মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও বিশিষ্ট মার্কিন ব্যবসায়ী বিল গেটস শুরুর দিকে সপ্তাহে ৮০ ঘণ্টা কাজ করেছিলেন। সে সময় একদম প্রেমিকাবিহীন ছিলেন তিনি। কাজ ছাড়া বাইরের জগতের সঙ্গেও যোগাযোগবিচ্ছিন্ন করেছিলেন তিনি। এই ত্যাগর পরই প্রতিষ্ঠিত হয় মাইক্রোসফট।

সম্প্রতি ‘সোর্স কোড: মাই বিগিনিংস’ শিরোনামে বিল গেটসের স্মৃতিকথামূলক একটি বই প্রকাশিত হয়েছে। ওই বইয়েই তিনি নিজের জীবন ও কাজ সম্পর্কে অনেক তথ্য জানিয়েছেন।

সোর্স কোডে গেটস পল অ্যালেন নামে একজনের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতের বর্ণনা দিয়েছেন। সপ্তম গ্রেডে থাকার সময় অ্যালেনের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। পরে অ্যালেনও মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠা হয়েছিলেন।

বইয়ে গেটস বলেছেন, অ্যালেনের কৌতূহল এবং বুদ্ধিমত্তা তাঁর ওপর গভীর প্রভাব ফেলেছিল। গেটসের চেয়ে দুই বছরের বড় অ্যালেন। তাঁদের মধ্যে বিরক্তি, ক্রোধ ও প্রতিযোগিতা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁদের বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল গভীর। এ কারণে মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠার জন্য দুজনই একসঙ্গে কাজ করে গেছেন।

বিল গেটস বলেছেন, ‘মাঝেমধ্যে আমাদের তর্ক থেকেই সেরা আইডিয়াটা বেরিয়ে এসেছে। তাই আমাদের সম্পর্কটা ছিল দারুণ। কিন্তু সত্য এই যে সব সম্পর্কেই উত্থান-পতন থাকে।’

আরও পড়ুনভারতে সপ্তাহে ৯০ ঘণ্টা কাজের পরামর্শ, চলছে তর্কবিতর্ক১৩ জানুয়ারি ২০২৫

কিশোর বয়স থেকে শুরু করে ২০ বছর বয়স পর্যন্ত গেটস ও অ্যালেন অবিচ্ছেদ্য ছিলেন। তবে অ্যালেন ব্যক্তিগত কম্পিউটিংয়ে সফটওয়্যারের সম্ভাব্যতা নিয়ে জনপ্রিয় ইলেকট্রনিকস সাময়িকীর একটি নিবন্ধ দেখানোর পর বিল গেটস মাত্র ১৯ বছর বয়সে দুর্দান্ত সিদ্ধান্তটি নিয়েছিলেন। যদিও হার্ভার্ড দর্শন ও অর্থনীতিতে গেটসের বিস্তৃত ধারণাকে প্রভাবিত করেছিল, তবে এটি তাঁর উদ্যোক্তা উদ্যোগের অনুপ্রেরণার উত্স ছিল না।

সোর্স কোডে গেটস লিখেছেন, ‘পল ও আমি শীর্ষস্থানীয় পিসি সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান তৈরির ভাবনায় সম্পূর্ণভাবে একত্রিত ছিলাম।’

বিল গেটস লিখেছেন, ‘আমরা লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিলাম। কিন্তু ১৯৭৬ সালের শেষের দিকে আমার কাছে স্পষ্ট হলো যে লক্ষ্যে পৌঁছানোর উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং দ্রুততম হওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা তাঁর চেয়ে আমার মধ্যে শক্তিশালী ছিল। মাইক্রোসফটের জন্য আমি যে দায়িত্ববোধ অনুভব করেছি, তার জন্য আমি কাজ ছাড়া বাইরের যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছিলাম। কোনো প্রেমিকা ছিল না, কোনো শখ ছিল না। আমার সামাজিক জীবন পল, রিক এবং আমরা যাঁরা একসঙ্গে কাজ করেছি, তাঁদের ঘিরেই ছিল। এগিয়ে থাকার এটাই একমাত্র উপায় ছিল। একই ধরনের মানসিকতা অন্যদের থেকেও আশা করেছি। কারণ, আমাদের সামনে বিশাল সুযোগ ছিল। কেন আমরা সপ্তাহে ৮০ ঘণ্টা কাজ করব না? হ্যাঁ, এটি ক্লান্তিকর ছিল, তবে আনন্দদায়কও ছিল।’

এদিকে সম্প্রতি ভারতের শিল্পপতিরা কর্মীদের আরও বেশি করে কাজ করার পরামর্শ দিচ্ছেন। সম্প্রতি সপ্তাহে ৯০ ঘণ্টা কাজ করা উচিত বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন এলঅ্যান্ডটির চেয়ারম্যান এস এন সুব্রহ্মণ্যন। এ নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক ও সমালোচনা।

আরও পড়ুনইন্দোনেশিয়ায় ৪ দিনের অফিস, ৩ দিন ছুটি, মাসে দুই সপ্তাহে এ সুযোগ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব ল গ টস ক জ কর কর ছ ল

এছাড়াও পড়ুন:

বাবুডাইং আলোর পাঠশালা পরিদর্শন করলেন দুই বিদেশি পর্যটক

‘এটি খুবই আনন্দায়ক খবর যে এই স্কুলে আদিবাসী ও বাঙালি শিক্ষার্থীরা একসঙ্গেই বসে শান্তিপূর্ণভাবে পাঠ গ্রহণ করে। যেখানে ইসলাম-হিন্দু-খ্রিষ্টধর্মের শিক্ষার্থীরাও একই আসনে বসে পাঠ নিচ্ছে। সম্প্রীতি-ভালোবাসার এ দৃশ্য আমাদের বিমোহিত করেছে।’

আজ সোমবার দুপুরে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় প্রথম আলো ট্রাস্ট পরিচালিত বাবুডাইং আলোর পাঠশালা পরিদর্শনে এসে জার্মান নাগরিক অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক মাথিয়াস রিচার্ড এ মন্তব্য করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন সুইজারল্যান্ডের নাগরিক অবসরপ্রাপ্ত রসায়নবিদ সিলভিয়া মাউরিজিও। ‘দেশ ঘুরি’ নামের একটি ট্যুরিস্ট সংস্থার মাধ্যমে তাঁরা এ বিদ্যালয় পরিদর্শনে আসেন।

বেলা সাড়ে ১১টায় তাঁরা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে উপস্থিত হলে ফুলের তোড়া ও মালা দিয়ে শুভেচ্ছা জানায় শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাঁদের বিভিন্ন শ্রেণিকক্ষ ঘুরিয়ে দেখান প্রধান শিক্ষক আলী উজ্জামান নূর। তাঁরা শ্রেণিকক্ষগুলোতে গিয়ে পাঠ উপস্থাপন দেখেন। কথা বলেন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। শিক্ষার্থীরাও স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাঁদের সঙ্গে ভাববিনিময় করে।

এ সময় দুই পর্যটক জানতে পারেন, এ বিদ্যালয়ে ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ও বাঙালি শিশুরা একসঙ্গে পড়াশোনা করে। ইসলাম-হিন্দু-খ্রিষ্টধর্মের শিক্ষার্থীরা নিজেদের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ না করে একবেঞ্চে বসে পাঠ গ্রহণ করে। বিষয়টি জানতে পেরে তাঁরা খুবই খুশি হন।

চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী মাসুমা খাতুন দুজনকে একটি গান গেয়ে শোনায়। বিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক দলের শিক্ষার্থীরা তাঁদের সামনে ঐতিহ্যবাহী নাচ-গান প্রদর্শন করে। সিলভিয়াও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নাচে অংশ নেন। সৃষ্টি হয় একটি আনন্দদায়ক পরিবেশের। এ সময় বাঙালি ও কোল ক্ষুদ্র জাতিসত্তার শিক্ষার্থীদের মধ্যে সম্প্রীতি-ভালোবাসা ও বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ দেখে খুশি হন।

বিদেশি দুই পর্যটকের সামনে আলোর স্কুলের শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাবুডাইং আলোর পাঠশালা পরিদর্শন করলেন দুই বিদেশি পর্যটক
  • সব সিম লক রেখে কিস্তিতে স্মার্টফোন বিক্রির সুযোগ পাচ্ছে অপারেটররা
  • আগামী বছর নির্বাচনের পর বিশ্ব ইজতেমা: ধর্ম উপদেষ্টা
  • শাহরুখের ব্যাপারে সাবধান করলেন জুহি চাওলা
  • শাহরুখের অজানা এই সাত তথ্য জানেন?