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারে এখন পর্যন্ত তাঁকে কিছুই জানানো হয়নি। সেখানকার মানুষের এ দুর্ভোগের কথা তিনি জানতেন না। শিগগিরই সরেজমিন সেখানকার পরিস্থিতি বিবেচনা করে পদক্ষেপের ব্যাপারে জোর তৎপরতা চালানো হবে।