সপ্তাহে ৮০ ঘণ্টা কাজ করেছিলেন বিল গেটস
Published: 5th, February 2025 GMT
মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও বিশিষ্ট মার্কিন ব্যবসায়ী বিল গেটস শুরুর দিকে সপ্তাহে ৮০ ঘণ্টা কাজ করেছিলেন। সে সময় একদম প্রেমিকাবিহীন ছিলেন তিনি। কাজ ছাড়া বাইরের জগতের সঙ্গেও যোগাযোগবিচ্ছিন্ন করেছিলেন তিনি। এই ত্যাগর পরই প্রতিষ্ঠিত হয় মাইক্রোসফট।
সম্প্রতি ‘সোর্স কোড: মাই বিগিনিংস’ শিরোনামে বিল গেটসের স্মৃতিকথামূলক একটি বই প্রকাশিত হয়েছে। ওই বইয়েই তিনি নিজের জীবন ও কাজ সম্পর্কে অনেক তথ্য জানিয়েছেন।
সোর্স কোডে গেটস পল অ্যালেন নামে একজনের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতের বর্ণনা দিয়েছেন। সপ্তম গ্রেডে থাকার সময় অ্যালেনের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। পরে অ্যালেনও মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠা হয়েছিলেন।
বইয়ে গেটস বলেছেন, অ্যালেনের কৌতূহল এবং বুদ্ধিমত্তা তাঁর ওপর গভীর প্রভাব ফেলেছিল। গেটসের চেয়ে দুই বছরের বড় অ্যালেন। তাঁদের মধ্যে বিরক্তি, ক্রোধ ও প্রতিযোগিতা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁদের বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল গভীর। এ কারণে মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠার জন্য দুজনই একসঙ্গে কাজ করে গেছেন।
বিল গেটস বলেছেন, ‘মাঝেমধ্যে আমাদের তর্ক থেকেই সেরা আইডিয়াটা বেরিয়ে এসেছে। তাই আমাদের সম্পর্কটা ছিল দারুণ। কিন্তু সত্য এই যে সব সম্পর্কেই উত্থান-পতন থাকে।’
আরও পড়ুনভারতে সপ্তাহে ৯০ ঘণ্টা কাজের পরামর্শ, চলছে তর্কবিতর্ক১৩ জানুয়ারি ২০২৫কিশোর বয়স থেকে শুরু করে ২০ বছর বয়স পর্যন্ত গেটস ও অ্যালেন অবিচ্ছেদ্য ছিলেন। তবে অ্যালেন ব্যক্তিগত কম্পিউটিংয়ে সফটওয়্যারের সম্ভাব্যতা নিয়ে জনপ্রিয় ইলেকট্রনিকস সাময়িকীর একটি নিবন্ধ দেখানোর পর বিল গেটস মাত্র ১৯ বছর বয়সে দুর্দান্ত সিদ্ধান্তটি নিয়েছিলেন। যদিও হার্ভার্ড দর্শন ও অর্থনীতিতে গেটসের বিস্তৃত ধারণাকে প্রভাবিত করেছিল, তবে এটি তাঁর উদ্যোক্তা উদ্যোগের অনুপ্রেরণার উত্স ছিল না।
সোর্স কোডে গেটস লিখেছেন, ‘পল ও আমি শীর্ষস্থানীয় পিসি সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান তৈরির ভাবনায় সম্পূর্ণভাবে একত্রিত ছিলাম।’
বিল গেটস লিখেছেন, ‘আমরা লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিলাম। কিন্তু ১৯৭৬ সালের শেষের দিকে আমার কাছে স্পষ্ট হলো যে লক্ষ্যে পৌঁছানোর উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং দ্রুততম হওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা তাঁর চেয়ে আমার মধ্যে শক্তিশালী ছিল। মাইক্রোসফটের জন্য আমি যে দায়িত্ববোধ অনুভব করেছি, তার জন্য আমি কাজ ছাড়া বাইরের যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছিলাম। কোনো প্রেমিকা ছিল না, কোনো শখ ছিল না। আমার সামাজিক জীবন পল, রিক এবং আমরা যাঁরা একসঙ্গে কাজ করেছি, তাঁদের ঘিরেই ছিল। এগিয়ে থাকার এটাই একমাত্র উপায় ছিল। একই ধরনের মানসিকতা অন্যদের থেকেও আশা করেছি। কারণ, আমাদের সামনে বিশাল সুযোগ ছিল। কেন আমরা সপ্তাহে ৮০ ঘণ্টা কাজ করব না? হ্যাঁ, এটি ক্লান্তিকর ছিল, তবে আনন্দদায়কও ছিল।’
এদিকে সম্প্রতি ভারতের শিল্পপতিরা কর্মীদের আরও বেশি করে কাজ করার পরামর্শ দিচ্ছেন। সম্প্রতি সপ্তাহে ৯০ ঘণ্টা কাজ করা উচিত বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন এলঅ্যান্ডটির চেয়ারম্যান এস এন সুব্রহ্মণ্যন। এ নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক ও সমালোচনা।
আরও পড়ুনইন্দোনেশিয়ায় ৪ দিনের অফিস, ৩ দিন ছুটি, মাসে দুই সপ্তাহে এ সুযোগ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব ল গ টস ক জ কর কর ছ ল
এছাড়াও পড়ুন:
দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে ব্যবসা সম্প্রসারণ ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য ডেস্ক চালু করল বেসিস
বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ কোরিয়ার সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য জোরদার, ব্যবসা সম্প্রসারণ, বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং ব্যবসায়িক সহযোগিতা আরও বাড়াতে কোরিয়া ডেস্ক চালু করেছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)। আজ মঙ্গলবার বেসিস মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বেসিস-কোরিয়া ডেস্কের উদ্বোধন করা হয়। এর আগে আমেরিকা ও জাপান ডেস্কও চালু করেছে বেসিস।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দক্ষিণ কোরিয়া উদ্ভাবনমুখী ও প্রযুক্তিনির্ভর অর্থনীতির দেশ। আর তাই দেশটিতে বাংলাদেশের আইসিটি খাতের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। কোরিয়া ডেস্কের মাধ্যমে বাংলাদেশের সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানগুলো সহজেই দক্ষিণ কোরিয়ার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কার্যকর অংশীদারত্ব গড়ে তোলার সুযোগ পাবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী।
সম্মানিত অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং সিক, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. তৈয়বুর রহমান, কোরিয়া ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (কোইকা) কান্ট্রি ডিরেক্টর কিম তায়ইয়োং, কোরিয়ান কমিউনিটি ইন বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ইউ ইয়ং ওহ, বাংলাদেশ-কোরিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (কেবিসিসিআই) সভাপতি শাহাব উদ্দিন খান ও বেসিস কোরিয়া ডেস্কের চেয়ারম্যান এডওয়ার্ড কিম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বেসিস সহায়ক কমিটির সদস্য (প্রশাসন) মো. ইমরুল কায়েস।
শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, দক্ষিণ কোরিয়ার ট্রিলিয়ন ডলারের প্রযুক্তিনির্ভর অর্থনীতি ও শক্তিশালী ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচার (ডিপিআই) কৌশলগত সহযোগিতার জন্য একটি আদর্শ মডেল তৈরি করেছে। বাংলাদেশ দক্ষিণ কোরিয়ার উদ্ভাবনী প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সমানতালে এগিয়ে যেতে প্রস্তুত। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বেসিস কোরিয়া ডেস্কের মাধ্যমে উভয় দেশ একসঙ্গে ডিজিটাল অর্থনীতির বিশাল সুযোগ কাজে লাগাতে পারবে, যা পারস্পরিক প্রবৃদ্ধি ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করবে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং সিক বলেন, ‘বেসিস-কোরিয়া ডেস্ক আইসিটি সেক্টরে বাংলাদেশ ও কোরিয়ার মধ্যে ক্রমবর্ধমান সমন্বয়ের একটি মাইলফলক। এই উদ্যোগ দুই দেশের তথ্যপ্রযুক্তি এবং সফটওয়্যার কোম্পানিগুলোর মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য জোরদারকরণ ও ব্যবসা সম্প্রসারণ এবং ব্যবসায়িক সহযোগিতা জোরদার করতে অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে বলে আমি আত্মবিশ্বাসী।
বেসিস কোরিয়া ডেস্কের চেয়ারম্যান এডওয়ার্ড কিম বলেন বেসিস কোরিয়া ডেস্ক বাংলাদেশি এবং কোরিয়ার প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে কৌশলগত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করবে। বেসিস কোরিয়া ডেস্কের যাত্রা বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে শক্তিশালী করতে এবং বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশকে তথ্যপ্রযুক্তির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করতে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক।