শিল্পীদের বাধা, অভিনয়শিল্পী সংঘের উদ্বেগ
Published: 2nd, February 2025 GMT
চট্টগ্রামে মেহজাবীন চৌধুরী, টাঙ্গাইলে পরীমণির পর বাধার মুখে রেস্তোরাঁ উদ্বোধন করতে পারেননি চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস। গত ২৮ জানুয়ারি রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের একটি রেস্তোরাঁ উদ্বোধনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও ‘মুসল্লিদের আপত্তির’ মুখে যেতে পারেননি এই অভিনেত্রী। বিষটি নিয়ে উদ্বে জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে টেলিভিশন নাটকের অভিনয়শিল্পীদের সংগঠন অভিনয়শিল্পী সংঘ বাংলাদেশ।
গত ৩১ জানুয়ারি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে সংগঠনটির তৃতীয় বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ বৈঠকে সদস্যদের সম্মতিক্রমে এ বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। লিখিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা আমাদের উদ্বিগ্ন ও শঙ্কিত করেছে এবং শিল্পীর স্বাধীনতা ও পেশার প্রতি হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আমরা লক্ষ করেছি, নারী অভিনয়শিল্পীদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণে বাধা দেওয়া হয়েছে।”
সরকার ও যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “যদি কোনো অভিনয়শিল্পী কোনো রকম অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকেন, তবে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ সাপেক্ষে রাষ্ট্রের প্রচলিত আইনে তার বিচার হবে। কিন্তু অহেতুক হয়রানি বন্ধ করা না গেলে ভয়-শঙ্কাহীন ও স্বাধীনভাবে শিল্প–সংস্কৃতির চর্চা করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। এতে দেশীয় শিল্প–সংস্কৃতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং ভিনদেশি ও অপসংস্কৃতির বিস্তার ঘটার আশঙ্কা তৈরি হবে। আমরা এ বিষয়ে সরকার ও যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এবং আশু সমাধান দাবি করছি।”
আরো পড়ুন:
শামীম-তানিয়ার ‘শ্বশুর আব্বার টি-স্টল’
তাহসানের সঙ্গী নাদিয়া
সংগঠনটির সভাপতি আহসান হাবীব নাসিম ও সাধারণ সম্পাদক রওনক হাসান স্বাক্ষরিত এই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এই মুহূর্তে সকলকে সাথে নিয়ে আগামী দিনের বৈষম্যহীন, গণতান্ত্রিক ও সংস্কৃতিবান্ধব বাংলাদেশ বিনির্মাণ হোক আমাদের সকলের লক্ষ্য।’
উল্লেখ্য, গত বছরের ২ নভেম্বর চট্টগ্রামে একটি শো-রুম উদ্বোধন করতে গিয়ে তাওহীদি জনতার বাধার মুখে ফিরে আসেন অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী। গত ২৫ জানুয়ারি টাঙ্গাইলে একটি শো-রুম উদ্বোধন করার কথা ছিল চিত্রনায়িকা পরীমণির। কিন্তু হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আপত্তির কারণে টাঙ্গাইলে যেতে পারেননি এই অভিনেত্রী।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
৩৬ জুলাইকে জাতীয় মুক্তি দিবস ঘোষণাসহ ১৩ দাবি ইনকিলাব মঞ্চের
ছাত্র আন্দোলনের ৩৬ জুলাইকে জাতীয় মুক্তি দিবস ঘোষণাসহ ১৩ দফা দাবি জানিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ।
সোমবার (১৬ জুন) বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবির কথা জানায় সংগঠনটি।
সংগঠনটির মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদী বলেন, “আমাদের স্বাধীনতা দিবস আছে, বিজয় দিবস আছে, কিন্তু আমাদের মুক্তি ঘটেনি। তাই ঐতিকহাসিক ৩৬ জুলাইকে জাতীয় মুক্তি দিবস ঘোষণা করতে হবে। এ ছাড়াও জুলাই সনদ চূড়ান্ত করার আগে জনগণের মতামতের জন্য তা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।”
আরো পড়ুন:
বেগম রোকেয়া পদকের জন্য আবেদনপত্র আহ্বান
নিরাপদ খাদ্য দিবস শনিবার: ‘নিরাপদ খাদ্য উচ্চ রক্তচাপ ঝুঁকি কমায়’
তিনি বলেন, “গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, মৌলিক সংস্কার এবং ২০২৪ সালের গণহত্যার বিচার নিশ্চিত না করে দেশে যদি নির্বাচন আয়োজন করা হয়, তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘গাদ্দার’ হিসেবে ঘোষণা করা হবে। এই সনদে ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটের নিরিখে বৈষম্যবিরোধী ইনসাফভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্র বিনির্মাণের সুস্পষ্ট রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে।”
তিনি আরো বলেন, “সংবিধান থেকে জনবিরোধী ও জুলাই সনদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক সব ধারা উপধারা বাতিল করে জুলাই সনদকে সাংবিধানের তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী সব দল, মত এবং লিঙ্গের ন্যায্য শরিকানা নিশ্চিত করতে হবে। যেখানে বলা হবে- আমরা বাংলাদেশের জনগণ এই ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান সম্পল্প করেছি।”
সংবাদ সম্মেলনে ইনকিলাব মঞ্চ ১৩টি প্রস্তাবনা তুলে ধরে, যা জুলাই সনদের কার্যকর প্রয়োগ ও জাতীয় ঐক্যের ওপর গুরুত্বারোপ করে।
প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে রয়েছে- ১৯৪৭, ১৯৭১ ও ২০২৪ সালের ঐতিহাসিক সংগ্রামে জীবন উৎসর্গ করা সব শহীদকে রাষ্ট্রের শ্রেষ্ঠ সন্তান ঘোষণা করতে হবে; যেসব জুলাই যোদ্ধার স্থায়ী অঙ্গহানি হয়েছে, তাদের জন্য পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে; ফ্যাসিবাদী আমলে সংঘটিত ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের ভোটারবিহীন অবৈধ নির্বাচন বাতিল করে সংশ্লিষ্ট দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
এছাড়া ফ্যাসিবাদী আমলের সকল মন্ত্রী, এমপি ও দোষী আমলাসহ রাষ্ট্রীয় কর্মচারীদের বিচারের আওতায় এনে অবৈধভাবে উপার্জিত সম্পদ জব্দ করে তা শহীদ ও আহতদের কল্যাণে ব্যয় করতে হবে; দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা রক্ষায় ভারতীয় আধিপত্যবিরোধী ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে; জুলাই, পিলখানা ও শাপলা গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করে দেশি-বিদেশি অপশক্তি চিহ্নিত করতে হবে; রাষ্ট্র কাঠামোর মৌলিক সংস্কার করতে হবে যাতে ফ্যাসিবাদ আর স্বৈরতান্ত্রিকতা কখনও ফিরে না আসে; ৩৬ জুলাইকে জাতীয় মুক্তি দিবস ঘোষণা করতে হবে।
বাকি দাবিগুলো হলো- জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটের ভিত্তিতে বৈষম্যবিরোধী কল্যাণ রাষ্ট্রের রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে; সংবিধান থেকে জনবিরোধী ও জুলাই সনদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক সব ধারা বাতিল করে জুলাই সনদকে সংবিধানের তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে; ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী সব দল, মত ও লিঙ্গের ন্যায্য অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে; জুলাই সনদের ভাষাগত দুর্ব্যবহার পরিহার করে জনসাধারণের জন্য সহজ ভাষায় উপস্থাপন করতে হবে এবং সনদ চূড়ান্ত করার পূর্বে জনগণের মতামতের জন্য তা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।
আগামী ২৫ জুনের মধ্যে জুলাই সনদ ঘোষণা করা না হলে রাজধানীর শাহবাগ মোড় থেকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ অভিমুখে ‘লাল মার্চ’ করার ঘোষণাও দিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী