চীনের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আলিবাবা তাদের এআই মডেল কুয়েনের একটি নতুন সংস্করণ প্রকাশ করেছে। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, সক্ষমতায় চ্যাটজিপিটি ও বহুল আলোচিত চীনা এআই ডিপসিকের চেয়েও বেশি শক্তিশালী এই সংস্করণ, যা চমকে দিতে পারে বিশ্বকে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীনের ভেতরে ও বাইরে শক্তিশালী নতুন এআই সিস্টেম তৈরির উন্মত্ত তাড়াহুড়োরই প্রতিফলন এটি।

আলিবাবার ক্লাউড বিভাগ এক ঘোষণায় জানিয়েছে, কুয়েন ২.

৫ ম্যাক্স প্রায় সব ক্ষেত্রেই ওপেনএআইয়ের জিপিটি-৪ও, ডিপসিক-ভি৩ ও মেটার লামা-৩.১-৪০৫বি-এর তুলনায় উন্নত। এদিকে কম খরচে তৈরি করা ডিপসিকসহ বিভিন্ন চীনা এআই মডেলগুলোয় উচ্চ ক্ষমতা থাকায় এআই প্রযুক্তি-দুনিয়ায় বড় পরিবর্তন আনতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। শুধু তা-ই নয়, চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোর কম খরচে এআই মডেল তৈরির কৌশলের কারণে শীর্ষ মার্কিন এআই প্রতিষ্ঠানগুলোয় বিপুল বিনিয়োগের যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।

১০ জানুয়ারি ‘ডিপসিক-ভি৩’ মডেলের মাধ্যমে চালিত ডিপসিকের এআই অ্যাসিস্ট্যান্ট বাজার আসে। এরপর ২০ জানুয়ারিতে স্টার্টআপটির ‘আর১’ এআই মডেল প্রকাশ পায়, যা হতবাক করেছে সিলিকন ভ্যালিকে ও ধস নামিয়েছে প্রযুক্তিখাতের শেয়ারে।

ওপেনএআইয়ের চেয়ে ৩০ শতাংশ কম শক্তি ব্যবহার করে একই রকম নির্ভুল উত্তর দিতে পারে চীনা ডিপসিকের এআই মডেল। আর এ কারণে বিনিয়োগকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃস্থানীয় বিভিন্ন এআই কোম্পানির বিশাল ব্যয় পরিকল্পনা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে।

ডিপসিকের সাফল্যের সঙ্গে সঙ্গে চীনা প্রতিযোগীদের মাঝেও তাদের এআই মডেল উন্নয়নে তীব্র প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে।

ডিপসিকের আর১ মডেল বাজারে আসার দুইদিন পরেই টিকটকের মালিকানা প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্স তাদের এআই মডেলের একটি আপডেট প্রকাশ করে। প্রতিষ্ঠানটি দাবি, এই মডেল এআইএমই টেস্টে ওপেনএআইয়ের ও১ মডেলকে হারিয়েছে।

সূত্র: কম্পিউটার ওয়ার্ল্ড

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এআই আল ব ব

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ