দেশের সব নাগরিক ও সম্পদকে বীমার আওতায় আনতে চায় সরকার। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে একটি প্রস্তাবনা অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে পাঠিয়েছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। এ বিষয়ে সম্প্রতি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা হয়েছে। সভায় প্রাথমিক পর্যায়ে সব গার্মেন্ট-কলকারখানায় কর্মরত শ্রমিক, মেট্রোরেল, ট্রেনসহ সব ধরনের যানবাহন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক, শপিংমলসহ ছয় খাতকে বীমার আওতায় আনার সিদ্ধান্ত হয়। সভার কার্যপত্র সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।  
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কর্মকর্তারা সমকালকে বলেন, আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে  আইডিআরএকে বলা হয়েছে। তাদের প্রস্তাব পাওয়ার পর তা পর্যালোচনা করে এসব কার্যক্রম বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে। 

আইডিআরএর প্রতিনিধি সভায় বলেন, দেশের সব নাগরিকের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে স্বাস্থ্যবীমা সুবিধার বিকল্প নেই। বীমার আওতায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এ ছাড়া দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি ভবন, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এবং সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিও বীমায় অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। একই সঙ্গে যেসব সম্পদ বীমার আওতাবহির্ভূত সেগুলোকে আবশ্যিকভাবে বীমার আওতায় আনা যেতে পারে। এমনকি সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশের বিষয়েও বীমার উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
সভায় অংশ নিয়ে দেশের সব সম্পদ বীমার আওতায় আনার উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের প্রতিনিধি। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি বলেন, দেশের প্রান্তিক খামারিদের গবাদি পশুবীমা ও পোলট্রি বীমার আওতায় আনতে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। এ জন্য জনমনে বীমা সম্পর্কে ব্যাপক আস্থা তৈরির উদ্যোগ নিতে হবে। এরই অংশ হিসেবে বীমার প্রিমিয়াম সরকারকে পরিশোধ করতে হবে।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি বলেন, সব স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অর্থাৎ আবাসিক-অনাবাসিক ভবন ফায়ার ইন্স্যুরেন্সের আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। রাজউকের প্রতিনিধি বলেন, তাদের  নথিগুলোকে বীমার আওতায় আনা যেতে পারে।  ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রতিনিধি বলেন, সরকারি ও বেসরকারি ভবন বীমার আওতায় আনার বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। যে কোনো ভবন তৈরির ক্ষেত্রে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ চলাকালীন সময়ের জন্য বীমা করে থাকে। কিন্তু পরে তা আর কার্যকর থাকে না।
বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স ফোরামের প্রতিনিধি বলেন, উন্নত দেশের মতো সব নাগরিক ও সম্পদের বীমা চালু করার উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। সব সম্পদ বীমার আওতায় আনা হলে বীমা খাতের ব্যাপক অগ্রগতি হবে। তিনি সম্প্রতি বন্ধ হওয়া মোটর ইন্স্যুরেন্স চালু করার জন্য মত দেন। বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি বলেন, মেট্রোরেল ও ট্রেন বীমা নিশ্চিত করা যেতে পারে। এ ছাড়া গ্রুপ ইন্স্যুরেন্সের মাধ্যমে গার্মেন্টকর্মীদের বীমার আওতায় আনা যেতে পারে। সভায় উপস্থিত অন্যরাও  বীমার আওতা বাড়ানোর উদ্যোগে একমত পোষণ করেন। 
সভায় প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত হয়, মেট্রোরেল, ট্রেনসহ সব ধরনের যানবাহন বীমার আওতায় আনা হবে। ফায়ার ইন্স্যুরেন্সের আওতায় আনা হবে দেশের সব বৃহৎ শপিংমল।  গবাদিপশু বীমা ও পোলট্রি শিল্পের বীমা চালু হবে। গার্মেন্ট-কলকারখানায় কর্মরত শ্রমিকরা আসবেন গ্রুপ বীমার আওতায়। সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক আসবেন স্বাস্থ্যবীমার আওতায় এবং মোটর বীমা পলিসি চালু হবে। এসব বীমা চালু করতে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে বলা হয়। একই সঙ্গে অর্থ বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করে প্রিমিয়াম প্রদান পদ্ধতি নির্ধারণ করার পাশাপাশি কে কত ভাগ দেবে তা চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত হয়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: দ শ র সব সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

‌‘মানসিক ভারসম্যহীন’ ছেলের লাঠির আঘাতে বাবার মৃত্যু

নেত্রকোণার মদনে ছেলের লাঠির আঘাতে মোস্তফা মিয়া (৬৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। শনিবার (১ নভেম্বর) রাত ১০টার দিকে উপজেলার মাঘান ইউনিয়নের ঘাটুয়া গ্রামে হত্যাকাণ্ডটি ঘটে।

মদন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শামসুল আলম শাহ বলেন, “ছেলের আঘাতে মোস্তফা মিয়া নামে এক ব্যক্তি মারা গেছেন। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, ছেলেটি মানসিক ভারসাম্যহীন। পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

আরো পড়ুন:

গাইবান্ধায় চোর সন্দেহে গণপিটুনি, নিহত ৩

বাগেরহাটে বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যু

নিহত মোস্তফা মিয়া একই গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের ছেলে। অভিযুক্তের নাম সাজ্জাদ মিয়া (২৫)।

স্থানীয় সূত্র জানায়, সাজ্জাদ দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন। তিনি প্রায়ই অস্বাভাবিক আচরণ করেন এবং বিভিন্ন জায়গায় চলে যান। গতকাল শনিবার রাতে খাবার শেষে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন মোস্তফা মিয়া। সাজ্জাদ ঘরে ঢুকে লাঠি দিয়ে তার বাবার মাথায় আঘাত করেন। ঘটনাস্থলেই মোস্তফা মিয়া মারা যান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে।

ঢাকা/ইবাদ/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ