সাংগঠনিক নীতিবহির্ভূত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোর জেলা কমিটির সদস্যসচিব জেসিনা মোর্শেদের (প্রাপ্তি) পদ সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সদস্যসচিব আরিফ সোহেল স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

জেসিনা মোর্শেদের কাছে পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘সম্প্রতি জেলার বিভিন্ন উপজেলা কমিটি গঠনে আপনার কিছু সাংগঠনিক নীতিবহির্ভূত কর্মকাণ্ড আমাদের নজরে এসেছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোর জেলা শাখায় আপনার সদস্যসচিব পদটি সাময়িকভাবে স্থগিত করা হলো। একই সঙ্গে আনীত অভিযোগ তদন্তের জন্য তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটির সামনে সশরীরে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ প্রদান করা হলো।’

এদিকে নাম প্রকাশে অনীহ সংগঠনটির এক নেতা জানান, জেসিনা মোর্শেদের বিরুদ্ধে সর্বশেষ ঝিকরগাছা উপজেলা কমিটি গঠনে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া বিভিন্ন উপজেলা কমিটিতে পদ দেওয়ার জন্যে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ আছে তাঁর বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে যশোর জেলার ৫৮ জন নেতার স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে পাঠানো হয়। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে সম্প্রতি যশোরে তদন্তে আসেন দুই কেন্দ্রীয় নেতা। প্রাথমিকভাবে তাঁরা অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছেন।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জেসিনা মোর্শেদ বলেন, ‘আমি হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে চিঠিটি পেয়েছি। তদন্তের জন্য আমার কাছে জবাব চাওয়া হয়েছে। উপজেলা কমিটি গঠনে টাকা লেনদেনের বিষয়টি সত্য না। মূলত, জেলা কমিটির আহ্বায়ক রাশেদ খান নিজের ইচ্ছেমতো একচেটিয়াভাবে উপজেলা কমিটি গঠন করতে চান। প্রতিটি উপজেলায় গ্রুপিং আছে। তিনি একপক্ষকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। আমি সেটাতে বাধা দিয়েছি। আমি উভয় পক্ষের সঙ্গে বসে আলোচনার মাধ্যমে কমিটি দেওয়ার পক্ষে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন যশোরের আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেন, ‘সংগঠনে আমার কোনো পক্ষ নেই। সংগঠনের অভিভাবক হিসেবে আমাকে রাখা হয়েছে। মূলত সংগঠনকে ব্যবহার করে ব্যক্তিগত লাভ খোঁজার চেষ্টা করছেন সদস্যসচিব, যা কমিটির কেউ মেনে নিচ্ছেন না। এ জন্য তাঁর বিরুদ্ধের কমিটির বেশির ভাগ নেতা অভিযোগ দিয়েছেন।’

গত বছরের ২৬ নভেম্বর ছয় মাসের জন্য রাশেদ খানকে আহ্বায়ক ও জেসিনা মোর্শেদকে সদস্যসচিব করে ১০১ জনের যশোর জেলা কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। কমিটি গঠনের সপ্তাহখানেকের মধ্যে কমিটিতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের পুনর্বাসনসহ নানা অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন ও ফেসবুকে স্ট্যাস্টাস দিয়ে কমিটির ৯ জন পদত্যাগ করেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সদস যসচ ব র জন য কম ট র গঠন র তদন ত উপজ ল স গঠন

এছাড়াও পড়ুন:

অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ

দীর্ঘ ৯ মাস পর শনিবার থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রথম দিন কোনো জাহাজ সেন্ট মার্টিনে না যাওয়ার কারণে পর্যটকেরা দ্বীপে যেতে পারেননি। হাজারো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। অন্যদিকে জাহাজমালিকেরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন শর্তের কারণে পর্যটকদের আগ্রহ না থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে সরকারের কোনো বাধা নেই। লিখিতভাবে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে দিনে গিয়ে দিনেই চলে আসতে হবে; রাতে থাকা যাবে না।

এদিকে রাতে থাকার সুযোগ না থাকায় পর্যটকেরা যেতে আগ্রহী হচ্ছেন না। কারণ, দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করে দ্বীপে গিয়ে আবার সেদিনই চলে আসতে হবে। এ কারণে জাহাজমালিকেরাও জাহাজ চালাতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তাঁদের দাবি, দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, জাহাজমালিকেরা যদি জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার। সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন।

শাহিদুল আলম বলেন, আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এখন কক্সবাজার শহর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত করবে।

সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে জাহাজ ছেড়ে গেলে সেন্ট মার্টিন পৌঁছাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে পর্যটকেরা কিছুই ঘুরে দেখতে পারবেন না। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি ব্যবসার জন্যও তা অলাভজনক। এ কারণেই অনেক পর্যটক সেন্ট মার্টিন যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।

হোসাইন ইসলাম আরও বলেন, রাতযাপন করার সুযোগ না থাকলে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন মৌসুম জমে না। পর্যটকেরা রাতের সৈকত দেখতে চান, ঢেউয়ের শব্দ শুনতে চান। সেটাই তো সেন্ট মার্টিনের আসল আকর্ষণ।

পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে। এ লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনসেন্ট মার্টিনে নিষেধাজ্ঞা উঠছে কাল, তবে জাহাজ চলবে কি৩১ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ