জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে চাপ সৃষ্টি করতে বিএনপি ‘দ্রুত আন্দোলনের যাবে’—এমন ইঙ্গিত দিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে এক আলোচনা সভায় দেশের জনগণের মধ্যে আলোচনার বিষয়বস্তু তুলে ধরে দলের এই অবস্থান স্পষ্ট করেন তিনি।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে ধারণ করে সাংবাদিক ও সংবাদকর্মীদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন’-এর আত্মপ্রকাশ হয়েছে। এ উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে সংগঠনের উদ্যোগে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান: গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতা’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেই প্রধান অতিথি ছিলেন সালাহ উদ্দিন আহমেদ। 

সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘‘সরকার মাত্রই সিদ্ধান্তের মধ্যে ভুল করতে পারে। সেটা সকল সরকারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এখন অন্তর্বর্তী সরকার সকল সিদ্ধান্ত নির্ভুলভাবে নেবে, এটা তো সঠিক নয়। ভুল তাদেরও হতে পারে। কিন্তু সেটা সঠিকভাবে পরিচালনা করার দায়িত্ব এদেশের সাংবাদিক সমাজের যেমন আছে; রাজনৈতিক দল, গণতান্ত্রিক শক্তি ও সামাজিক শক্তিগুলোরও আছে।”

আরো পড়ুন:

তিন জেলার কর্মশালায় তারেক রহমান
ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সব দলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে

জামায়াত-বিএনপির মধ্যে কোনো সংঘাত নেই: দুদু

‘‘সেই জায়গা থেকে আমরা আমাদের দলের পক্ষ থেকে চিন্তা করছি, সরকারের ভুল শুধরিয়ে সঠিক রাস্তায় এনে গণতান্ত্রিক রাস্তা বিনির্মাণের জন্য এবং একটি নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকারের পথ পরিষ্কার করতে আমরা খুব দ্রুত পদক্ষেপ নেব। সেটা (পদক্ষেপ)-কে আপনারা আন্দোলনও বলতে পারেন, সরকারের সমালোচনাও বলতে পারেন।”

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্য তুলে ধরে সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘‘মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা মাঝেমধ্যে বলেন যে, আমরা বেশি বেশি করে যেন সমালোচনা করি, যাতে সরকার সঠিক পথে থাকে।”

‘‘এই সরকারের একটি ভালো গুণ আছে। তা হচ্ছে, সরকার মাঝেমধ্যে ভুল সিদ্ধান্ত নিলেও সমালোচনার মুখে সেগুলো শুধরায়, গো ধরে বসে থাকে না। সরকার যখন ভুল শুধরায়, তখনই মনে করতে হবে এই সরকার জনগণের।”

অন্তর্বর্তী সরকারকে সঠিক রাস্তায় রাখতে ‘যথেষ্ট সমালোচনা’র ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আজকের দিনে প্রশ্ন হচ্ছে, আমরা সামনের দিকে কী কী সংস্কার চাই, কীভাবে নির্বাচন চাই, কখন নির্বাচন চাই ইত্যাদি। প্রশ্ন হচ্ছে, এই সরকারের সফলতা-ব্যর্থতা, সিদ্ধান্ত এবং সিদ্ধান্তহীনতা।”

‘‘আমরা যদি এই অন্তর্বর্তী সরকারকে সফল হতে দিতে চাই, তাহলে সরকারকে গাইড করতে, পরিচালনা করতে আমাদের যথেষ্ট সমালোচনা করতে হবে। এমনকি, আমাদের সড়কে আন্দোলনও করতে হতে পারে সরকারকে সঠিক রাস্তায় নিয়ে আসার জন্য।”

সংস্কার প্রসঙ্গে

সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘‘নির্বাচন যদি বিলম্বিত করবেন, সেই যৌক্তিকতা আপনাদের জনগণের কাছে তুলে ধরতে হবে। ইতোমধ্যে ৬ মাস পার হয়েছে। সংস্কার কমিশনগুলো রিপোর্ট প্রদান করেছে, সরকারের কাছে সেই রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে রাজনৈতিক দলগুলো, সামাজিক শক্তিগুলো এবং বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলার কথা। রিপোর্ট দেওয়ার পর প্রায় ১৪/১৫ দিন পার হয়ে গেছে, সেই উদ্যোগ অবশ্য এখনো দেখা যায়নি। আমি আশা করি, আপনারা (সরকার) যেসব বিষয়গুলো রাজনৈতিক দল, সামাজিক শক্তিগুলো, বিশেষজ্ঞগণ ঐক্যমত্য পোষণ করতে পারে; সেগুলো আগে চিহ্নিত করুন সংস্কারের মধ্যে।”

‘‘সংস্কার কমিশনের রিপোর্টগুলো অত্যন্ত সুন্দর, বুঝলাম। কিন্তু সকল বিষয়গুলো কী এসেছে? অবশ্যই না। আবার কিছু বিষয় কি অতিরিক্ত এসেছে? অবশ্যই হ্যাঁ। আর কিছু বিষয় এসেছে যেগুলো বাস্তবায়ন করা যাবে না। যে বিষয়গুলো বাংলাদেশের রাজনৈতিক কালচারে, সামাজিক কালচারে যায় না; সেগুলো আমাদের চিন্তা করতে হবে। কারণ, যারা সংস্কার কমিশনের বসেছেন আপনারাও মানুষ। আপনাদের সব বক্তব্য রিকমন্ডেশন শতভাগ সঠিক, এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই। সেজন্য আলোচনার কথা এসেছে।”

আওয়ামী লীগের বিচার প্রসঙ্গে

সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘‘আমরা বিভিন্নভাবে বিচ্ছিন্নভাবে কথা বলছি। কালকেও দেখলাম, আওয়ামী লীগ এ দেশে নির্বাচন করতে পারবে না, করতে দেয়া হবে না, নিষিদ্ধ করা হবে। এ বিষয়ে আমরা পরিষ্কার বলেছি, বাংলাদেশের জনগণ নির্ধারণ করবে। যে দল ফ্যাসিবাদী চরিত্রে দেশে গণহত্যা চালিয়েছে, মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য যে দল দায়ী, যে দলের নির্ধারিত সরকার দায়ী। শেখ হাসিনা অনির্বাচিত হয়ে প্রধানমন্ত্রীত্ব করেছেন। তার সিদ্ধান্তে, আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে এদেশে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। সুতরাং, ব্যক্তির সঙ্গে সেই সংগঠনের বিচার করতে হবে।”

‘‘ব্যক্তির বিচারে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও অন্যান্য আদালতে মামলা হয়েছে, কিন্তু সংগঠন হিসেবে বিচার করার প্রভিশন সংবিধানের আর্টিকেল-৪৭ আছে। কিন্তু সংগঠনের বিচারের বিষয়ে আমরা তো তত বেশি সোচ্চার নই কেন?”

তিনি বলেন, ‘‘আপনরা শুনেছেন, সংগঠন হিসেবে বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইনে একটা সংশোধনী আনার কথা ছিল। কিন্তু সেখান থেকে সরকার সরে গেল। এখন যদি সরকারের অংশ হিসেবে কোনো কোনো উপদেষ্টা বলেন যে, আমরা আওয়ামী লীগের বিচার চাই।”

‘‘তো বিচার চাওয়ার বিষয়ে আপনারা কিছু করলেন না। আর বিচার করার জন্য আমরা দাবি করছি, আপনারা দাবি করছেন, এদেশের জনগণ দাবি করছে। ফ্যাসিবাদী শক্তি, গণতন্ত্র হত্যাকারী, গণহত্যাকারী মানবতাবিরোধী অপরাধী যারা তারা এবং সেই সংগঠনের বিচার হোক। বিচারের মাধ্যমে নির্ধারিত হোক। তা হলে জনগণ মেনে নেবে।”

ফ্যাসিবাদীবিরোধী জাতীয় ঐক্যে যাতে কোনো বিভেদ সৃষ্টি না হয়, সেজন্য অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ  থাকা উচিত বলে মনে করেন সালাহ উদ্দিন আহমেদ।

‘নতুন দলের আত্মপ্রকাশ হলে সাধুবাদ’

সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘‘আমি ছাত্র নেতাদের সম্মান করি। তাদের আকাঙ্ক্ষাকে সম্মান করি। তাদের রাজনৈতিক দল গঠনের প্রয়াসকে স্বাগত জানাই। কিন্তু, নির্বাচিত হওয়ার জন্য যদি বিভিন্ন কৌশলের সরকারের শক্তিকে প্রয়োগ করতে হয়, সেটা ফ্যাসিবাদকে দোষারোপ করে আপনার কী লাভ হবে?’’

‘‘আমরা যদি অতীতের ইতিহাস অনুসরণ করি, তাহলে আমরা কীভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যাব?”

সংবিধানের মৌলিক সংশোধনের বিষয় তুলে ধরে ‘স্বাধীনতার সঙ্গে অন্যকিছু সমকক্ষ করা ঠিক হবে না’ বলে মন্তব্য বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ।

বাংলাদেশ জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পার্থ সারথি দাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক আল ইমরান। সভায় গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি বাছির জামালসহ সাংবাদিকরা বক্তব্য রাখেন।

অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পার্থ সারথি দাস বলেন, ‘‘গণমাধ্যমকর্মীরা কারো তাঁবেদারি করবে না। তারা সব সময় দেশ ও মানুষের জন্য কাজ করবে। আজকের অনুষ্ঠানে সেই বার্তা আমরা সবার কাছে পৌঁছে দিতে চাই।’’ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের  সদস্যরা জুলাই অভ্যুত্থানের স্মৃতিচারণ করেন। 

এ সময় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ রায়হান বলেন, ‘‘জুলাই বিপ্লবের চেতনাকে ধারণ করে আগামীতে সবাই নিরপেক্ষ সাংবাদিকতা করবে, এমনটাই প্রত্যাশা করে দেশের মানুষ। সে উদ্যোগে এই সংগঠনের যাত্রা শুরু হয়েছে।’’

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, ‘‘জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে পাহারা দিয়েছিল রাজনৈতিক দলগুলো। কেউ এটা ভাববেন না, এই আন্দোলন ১০ থেকে ১৫ দিনে হয়ে সফল হয়েছে। এটা ঠিক নয়। বিগত ১৬ বছরের আন্দোলনের মাধ্যমে জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থান সফল হয়েছে।’’

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘‘গত ১৬ বছরে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন গণমাধ্যমের অধিকারের জন্য, স্বাধীনতার জন্য আমরা দীর্ঘ আন্দোলন করেছি। ২০১৩ সালে ফ্যাসিবাদী সরকার গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট নামে কালো আইনের খসড়া তৈরি করেছে। সেখান থেকে আমাদের আন্দোলনের শুরু হয়েছে। সেখানে আমাদের বক্তব্য সব গণমাধ্যম প্রকাশ ও প্রচার করতে পারেনি। ৫ আগস্টের আগে ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে ৫৮ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন, তাদের পেটোয়া বাহিনীর হামলায়। জুলাই বিপ্লবে ৫ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন।’’ 

ঢাকা/নাজমুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ সরক র র স গঠন র র জনগণ র র জন চ র কর র জন য আপন র ব এনপ অপর ধ আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদ নিয়ে যেসব বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে

ফরাসি বিপ্লবের রক্তাক্ত অভিজ্ঞতা থেকে বলা হয়ে থাকে ‘বিপ্লব তার সন্তানদেরই খেয়ে ফেলে’। আধুনিক যুগের বিপ্লব প্রায়ই পুরোনো সংবিধানকে খেয়ে ফেলে। ব্রিটিশ রাজকবি আলফ্রেড টেনিসনের ভাষায়, পুরোনো বন্দোবস্ত সরে গিয়ে স্থান করে দেয় নতুন ব্যবস্থাকে। জার্মান আইনবিদ কার্ল স্মিটের ভাষায়, ‘স্টেট অব এক্সেপশন’ অর্থাৎ ‘পরম ব্যতিক্রমী ব্যবস্থা’র উদ্ভব ঘটে। ফরাসি বিপ্লবের অন্যতম পুরোধা এবি সিয়েসের মতে, জনগণের গাঠনিক ক্ষমতার উন্মেষ ঘটে।

স্মিটের মতে, ‘পরম ব্যতিক্রমী ব্যবস্থা’য় যে বা যাঁরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, তিনি বা তাঁরাই সার্বভৌম। এই সার্বভৌম শক্তি আইনের বাইরে ও আইনের ঊর্ধ্বে। পুরোনো আইনব্যবস্থা, শাসনতন্ত্র, ক্ষমতাকাঠামো বা বিধিবিধান, কোনো কিছু দিয়েই এই পরম ব্যতিক্রমী ব্যবস্থাকে ব্যাখ্যা করা যায় না; সেসব থেকে এর চূড়ান্ত বৈধতার নিদান খোঁজাও যায় না। পুরোনো ব্যবস্থা সেই সমাধান দিতেও সক্ষম নয়। বিদ্যমান সবকিছুই পরম ব্যতিক্রমী ব্যবস্থায় নয়া সার্বভৌম শক্তির সব সিদ্ধান্তের অধীনে প্রয়োগ হয়।

চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের বর্তমান রাষ্ট্রকাঠামোয় যে অবস্থা বিরাজ করছে, সেটাকে এক ‘পরম ব্যতিক্রমী ব্যবস্থা’ বলা যায়। কারণ, বিদ্যমান সংবিধানের আওতায় এটাকে ব্যাখ্যা করা ও সেই ব্যবস্থা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল না; কোনো না কোনো অধিসাংবিধানিক প্রক্রিয়ার শরণ নেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না।

বাস্তবে ‘পরম ব্যতিক্রমী ব্যবস্থা’য় বেশির ভাগ সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ পুরোনো ব্যবস্থার পদ্ধতি মেনেই নেওয়া হয়। কারণ, পদ্ধতিগুলো প্রায় সব জায়গাতেই একই থাকে। পার্থক্য থাকে শুধু কোন সার্বভৌম শক্তি সিদ্ধান্ত দিচ্ছে, কেন, কীভাবে, কখন, কাকে দিচ্ছে, এসব ক্ষেত্রে।

আরও একটি কারণে আগের মতো করেই কাজগুলো করা হয়, সেটা হলো, এ পদ্ধতিগুলো শাসনতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষা, সার্বভৌম শক্তিকে সাধারণ জনগণের কাছে সহজে অনুভূত বা আবির্ভূত হওয়া ও অনুকরণযোগ্য সবচেয়ে ভালো শাসনতান্ত্রিক দৃষ্টান্ত হিসেবে প্রয়োগ করা সুবিধাজনক। কিন্তু যত যা–ই হোক না কেন, সব সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপই নতুন সার্বভৌম শক্তির সিদ্ধান্তের অধস্তন হয়ে যায়।

২.

২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর আমরা যে ‘পরম ব্যতিক্রমী ব্যবস্থা’য় ঢুকে গিয়েছি, তা ছাত্র–জনতার দাবি ও সক্রিয় আন্দোলনের মুখে সাংবিধানিক পদাধিকারী বিভিন্ন ব্যক্তির পদত্যাগ বা অব্যাহতির ঘটনা থেকে আঁচ করা যায়। স্বাভাবিক সাংবিধানিক অবস্থায় ‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল’ বা জাতীয় সংসদে অভিশংসনের প্রক্রিয়া ছাড়া এদের পদচ্যুত করার সুযোগ নেই; কিন্তু সবই হয়েছে আর তা হয়েছে পরম ব্যতিক্রমী ব্যবস্থায়, যেখানে অভ্যুত্থানে বিজয়ীদের অভিপ্রায়ই প্রাধান্য লাভ করে।

তত্ত্বে যেভাবেই থাক না কেন, আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনার ইতিহাসে এমন অনেক দৃষ্টান্ত রয়েছে। ১৯৫৮ সালের পাকিস্তানে আইয়ুব খান সংবিধান রদ করে ‘আইন (বলবৎকরণ) আদেশ, ১৯৫৮’ জারি করেন। তাতে ১৯৫৬ সালের সংবিধানকে মৃত সংবিধান অভিহিত করে রদ করা হলেও সেটিকেই আবার ‘ভেন্টিলেশন’–এ আনা হয়। বলা হয়, রাষ্ট্রীয় সব কর্মকাণ্ড যত দূর সম্ভব ‘মৃত সংবিধান’ অনুযায়ীই চলবে, তবে সামরিক আইনের ওপর প্রাধান্য পাবে।

১৯৬৯ সালে আইয়ুব নিজেই যখন মসনদ ছাড়তে বাধ্য হন, তখন ইয়াহিয়া খান মার্শাল ল জারি করে সংবিধান রদ করে হুবহু একই পদ্ধতি অবলম্বন করেন ‘অস্থায়ী সংবিধান আদেশ, ১৯৬৯’ দিয়ে।

আরও পড়ুনজুলাই সনদ নিয়ে মতভেদ এত প্রবল কেন?৩০ আগস্ট ২০২৫

বাংলাদেশে ১৯৭৫ সালের ২০ আগস্টে জারি করা মার্শাল ল প্রোক্লেমেশনের ঙ ও চ—দফার মাধ্যমে ঘোষণাপত্র ও সামরিক আইন বিধিমালা ও আদেশ সাপেক্ষে সংবিধান বলবৎ রাখা হয়। এই অধিসাংবিধানিক বন্দোবস্তের অধীনেই ১৯৭৫-৭৯ পর্যন্ত প্রণীত অনেকগুলো ‘প্রোক্লেমেশন অর্ডার’ বলেই সংবিধান সংশোধন করা হয়।

এসব সংশোধন, সংযোজন, বিয়োজন ঘটানো সাংবিধানিক কাঠামো দিয়েই রাষ্ট্র পরিচালনা করে ১৯৭৯ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনও সেই সাংবিধানিক বন্দোবস্তের অধীনেই সম্পন্নের পর গঠিত জাতীয় সংসদে সেগুলো অনুমোদিত হয়। ভুলে গেলে চলবে না যে পঞ্চম সংশোধনী দিয়ে প্রত্যক্ষভাবে সংবিধানে কোনো সংশোধনীই আনা হয়নি, শুধুই অধিসাংবিধানিক বন্দোবস্তের অধীনে আনা সংশোধনীগুলোই অনুমোদন করা হয়।

১৯৮২ সালে এরশাদ ক্ষমতা দখল করে সংবিধান স্থগিত করে দেন এবং আরেক কাঠি সরেস হয়ে ২৪ মার্চ ১৯৮২ জারি করা মার্শাল ল প্রোক্লেমেশনকে সর্বোচ্চ আইন হিসেবে ঘোষণা করে এর অধস্তন হিসেবে পূর্ববর্তী সব আইনকানুন, ব্যবস্থা চালু রাখেন। এর অধীনে তিনিও ‘প্রোক্লেমেশন অর্ডার’ জারি করে সংবিধানে সংশোধনী আনেন, যেগুলো পরে সপ্তম সংশোধনী হিসেবে অনুমোদিত হয়।

১৯৭১ সালে ১০ এপ্রিল স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে বাংলাদেশ সরকার একটি আইন জারি করে ‘আইনের ধারাবাহিকতা বলবৎকরণ আদেশ, ১৯৭১’ নামে। এ আইনের বলে ২৫ মার্চ ১৯৭১ পর্যন্ত বিদ্যমান সব আইন, বিধিবিধানকে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের অধীনে কার্যকর রাখা হয়। এরও আগে ১৯৪৭ সালের ভারত-পাকিস্তান সৃষ্টির সময়েও দেখা যায়, নতুন বন্দোবস্তের আলোকে ভারতীয় স্বাধীনতা আইন, ১৯৪৭ এর ১৮(৩) ধারাতেও উভয় রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে আগের সব আইন কার্যকর রাখা হয়।

এসব দৃষ্টান্ত থেকেই বোঝা যায়, যারাই একটা নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থা কায়েম করে, তারা পূর্বের সংবিধান বা আইনি কাঠামোর যেটুকু মানতে চায়, সেটুকুই নিতে পারে। চাইলে পুরোটাই নিতে পারে, না চাইলে পুরোপুরি বাদও দিতে পারে। একবার পূর্ববর্তী সংবিধানের কিছু নিয়েছে বলেই তা সব সময় মেনে চলতে হবে, এ রকম কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।

প্রকৃতপক্ষে এটা অভ্যুত্থানের একটা মূলনীতি; পূর্বের কাঠামো থেকে যত দূর সম্ভব বেরিয়ে আসা। কিন্তু যত দিন পর্যন্ত পুরোপুরি বেরিয়ে আসা সম্ভব না হয়, তত দিন আগের রাষ্ট্রকাঠামোর কলকবজাগুলো প্রয়োজনমতো গৃহীত বা বর্জিত হয়। তাদের এই ম্যান্ডেট দেয় অভ্যুত্থানকারী রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী।

৩.

এমন পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের রাজনৈতিক পরিসরে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করা আরেকটা বয়ান নিয়ে দুটো কথা না বললেই নয়। এটি প্রথম প্রকাশ্যে আনেন কবি, লেখক ও চিন্তক ফরহাদ মজহার। তাঁর মতে, বিদ্যমান সংবিধান অনুযায়ী শপথ নেওয়ার মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের ‘বিপ্লবী চরিত্র’ নষ্ট হয়ে গেছে।

ফরহাদ মজহারের এ রকম বক্তব্যে যুক্তি আছে কি নেই, তাঁর চেয়ে বড় কথা হলো, গণ–অভ্যুত্থানের রাজনীতি, সরকারের বৈধতা, শাসনতান্ত্রিক পরম্পরার ব্যাপারগুলোতে এটাই একমাত্র বা শেষ কথা নয়। এর কারণটি হলো, কাঠামো বদলে গেলেই বৈধতার নতুন পথ তৈরি হয়।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ১৯৭১ সালে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর পাকিস্তানিরা ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী অনেক জাতীয় পার্লামেন্ট সদস্যকে (এমএনএ) অযোগ্য ঘোষণা করে। তারপর সেসব আসনে উপনির্বাচন দিয়ে বেশির ভাগ আসনে পছন্দের প্রার্থীদের একতরফাভাবে জিতিয়ে আনে।

কিন্তু বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ’৭০-এর নির্বাচনে বিজয়ী পূর্বের পার্লামেন্ট সদস্যরাই গণপরিষদের সদস্য হিসেবে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন করেন। একই সময় পাকিস্তানেও একটি গণপরিষদ গঠিত হয় ’৭০–এর নির্বাচনে বিজয়ীদের নিয়ে, যেখানে বাংলাদেশ থেকে নির্বাচিত দুজন এমপি ছিলেন নুরুল আমীন ও রাজা ত্রিদিব রায়। বাংলাদেশের গণপরিষদে আবার এই দুজনকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়।

এ থেকে বোঝা যায়, জনগণের অভিপ্রায় বদলে গিয়েছিল বলেই নতুন কাঠামোর জন্ম হয়েছিল, বৈধতার নতুন নতুন নিয়ম ও পদ্ধতি তৈরি হয়েছিল।

বিশুদ্ধ রাজনৈতিক অঙ্গীকার ছাড়া পরবর্তী সংসদকেও জুলাই সনদ বাস্তবায়নে বাধ্য করার সুযোগ নেই। কারণ, জনগণের মতামতের ভিত্তিতে গঠিত সেই সংসদও নিজেদের ইচ্ছেমতো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ম্যান্ডেট পাবে। তখন তারা নতুন আরেকটি সাংবিধানিক কাঠামোর জন্ম দেবে। তারা যদি জুলাই সনদের আংশিক বাস্তবায়ন করে, তখন তাদের বাধ্য করার ক্ষমতা সংবিধানে থাকবে না; শুধুই রাজপথই হতে পারে তার সমাধান।৪.

আধুনিক কালে সরকার বা কোনো রাজনৈতিক ব্যবস্থার বৈধতার সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য পথ হলো সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক ভূখণ্ডের নাগরিক, সামাজিক–রাজনৈতিক সংগঠন ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে স্বীকৃতি লাভ। শুরুতেই জনগণ ও বহির্বিশ্বের স্বীকৃতির ভেতর দিয়ে জুলাই-উত্তর নয়া রাষ্ট্রব্যবস্থা তার সার্বভৌম ক্ষমতা সুসংহত করেছে।

এই দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে চলতি সংবিধানের আওতায় শপথ নিলেও তাতে অন্তর্বর্তী সরকারের বিপ্লবী চরিত্র ক্ষুণ্ন হয়নি বলেই প্রতীয়মান হয়। কারণ, ৩৬ জুলাই এখানে জনগণের গাঠনিক ক্ষমতার উন্মেষ ও একটা ‘পরম ব্যতিক্রমী অবস্থা’র জন্ম দিয়েছে।

‘পরম ব্যতিক্রমী ব্যবস্থা’ সার্বভৌম ক্ষমতাকে বাছাই করার ম্যান্ডেট দেয়, কী করতে হবে আর কী না করলেও চলবে। তাই অন্তর্বর্তী সরকার গঠনে সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদের অধীনে আদালতের মতামত নেওয়া এবং বিদ্যমান সংবিধানের অধীনে শপথ গ্রহণকে ‘অবৈধ’ বলার সুযোগ নেই।

আরও পড়ুনজুলাই সনদ নিয়ে কিছু ভাবনা১৮ আগস্ট ২০২৫৫.

তাহলে জুলাই সনদ নিয়ে কি সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদের শরণাপন্ন হওয়া যেতে পারে? এর জবাব হলো, সেটা হতেও পারে, আবার না–ও হতে পারে। এটাও সার্বভৌম ক্ষমতার সিদ্ধান্তের বিষয়। এ রকম প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন হলো, আগামী নির্বাচন কি গণপরিষদ নির্বাচন হবে? সেখানে কি জুলাই সনদ অনুযায়ী সংবিধান পুনর্লিখন করার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত থাকা উচিত?

লক্ষণীয়, ১৯৭২ সালে গঠিত গণপরিষদ বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নের জন্য ম্যান্ডেটপ্রাপ্ত ছিল না। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে তারা পাকিস্তানের সংবিধান রচনার জন্য রায় পেয়েছিলেন। আবার সেই নির্বাচনে জয়ী দল তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান তথা বর্তমান বাংলাদেশে ভোট পেয়েছিল ৭৫ দশমিক ১১ শতাংশ। ফলে অঙ্কের হিসাবেই এখানকার ২৫ শতাংশ মানুষের প্রতিনিধিত্বও সেই গণপরিষদের ছিল না।

আবার গণপরিষদ গঠনের সঙ্গে সঙ্গে গণপরিষদের সদস্যদের সদস্যপদ বাতিল আদেশ পাস করে এর তাঁদের দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে মতপ্রকাশের সুযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এভাবে ২০ জনকে বহিষ্কারও করা হয়েছিল। ফলে ওই গণপরিষদের পক্ষে স্বাধীনভাবে জনগণের অভিপ্রায় ব্যক্ত করা সম্ভব ছিল কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

সর্বোপরি ওই গণপরিষদের দ্বারা প্রণীত সংবিধান অর্ধশতাব্দীর বেশি সময় ধরে জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে পারেনি; এ দেশে বারবার ঘটা গণ–অভ্যুত্থান, সংবিধান স্থগিত, সংবিধান পুনর্লিখনের মতো ঘটনাগুলো থেকেই তা বোঝা যায়। এর ফলে জনগণকে স্বাধীনভাবে তাদের অভিপ্রায় প্রকাশের সুযোগ দিতে গণপরিষদ নির্বাচনের দাবিকে ইতিবাচক বলেই প্রতীয়মান হয়।

 এ রকম পটভূমিতে জুলাই সনদের আইনগত অবস্থান বা এর বাস্তবায়নের পদ্ধতিকে বিবেচনায় নিতে হবে। ৫ আগস্ট থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতায় থাকা এবং রাষ্ট্র পরিচালনার ভিত্তি জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা। আর এই পুরো কর্মযজ্ঞের প্রতিভূ হিসেবেই ধরতে হবে জুলাই সনদকে। সে ক্ষেত্রে সাংবিধানিক বন্দোবস্তের ভেতর দিয়েই এর বাস্তবায়ন হওয়াই মানানসই হয়।

আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে গতানুগতিক সাংবিধানিক বন্দোবস্তে ফেরত আসার পর জুলাই সনদের বাস্তবায়নকে বিদ্যমান সংবিধানের অধীনে বা এর মুখাপেক্ষী করা হলে জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা তার কর্তৃত্ব হারাবে। এতে যে সাংবিধানিক ব্যবস্থাকে উৎখাত করে জুলাই সংঘটিত হয়েছিল, সেই ব্যবস্থার অধীনেই জুলাই অভ্যুত্থানের বৈধতা-অবৈধতার বিচার বা পর্যালোচনার বিষয়টি উন্মুক্ত হয়ে পড়বে।

আরও পড়ুনজুলাই ঘোষণাপত্র: জন-আকাঙ্ক্ষা এবং রাষ্ট্রের অভিপ্রায়০৮ আগস্ট ২০২৫

আবার পরবর্তী সংসদই কেবল এগুলো বাস্তবায়ন করার আইনগত ক্ষমতার অধিকারী, এটাও অলঙ্ঘনীয় কোনো ব্যাপার নয়।

পঞ্চম ও সপ্তম সংশোধনীর ক্ষেত্রে এ রকম দেখা গেছে; একইভাবে জুলাই সনদ আগে বাস্তবায়ন করে পরে নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমে অনুমোদন নেওয়া যেতে পারে।

বিশুদ্ধ রাজনৈতিক অঙ্গীকার ছাড়া পরবর্তী সংসদকেও জুলাই সনদ বাস্তবায়নে বাধ্য করার সুযোগ নেই। কারণ, জনগণের মতামতের ভিত্তিতে গঠিত সেই সংসদও নিজেদের ইচ্ছেমতো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ম্যান্ডেট পাবে। তখন তারা নতুন আরেকটি সাংবিধানিক কাঠামোর জন্ম দেবে। তারা যদি জুলাই সনদের আংশিক বাস্তবায়ন করে, তখন তাদের বাধ্য করার ক্ষমতা সংবিধানে থাকবে না; শুধুই রাজপথই হতে পারে তার সমাধান।

কিন্তু সব রাজনৈতিক প্রশ্নের মীমাংসা রাজপথে হওয়া রাজনৈতিক পরিপক্বতার লক্ষণ নয়। কিছু ফয়সালা জাতীয় ঐকমত্য, কিছু নির্বাচনে আর কিছু সংসদে নেওয়ার মধ্যেই নিহিত থাকে রাষ্ট্রের স্থিতিশীতলতা। জুলাই সনদ প্রশ্নে যে সিদ্ধান্তই নেওয়া হোক না কেন, এ বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখতে হবে।

মিল্লাত হোসেন আইন–আদালত, সংবিধান বিষয়ে লেখক ও গবেষক

মতামত লেখকের নিজস্ব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এখন ১৮ কোটি মানুষের দাবি: জামায়াত
  • ‘ভোটারদের আস্থা নিশ্চিত করা বিএনপির দায়িত্ব’
  • পটুয়াখালীতে সালিস বৈঠকে অংশ নিলে নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বিএনপি
  • জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ আবারও রাস্তায় নামবে: জামায়াত নেতা রফিকুল
  • বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে ঐকমত্য না হলে গণভোট ছাড়া উপায় নেই: এবি পার্টি
  • রোহিঙ্গা সমস্যায় রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করতে হবে
  • মাঠের জবাব মাঠে দেওয়া হবে: সালাহউদ্দিন 
  • জামায়াত কীভাবে জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার দাবি তোলে: আনিসুল ইসলাম মাহমুদ
  • জুলাই সনদ নিয়ে যেসব বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে
  • ফরিদপুরে সীমানা নিয়ে ডিসির চিঠি, এলাকাবাসীর ৫ দাবি