পুলিশের গাড়ি থামিয়ে গ্রেপ্তার আ.লীগ নেতাকে ছিনিয়ে নিলেন কয়েক শত লোক
Published: 2nd, February 2025 GMT
পাবনার সুজানগরে বিস্ফোরক মামলায় আবদুল ওহাব নামে আওয়ামী লীগের এক নেতাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশের গাড়ি থামিয়ে তাকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। রোববার বিকেলে উপজেলার মথুরাপুর স্কুলমাঠে এ ঘটনা ঘটে।
ছিনিয়ে নেওয়া আবদুল ওহাব সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। তিনি মথুরাপুর স্কুল গেট এলাকার বাসিন্দা। জেলা শহরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় বিস্ফোরক আইনে করা একটি মামলার আসামি তিনি।
এদিকে আওয়ামী লীগ নেতাকে ছিনিয়ে নেওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, আবদুল ওহাবকে গ্রেপ্তার করে গাড়িতে নিয়ে যাচ্ছিলেন পুলিশ সদস্যরা। এ সময় স্থানীয় লোকজন দৌড়ে এসে গাড়ির গতিরোধ করেন। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ওহাবকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
স্থানীয় লোকজন জানান, আসরের নামাজ আদায় করে মসজিদ থেকে বের হচ্ছিলেন আবদুল ওহাব। এ সময় পুলিশ এসে তাকে গ্রেপ্তার করে। মুহূর্তেই তার গ্রেপ্তারের খবর ছড়িয়ে পড়লে মথুরাপুর, নারায়ণপুর, ভবানীপুর, বলরামপুরসহ কয়েকটি গ্রামের কয়েক শত লোক জড়ো হয়ে পুলিশের গাড়ি থামিয়ে ওহাবকে ছিনিয়ে নেন। এ ঘটনার পর ওই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা সাংবাদিকদের বলেন, আবদুল ওহাব বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় করা একটি মামলার আসামি। গ্রেপ্তারের পর কিছু লোক তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যান। একই সঙ্গে পুলিশের ওপর হামলা করেন। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।
প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।
মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।
নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।