যশোরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব জেসিনার পদ স্থগিত
Published: 5th, February 2025 GMT
সাংগঠনিক নীতিবহির্ভূত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোর জেলা কমিটির সদস্যসচিব জেসিনা মোর্শেদের (প্রাপ্তি) পদ সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সদস্যসচিব আরিফ সোহেল স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জেসিনা মোর্শেদের কাছে পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘সম্প্রতি জেলার বিভিন্ন উপজেলা কমিটি গঠনে আপনার কিছু সাংগঠনিক নীতিবহির্ভূত কর্মকাণ্ড আমাদের নজরে এসেছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোর জেলা শাখায় আপনার সদস্যসচিব পদটি সাময়িকভাবে স্থগিত করা হলো। একই সঙ্গে আনীত অভিযোগ তদন্তের জন্য তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটির সামনে সশরীরে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ প্রদান করা হলো।’
এদিকে নাম প্রকাশে অনীহ সংগঠনটির এক নেতা জানান, জেসিনা মোর্শেদের বিরুদ্ধে সর্বশেষ ঝিকরগাছা উপজেলা কমিটি গঠনে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া বিভিন্ন উপজেলা কমিটিতে পদ দেওয়ার জন্যে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ আছে তাঁর বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে যশোর জেলার ৫৮ জন নেতার স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে পাঠানো হয়। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে সম্প্রতি যশোরে তদন্তে আসেন দুই কেন্দ্রীয় নেতা। প্রাথমিকভাবে তাঁরা অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছেন।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জেসিনা মোর্শেদ বলেন, ‘আমি হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে চিঠিটি পেয়েছি। তদন্তের জন্য আমার কাছে জবাব চাওয়া হয়েছে। উপজেলা কমিটি গঠনে টাকা লেনদেনের বিষয়টি সত্য না। মূলত, জেলা কমিটির আহ্বায়ক রাশেদ খান নিজের ইচ্ছেমতো একচেটিয়াভাবে উপজেলা কমিটি গঠন করতে চান। প্রতিটি উপজেলায় গ্রুপিং আছে। তিনি একপক্ষকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। আমি সেটাতে বাধা দিয়েছি। আমি উভয় পক্ষের সঙ্গে বসে আলোচনার মাধ্যমে কমিটি দেওয়ার পক্ষে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন যশোরের আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেন, ‘সংগঠনে আমার কোনো পক্ষ নেই। সংগঠনের অভিভাবক হিসেবে আমাকে রাখা হয়েছে। মূলত সংগঠনকে ব্যবহার করে ব্যক্তিগত লাভ খোঁজার চেষ্টা করছেন সদস্যসচিব, যা কমিটির কেউ মেনে নিচ্ছেন না। এ জন্য তাঁর বিরুদ্ধের কমিটির বেশির ভাগ নেতা অভিযোগ দিয়েছেন।’
গত বছরের ২৬ নভেম্বর ছয় মাসের জন্য রাশেদ খানকে আহ্বায়ক ও জেসিনা মোর্শেদকে সদস্যসচিব করে ১০১ জনের যশোর জেলা কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। কমিটি গঠনের সপ্তাহখানেকের মধ্যে কমিটিতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের পুনর্বাসনসহ নানা অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন ও ফেসবুকে স্ট্যাস্টাস দিয়ে কমিটির ৯ জন পদত্যাগ করেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সদস যসচ ব র জন য কম ট র গঠন র তদন ত উপজ ল স গঠন
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?