বইয়ের প্রচার রবীন্দ্রনাথও করেছেন: রফিকুজ্জামান রণি
Published: 2nd, February 2025 GMT
‘জেমকন তরুণ কবিতা পুরস্কার-২০১৯’ প্রাপ্ত কবি রফিকুজ্জামান রণি। কবিতা ও গল্প দুই’ই লেখেন তিনি। এখন পর্যন্ত রফিকুজ্জামানের প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৮টি। তার সর্বশেষ প্রকাশিত কবিতার বই ‘না ফেরার ব্যাকরণ’। সম্প্রতি রাইজিংবিডির সঙ্গে কবিতা, গল্প, বইমেলাসহ নানা বিষয়ে কথা বলেছেন রফিকুজ্জামান রণি। সাক্ষাৎকার গ্রহণে স্বরলিপি।
রাইজিংবিডি: ‘না ফেরার ব্যাকরণ’-এ কি ধরনের কবিতা স্থান পেয়েছে?
রফিকুজ্জামান রণি: ‘না ফেরার ব্যাকরণ’ কবিতার বইয়ে বিচিত্র ধারার কবিতা স্থান পেয়েছে। সনেট, সেস্টিনা, কোয়াট্রেন, ম্যাক্সিম, রুবাই, হাইকু, ছন্দোবদ্ধ কবিতা, অণুকাব্য, গদ্যকাব্য, গীতিকাব্য ও দীর্ঘকবিতা।
রাইজিংবিডি: ‘জেমকন তরুণ কবিতা পুরস্কার-২০১৯’ অর্জনের পর বই প্রকাশ করা কিছুটা সহজ হয়েছে কিনা?
রফিকুজ্জামান রণি: খুব বেশি সহজ হয়েছে বলা যাবে না। তবে পুরস্কার অর্জনের সুবিধাটুকু অনেক ক্ষেত্রেই পাই। বই প্রকাশের ক্ষেত্রেও কিছুটা পাই।
আরো পড়ুন:
উপন্যাস লিখবার সময় আমি অন্য যেকোন লেখা থেকে বিরত থাকি: পাপড়ি রহমান
‘বিশ্বের বিভিন্ন অনুবাদ সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনে আমরা পিছিয়ে আছি’
রাইজিংবিডি: প্রকাশনীগুলোর সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন?
রফিকুজ্জামান রণি: হাতেগোনা কিছু প্রকাশনী ছাড়া বাকি সবাই বাণিজ্যিক চিন্তা মাথায় নিয়ে প্রকাশনায় নামে। তাই রয়্যালিটি অনেকটা সোনার হরিণে পরিণত হয়েছে। অথচ রয়্যালিটি পাওয়া লেখকদের ন্যায্য অধিকার। দেশের হাজার হাজার লেখক এ অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। মুনাফাভোগী প্রকাশকরা কৌশলে তাদের ঠকাচ্ছে। শুধু তাই নয়, উল্টো লেখকদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে বই প্রকাশ করে নিজেদের ব্যবসা-বাণিজ্য চাঙ্গা করছে তারা। তবে অনুপ্রাণন ও জলধি প্রকাশনের সঙ্গে কাজ করে ভালো অভিজ্ঞতা হয়েছে। লেখকদের প্রতি তাদের আন্তরিকায় মুগ্ধ হয়েছি।
রাইজিংবিডি: কোনো বই শেষ হয়ে গেছে কিন্তু পুনর্মুদ্রণ করা হচ্ছে না এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে?
রফিকুজ্জামান রণি: না। এমনটি কখনও হয়নি। তবে কখনও কখনও জটিলতা তৈরি হয়েছে।
রাইজিংবিডি: কবিতা নাকি কথাসাহিত্যে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন?
রফিকুজ্জামান রণি: কবিতা এবং কথাসাহিত্য দুটোই আমার কাছে সমান গুরুত্বের। তবে যখন কবিতা নিয়ে কাজ করি তখন কথাসাহিত্যে তুলনামূলকভাবে মনোযোগটা একটু কম দিই। আবার যখন কথাসাহিত্য নিয়ে কাজ করি তখন কবিতায় একটু মনোযোগ দিই কম। কিন্তু চর্চার জায়গা থেকে কোনোটাকেই গুরুত্বহীন ভেবে দূরে সরিয়ে রাখি না।
রাইজিংবিডি: লেখকের বই প্রচার কৌশল কেমন হওয়া উচিত?
রফিকুজ্জামান রণি: লেখক বই অবশ্যই প্রচার করবে। বইয়ের প্রচার রবীন্দ্রনাথও করেছেন। কিন্তু সেটা যেন ব্যক্তিত্বহীনভাবে না হয়। কোনো ছল- চাতুরীর আশ্রয় নিয়েও প্রচার করা ঠিক না। আমি মনে করি, লেখক তার বই সরল-বিশ্বাসে এবং জড়তাহীনভাবে প্রচার করলে মানুষ সেটা ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করবে।
রাইজিংবিডি: শিশুসাহিত্যও লিখছেন, শিশুসাহিত্যর বিষয়, ভাষাবিন্যাস কেমন হওয়া উচিত বলে মনে করেন?
রফিকুজ্জামান রণি: হ্যাঁ, শুরু থেকেই শিশুসাহিত্য নিয়ে কাজ করছি। প্রচারে এসেছি দেরিতে। সেটা ইচ্ছে করেই। শিশুদের ভাষা, আচরণ এবং কল্পনার জগত একেবারেই ভিন্ন। ওদের রুচিবোধ এবং চিন্তার পরিধি বুঝে লিখতে হয়। বাক্যবিন্যাস, শব্দ চয়ন এবং উপমা-উৎপ্রেক্ষার ক্ষেত্রে কঠিনতা পরিহার করে আকর্ষণীয়, সহজ-সরল ও সাবলীলভাবে উপস্থাপন করা উচিত। সেই সঙ্গে হতাশা এবং দুঃখ-বেদনার বিষয় উপস্থাপন না করে বিনোদনমূলক সাহিত্য রচনা করা উচিত।
রাইজিংবিডি: অন্য লেখকের কোন বইটি আপনার বেশি প্র্রিয়, কেন?
রফিকুজ্জামান রণি: কোন বইটি আমার প্রিয় সেটা নির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল। কারণ, বয়স, বিষয়, ধরন ও প্রেক্ষাপট বিবেচনায় প্রিয় ও অপ্রিয় তালিকাটা দীর্ঘ হয়। সুতরাং একটা নয়, অসংখ্য বই আমার প্রিয় তালিকায় ঠাঁই পেয়েছে।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
গান নিয়েই আমার সব ভাবনা
কর্নিয়া। তারকা কণ্ঠশিল্পী। অনলাইনে প্রকাশ পাচ্ছে বেলাল খানের সঙ্গে গাওয়া তাঁর দ্বৈত গান ‘তুমি ছাড়া নেই আলো’। এ আয়োজন ও অন্যান্য প্রসঙ্গে কথা হয় তাঁর সঙ্গে–
‘ভাঙা ঘর’ ও ‘আদর’-এর পর প্রকাশ পাচ্ছে ‘তুমি ছাড়া নেই আলো’। একনাগাড়ে দ্বৈত গান গেয়ে যাচ্ছেন, কারণ কী?
শ্রোতাদের চাওয়া আর নিজের ভালো লাগা থেকেই দ্বৈত গান গাওয়া, এর বাইরে আলাদা কোনো কারণ নেই। কারণ, সব সময় ভাবনায় এটাই থাকে, যে কাজটি করছি, তা শ্রোতার প্রত্যাশা পূরণ করবে কিনা। সেটি একক, না দ্বৈত গান– তা নিয়ে খুব একটা ভাবি না। তা ছাড়া রুবেল খন্দকারের সঙ্গে গাওয়া ‘ভাঙা ঘর’ ও অশোক সিংয়ের সঙ্গে গাওয়া ‘আদর’ গান দুটি যেমন ভিন্ন ধরনের, তেমনি বেলাল খানের সঙ্গে গাওয়া ‘তুমি ছাড়া নেই আলো’ অনেকটা আলাদা। আসল কথা হলো, যা কিছু করি, তার পেছনে শ্রোতার ভালো লাগা-মন্দ লাগার বিষয়টি প্রাধান্য পায়।
দ্বৈত গানের সহশিল্পী হিসেবে নতুনদের প্রাধান্য দেওয়ার কারণ?
সহশিল্পীর কণ্ঠ ও গায়কি যদি শ্রোতার মনোযোগ কেড়ে নেওয়ার মতো হয়, তাহলে সে তরুণ, নাকি তারকা– তা নিয়ে ভাবার প্রয়োজন পড়ে না। এমন তো নয় যে, নতুন শিল্পীরা ভালো গাইতে পারে না। তা ছাড়া তারকা শিল্পী ছাড়া দ্বৈত গান গাইব না– এই কথাও কখনও বলিনি। তাই দ্বৈত গানে তারকাদের পাশাপাশি নতুনদের সহশিল্পী হিসেবে বেছে নিতে কখনও আপত্তি করিনি।
প্রতিটি আয়োজনে নিজেকে নতুন রূপে তুলে ধরার যে চেষ্টা, তা কি ভার্সেটাইল শিল্পী প্রতিষ্ঠা পাওয়ার জন্য?
হ্যাঁ, শুরু থেকেই ভার্সেটাইল শিল্পী হিসেবে পরিচিতি গড়ে তুলতে চেয়েছি। এ কারণে কখনও টেকনো, কখনও হার্ডরক, আবার কখনও ফোক ফিউশনের মতো মেলোডি গান কণ্ঠে তুলেছি। গায়কির মধ্য দিয়ে নিজেকে বারবার ভাঙার চেষ্টা করছি। সব সময়ই নিরীক্ষাধর্মী গান করতে ভালো লাগে। একই ধরনের কাজ বারবার করতে চাই না বলেই নানা ধরনের গান করছি। নিজেকে ভেঙে সব সময়ই নতুনভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা জারি রাখছি।
প্রযোজক হিসেবে নিজের চ্যানেলের জন্য নতুন কী আয়োজন করছেন?
আয়োজন থেমে নেই। তবে কবে নতুন গান প্রকাশ করব– তা এখনই বলতে পারছি না। কারণ একটাই, অন্যান্য কাজের মতো গান তো ঘড়ি ধরে কিংবা সময় বেঁধে তৈরি করা যায় না। একেকটি গানের পেছনে অনেক সময় দিতে হয়। কোনো কোনো গানের কথা-সুর-সংগীতের কাটাছেঁড়া চলে দিনের পর দিন। এরপর যখন তা সময়োপযোগী হয়েছে বলে মনে হয়, তাখনই প্রকাশ করি।
গান গাওয়ার পাশাপাশি মডেলিং বা অভিনয় করার ইচ্ছা আছে?
সত্যি এটাই, গান নিয়েই আমার সব ভাবনা। তারপরও অনেকের অনুরোধে কয়েকটি পত্রিকার ফ্যাশন পাতার জন্য মডেল হিসেবে কাজ করেছি। তবে মডেল হব– এমন ইচ্ছা নিয়ে কাজ করিনি। অভিনয় নিয়েও কিছু ভাবি না। অন্য কোনো পরিচয়ে পরিচিত হতে চাই না।