শিক্ষা ও গবেষণাবিষয়ক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ওয়েবমেট্রিক্সের র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)। গত ২৭ জানুয়ারি প্রকাশিত এ র‍্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে (ঢাবি) পেছনে ফেলেছে রাবি।

প্রতিবছরের মতো এবারও দুই শতাধিক দেশের ৩১ হাজারের বেশি উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় র‌্যাঙ্কিং, ২০২৫ (জানুয়ারি) প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ওয়েবমেট্রিক্স।

এই র‍্যাঙ্কিং প্রণয়নে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষণ পদ্ধতি, বৈজ্ঞানিক গবেষণার প্রভাব, নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণ, অর্থনৈতিক প্রাসঙ্গিকতাসহ সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পরিবেশগত ভূমিকা বিবেচনা করে স্পেনের মাদ্রিদভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ওয়েবমেট্রিক্স। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট ছাড়াও তাদের গবেষক ও প্রবন্ধ বিবেচনায় নিয়ে এ তালিকা তৈরি করা হয়।

ওয়েবমেট্রিক্সের প্রতিবেদন অনুসারে, বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ১ হাজার ৪২২তম। ২০২৪ সালের প্রথম সংস্করণে (জানুয়ারি) রাবির দেশীয় অবস্থান ছিল তৃতীয় এবং দ্বিতীয় সংস্করণে (জুলাই) এক ধাপ এগিয়ে অবস্থান ছিল দ্বিতীয়। এ বছর আরো এক ধাপ এগিয়ে শীর্ষ স্থান অর্জন করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। এদিকে, শীর্ষ অবস্থান থেকে অষ্টমে নেমেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, যার বৈশ্বিক অবস্থান ১ হাজার ৯৯৫তম।

বাংলাদেশের শীর্ষ বিদ্যালয়ের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছে বুয়েট (বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং ১৪৭৪), তৃতীয় অবস্থানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় (বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং ১৭৭০), চতুর্থ অবস্থানে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি (বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং ১৭৮৩), পঞ্চম অবস্থানে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং ১৮১৮), ষষ্ঠ স্থানে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং ১৯৪২), সপ্তম স্থানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং ১৯৭০) এবং অষ্টম স্থানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং ১৯৯৫)। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং ২২৮৭) নবম স্থানে এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং ২৩৬৭) দশম স্থানে আছে এ র‌্যাঙ্কিংয়ে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন বলেছেন, “এ অর্জন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। আমরা আমাদের গবেষকদের অনুপ্রেরণা দিয়ে যাচ্ছি এবং তারাও সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে গবেষণাকর্ম করছেন। এজন্যই আমাদের সফলতা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা আমাদের গবেষণা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির চেষ্টা করছি এবং সবাইকে গবেষণায় উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করছি। আশা করি, আমরা সামনের দিকে আরো ভালো করব।”

রাবির উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেছেন, “আমি অত্যন্ত আনন্দিত এবং আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞ। তবে, আমরা যেন এ সাফল্যে আত্মতুষ্টিতে ভুগে স্থবির না হয়ে যাই। আমাদের সামনে আরো ভালো করার সুযোগ রয়েছে এবং আমরা সে লক্ষ্যেই এগিয়ে যাব।”

তিনি আরো বলেন, “আমি সব সময় বলে আসছি, আমাদের গবেষণায় বরাদ্দ বাড়ানো জরুরি। ন্যূনতম বরাদ্দ অন্তত দ্বিগুণ করা উচিত, যাতে আমরা উন্নত গবেষণা করতে পারি এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরো ভালো অবস্থান অর্জন করতে সক্ষম হই।”

ঢাকা/ফাহিম/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অবস থ ন

এছাড়াও পড়ুন:

শত্রুতার জেরে সাত গরুকে বিষ প্রয়োগের অভিযোগ, মারা গেছে ৩টি

গোপালগঞ্জে পূর্ব শত্রুতার জেরে খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তিনটি গরু হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আরো চারটি গরু অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ফলে দুই কৃষক পরিবারের অন্তত পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। গত শনিবার (১ নভেম্বর) মধ্যরাতে সদর উপজেলার সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।

জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ ও পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। কীভাবে গরুগুলো মারা গেছে তা খতিয়ে দেখতে নমুনা সংগ্রহ করেছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ। পুলিশ বলছে, তারা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।

আরো পড়ুন:

‎নামাজরত বাবাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ, ৩ পুলিশ আহত

গাইবান্ধায় ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা: মামলা দায়ের 

এলাকাসাসী জানান, সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামের দুই ভাই মো. রাসুল গাজী ও হাসিব গাজী কৃষি কাজ করে সংসার চালান। তারা খামার করে কয়েকটি গরু লালন-পালন করছেন। শনিবার মধ্যরাত সাড়ে ১২টার দিকে গরুর গোঙানির শব্দ শুনে পাশের বাড়ির এক আত্মীয় ছুটে গিয়ে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন দুই ভাইকে। তারা স্থানীয় পশু চিকিৎসককে খবর দেন। সকাল হওয়ার আগেই তিনটি গরু মারা যায়। একই গোয়াল ঘরে থাকা একটি বড় ষাঁড়, একটি বাছুর ও অপর গোয়ালে থাকা দুটি ষাঁড় এখনো অসুস্থ। 

ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক মো. রাসুল গাজী জানান, শত্রুতা করেই খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তাদের গরুগুলোকে হত্যা করা হয়েছে। রাতেই টের পেয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করলেও বাঁচানো যায়নি গরুগুলো। দুই ভাইয়ের আরো চারটি গরু অসুস্থ রয়েছে। এতে তাদের অন্তত ৫-৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। 

তিনি জানান, এ ঘটনায় সদর থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

কারা তাদের গরু হত্যা করেছেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাসুল গাজী বলেন, “ঘর থেকে বের হয়ে কয়েকজনকে দৌঁড়ে যেতে দেখেছি। তাদের চেহারা দেখতে পারিনি। ফলে কাউকে চিনতে পারিনি।” 

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক হাসিব গাজী বলেন, ‍“কারো সঙ্গে আমাদের শত্রুতা থাকতেই পারে। এই অবলা পশুগুলো কার কী ক্ষতি করেছে। কোন অপরাধে এদের হত্যা করা হলো। আমরা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”

এলাকাবাসী মো. ইমদাদ শেখ বলেন, “গত শনিবার রাতে বৃষ্টি হয়। এই সুযোগে গরুগুলোকে বিষ খাইয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমরা চাই দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।”

গোপালগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গোবিন্দ চন্দ্র সর্দার বলেন, “সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামে কয়েকটি গরুকে বিষ খাওয়ানো হয় এমন খবর পেয়ে সকালে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে যান। তিনি অসুস্থ গরুগুলোকে চিকিৎসা দেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পয়জনজনিত কারণেই গরুগুলো মারা গেছে। মারা যাওয়া গরুর নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলেই গরু তিনটির মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।”

গোপালগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহ আলম বলেন, “আমি ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে গিয়ে তদন্ত শুরু করি। মারা যাওয়া গোরুগুলোর নমুনা সংগ্রহ ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/বাদল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ