নদীভাঙনের কবলে পড়ে সেতু ভেঙে খালে পড়েছে। ঘটনাটি এক মাস আগে ঘটলেও সেতু মেরামত বা পুনর্নির্মাণ করা হয়নি। এতে দুর্ভোগে পড়েছে ১০ গ্রামের মানুষ। 
জানা যায়, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় লেবুতলা-ডুমরিয়া বাজার সড়কের চিথলিয়া গ্রামের কাটা খালের ওপর নির্মিত সেতুটি ৩৪ দিন আগে ভেঙে পড়ে। এতে সেতুর পাশে স্থাপিত পানি সরবরাহ লাইন ঝুঁকিতে পড়েছে। ওই সড়ক দিয়ে যানবাহন, মানুষের চলাচল ও পণ্য পরিবহন বন্ধ হয়ে গেছে। ২১ দিন আগে স্থানীয়রা ভাঙা সেতুর ৫শ মিটার পূর্ব পাশে খালের স্লুইস গেটের ওপর কাঠ বিছিয়ে কোনো রকমে যাতায়াতের ব্যবস্থা করেছে। এতে মানুষ ও মোটরসাইকেলসহ ছোট যানবাহন চলাচল করলেও বড় যানবাহন বা উৎপাদিত কৃষিপণ্য পরিবহন করা যচ্ছে না। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন কৃষিনির্ভর এলাকার কৃষক, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। গ্রামবাসী দ্রুত সেতুটি মেরামত করে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান দাবি করেছেন।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী ফয়সাল আহমেদ বলেন, গত বছর ৩০ ডিসেম্বর শৈলদহ নদীর ভাঙনের কবলে পড়ে সেতুটি ভেঙে খালের মধ্যে পড়ে গেছে। তারা খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বিষয়টি তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে তাৎক্ষণিকভাবে জানিয়েছেন। বিকল্প পথে চলাচলের ব্যবস্থা করতে তারা গত ১৬ জানুয়ারি এলজিইডি’র গোপালগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে কিছু কাজ করার জন্য অর্থ বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ পেলে তারা ওই সেতুর বিকল্প ও স্থায়ী চলাচলের ব্যবস্থা করতে পারবেন।
চিথলিয়া গ্রামের গৃহবধূ সুবর্ণা মজুমদার বলেন, ডুমরিয়া ইউনিয়নের ১০ গ্রামের হাজার হাজার মানুষ এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন। এ এলাকায় একটি হাইস্কুল, দুটি প্রাইমারি স্কুল, একটি বাজার, পানির ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, ধর্মীয় উপাসনালয়, কমিউনিটি ক্লিনিকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রয়েছে। গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর সেতুটি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সেতুর পাশে স্থাপিত ইউনিয়ন পানি সরবরাহ পাইপলাইনও ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। গত ১০ জানুয়ারি স্থানীয়রা ওই খালের স্লুইস গেটের ওপর কাঠ বিছিয়ে কোনো রকম যোগাযোগ স্থাপন করেছেন। তাও খালের এপার ওপার দিয়ে অন্তত ১ কিলোমিটার পথ ঘুরে কাঁচা রাস্তার ওপর দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। ভারী যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। এমনকি কৃষিপণ্য, মাছ, পশুখাদ্যসহ অনেক পণ্য পরিবহন করা যাচ্ছে না। তারা সেতু সংস্কার করে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান চান। 
টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতী সরদারপাড়া গ্রামের গৃহবধূ সুখি বেগম জানান, তিনি নিয়মিত এ পথে যাতায়াত করেন। সেতু ভেঙে যাওয়ায় তাদের অনেকটা পথ ঘুরে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এতে তাদের অনেক সময় নষ্ট হচ্ছে। তারা এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি চান।
ভ্যানচালক ইয়াকুব তালুকদার বলেন, সেতু ভাঙার পর ১০ দিনের মতো এখানে গাড়ি চালাতে পারেননি। পরে স্লুইস গেটে কাঠ বিছিয়ে দিয়ে স্থানীয়রা যাতায়াতের ব্যবস্থা করেছেন। তারা চান এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান হোক।
এলজিইডির গোপালগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী এহসানুল হক বলেন, ওই স্থানে একটি সেতু নির্মাণের প্রস্তাবনা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ এলেই জনগণের চলাচল ও পণ্য পরিবহনের সুবিধার্থে জরুরি ভিত্তিতে কাজ করা হবে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র ব যবস থ কর ছ ন র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

ক্রান্তিকালে বিসিবির প্রস্তুতির অভাব দেখছেন তামিম

জাতীয় দলের দীর্ঘদিনের নির্ভরতার প্রতীক তামিম ইকবাল মনে করছেন, সাকিব-মুশফিক-রিয়াদদের বিদায়ের পর বাংলাদেশের ক্রিকেটে যে সংকট তৈরি হয়েছে, তার জন্য আগেভাগে প্রস্তুত ছিল না বিসিবি। এই পরিস্থিতিতে হাই পারফরম্যান্স (এইচপি), টাইগার্স ও ‘এ’ দলের কাঠামোতে আরও বেশি বিনিয়োগের ওপর জোর দিয়েছেন তিনি।

সমকালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তামিম বলেন, ‘পাঁচজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার সরে গেছে, যাদের অভিজ্ঞতা ১৫-১৭ বছরের। তারা হাজারের বেশি ম্যাচ খেলেছে। এই মানের ক্রিকেটারদের বিদায়ে শূন্যতা আসবেই। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, বোর্ড কি এই ক্রান্তিকালের জন্য প্রস্তুত ছিল?’

তামিমের মতে, জাতীয় দলের অনেক ক্রিকেটারই এখন ৭-১০ বছর ধরে খেলছেন। এই সময়টাতে তাদের পাশাপাশি ভবিষ্যতের জন্য বিকল্প খেলোয়াড় গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া উচিত ছিল। তিনি বলেন, ‘জাতীয় দলকে যতটা সম্ভব সুযোগ-সুবিধা দিন, কিন্তু ভবিষ্যতের কথা ভেবে এইচপি, টাইগার্স ও “এ” দলে বেশি ফোকাস করুন। এই জায়গাগুলোতে ভালো বিনিয়োগ না হলে জাতীয় দল সবসময় ধুঁকতেই থাকবে।’

তবে সামগ্রিকভাবে দেশের ক্রিকেট নিয়ে আশাবাদী তামিম। তার ভাষায়, ‘আমরা কখনোই তিন সংস্করণে একসঙ্গে ভালো করিনি। এই দলটাকেও যদি সময় দেওয়া হয়, তারা ঘুরে দাঁড়াবে।’

ভবিষ্যৎ তারকা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তামিম বেশ কয়েকজনের নাম তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘পেস বিভাগে তাসকিন আছে, নতুন নাহিদ রানা ভালো করছে। তাইজুল চমৎকার স্পিনার। হৃদয়, জাকের আলীরাও সম্ভাবনাময়। এদের মধ্য থেকেই কেউ কেউ বড় তারকা হয়ে উঠতে পারে।’

সবশেষে তিনি বোর্ডের প্রতি ক্রিকেটারদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘ক্রিকেটারদের আত্মবিশ্বাস দিন, বোঝান– তারা বোর্ডের পূর্ণ সমর্থন পাচ্ছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ