মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে ট্যানারি শ্রমিকদের বিক্ষোভ
Published: 28th, January 2025 GMT
ট্যানারি শিল্পের শ্রমিকদের জন্য পাঁচটি গ্রেডে সরকার ঘোষিত নিম্নতম মজুরি বাস্তবায়নের দাবিতে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন শ্রমিকেরা।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সাভারের হেমায়েতপুরের হরিণধরায় অবস্থিত চামড়াশিল্প নগরের বিভিন্ন ট্যানারির শ্রমিকেরা এসকল কর্মসূচি পালন করেন।
এদিন সকাল ১০টার দিকে সাভারের চামড়া শিল্প নগরীর প্রধান সড়কে অবস্থান নেন ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের ব্যানারে বিভিন্ন ট্যানারির শতাধিক শ্রমিক। পরে তারা সেখানে কর্মবিরতিসহ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। বেলা ১২টা পর্যন্ত তারা এ কর্মসূচি পালন করেন।
বিক্ষোভকারীরা জানান, বিভিন্ন সেক্টরে নিম্নতম মজুরি ঘোষণার পর ইতিমধ্যে সেগুলো বাস্তবায়ন করা হয়েছে। তবে ট্যানারি শিল্পের শ্রমিকদের জন্য পাঁচটি গ্রেডে সরকার ঘোষিত নিম্নতম মজুরি এখনো বাস্তবায়ন করেনি মালিকপক্ষ। নিম্নতম মজুরি বাস্তবায়নের দাবিতে তারা এসব কর্মসূচি পালন করেন।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শ্রমিক মো.
আন্দোলনে অংশ নেওয়া নারী শ্রমিক শান্তি খাতুন বলেন, “আমরা অনেক ধৈর্য ধরেছি কিন্তু আমাদের দাবি বাস্তবায়ন হচ্ছে না। আমরা বাধ্য হয়ে রাস্তায় বসে আন্দোলন করছি। আমরা আমাদের দাবি আদায় করেই ছাড়ব।”
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সাধারণ সম্পাদক মো. সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, “মজুরি সংক্রান্ত বিষয়টি নিয়ে বিটিএ, বাংলাদেশ ফিনিশ লেদার, লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সেপোর্টর্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএফএলএলএফইএ) এবং ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের মধ্যে ত্রিপাক্ষিক আলোচনা চলছে। গত রোববার (বিএফএলএলএফইএ) এর উপদেষ্টা অসুস্থ থাকায় সবার সম্মতিতে পরবর্তীতে একটি তারিখ নির্ধারণ করে আলোচনা করে বিষয়টির সমাধান করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু এরমধ্যেই কোন নোটিশ না দিয়ে ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন এসকল কর্মসূচি পালন করলেন।”
ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, “ট্যানারি শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি ঘোষণা করা হলেও সেটি বাস্তবায়ন হয়নি। এটি বাস্তবায়নের দাবিতে গত ২২ তারিখ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। ওই সময়ে শুধুমাত্র টিফিনের সময় ট্যানারির ফটকে শ্রমিকেরা অবস্থান নিয়ে সংশ্লিষ্ট কারখানা কর্তৃপক্ষকে ঘোষিত মজুরি বাস্তবায়নের জন্য অনুরোধ করেন।”
তিনি আরও বলেন, “সরকারের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত হয়েছে সেটি এখন বাস্তবায়ন করতে হবে এখানে কোনটি মানা হবে, মানা হবে না, কমবেশি করা হবে এমন আলোচনার কোন সুযোগ নেই। মালিকপক্ষ বিষয়টিকে গূরুত্ব না দেওয়ায় আজ সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। এরপরও মালিকপক্ষ যদি সকরকারের সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন না করেন তবে ওভার টাইম না করার যে সিদ্ধান্ত রয়েছে সেটি কার্যকর করা হবে।”
ঢাকা/আরিফ/এস
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?