আওয়ামী লীগের প্রচারপত্র বিলি: রাজশাহীর সেই যুব মহিলা লীগ নেত্রীর বাড়িতে ভাঙচুর
Published: 5th, February 2025 GMT
রাজশাহীর পুঠিয়ায় যুব মহিলা লীগ নেত্রীর আওয়ামী লীগের প্রচারপত্র বিলির জেরে স্বামীকে মারধর করে পুলিশে সোপর্দের পর বাড়িতেও ভাঙচুর করা হয়েছে। উপজেলার পচামাড়িয়া গ্রামে ভাঙচুর হওয়া বাড়িটি বর্তমানে মানুষশূন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
গত সোমবার পুঠিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি মৌসুমী রহমানের লিফলেট বিতরণের ছবি আওয়ামী লীগের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে পোস্ট করা হয়। এরপর গতকাল মঙ্গলবার সকালে বাড়ি থেকে খানিকটা দূরে একটি কালভার্টের ওপর তাঁর স্বামী অহিদুর রহমানকে (৪৫) মারধরের পর পুলিশে সোপর্দ করা হয়। বিকেলে বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। অহিদুর আওয়ামী লীগের কোনো পদে নেই। তাঁর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না থাকায় গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর তিনি নিজ বাড়িতে থেকে স্বাভাবিকভাবে চলাফেলা করছিলেন। পরে তাঁকে নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করে পুঠিয়া থানার পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকেলে পুঠিয়া যুবদলের একাংশ আওয়ামী লীগের প্রচারপত্র বিতরণের বিরুদ্ধে ‘সাঁড়াশি অভিযান’ কর্মসূচি করে। এ কর্মসূচির নাম দেওয়া হয় ‘রোড মার্চ পুঠিয়া টু পচামাড়িয়া’। উপজেলা যুবদলের সাবেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক দেলোয়ার সরকার আল আমীন তাঁর ফেসবুকের এক পোস্টে এই সাঁড়াশি অভিযানে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুনস্ত্রী আওয়ামী লীগের প্রচারপত্র বিতরণ করায় স্বামীকে মারধর, তারপর গ্রেপ্তার০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫পুঠিয়া উপজেলার সদর থেকে ১৬ কিলোমিটার উত্তরে উপজেলার শিলমাড়িয়া ইউনিয়নের পচামাড়িয়া গ্রাম। এ গ্রামের ছোট্ট বাজারের পাশেই মৌসুমী রহমানের বাড়ি। আজ বুধবার দুপুরে পচামাড়িয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, মৌসুমী রহমানে বাড়িতে নতুন তালা লাগানো হয়েছে। স্থানীয় লোকজন বলতে পারেননি কে এ তালা লাগিয়েছে। বাড়ির টিনের দরজায় কুড়াল দিয়ে কোপ দেওয়ার চিহ্ন রয়েছে। জানালার থাই গ্লাস ভেঙে বাইরে পড়ে আছে। জানালা দিয়ে ভেতরে তাকিয়ে দেখা যায়, ঘরের ভাঙা সব জিনিসপত্র তছনছ অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
বাড়ির সামনে একটি দোকান রয়েছেন। কারা এ হামলা চালিয়েছে—জানতে চাইলে দোকানি কিছুই বলতে পারবেন না বলে জানান। এ রকম আরও কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি জানার চেষ্টা করা হয়, কিন্তু কেউ ভয়ে মুখ খোলেননি। একজন প্রতিবন্ধী নারী বলেন, ‘মোটরসাইকেলে একদল লোক আইসি ভাঙচুর কইরি গিচে। বুইলি গিচে এবির আইসি পুড়াই দিবি।’ মৌসুমী রহমান কোথায় আছেন কেউ বলতে পারেননি। তাঁর মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে বন্ধ পাওয়া যায়।
সাঁড়াশি অভিযান কর্মসূচির পর মৌসুমী রহমানের বাড়ি ভাঙচুরের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা যুবদলের সাবেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক দেলোয়ার সরকার প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা ২০০ থেকে ২৫০টি মোটরসাইকেল নিয়ে অভিযানে গিয়েছিলেন, কিন্তু তাঁরা মোটরসাইকেল থেকে নামেননি এবং মৌসুমী রহমানের বাড়িও চিনেন না বলে জানান।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপজ ল র রহম ন র আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
অফিসে আপনি কি ১১ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন
প্ল্যান ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিয়ে চলছে আলোচনা। সেখানে দুই হাজার ফুলটাইম কর্মজীবীর ওপর একটা জরিপ পরিচালনা করা হয়। পেশাগত কাজ বা চাপের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক নিয়ে পরিচালিত গবেষণাটি থেকে পাওয়া গেছে চমকপ্রদ তথ্য।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যাঁরা কর্মক্ষেত্রে ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি কাজ করেন, তাঁদের খাদ্যাভ্যাস তুলনামূলকভাবে অস্বাস্থ্যকর, তাঁরা অন্যদের তুলনায় মানসিক চাপে ভোগেন বেশি। ঠিকমতো পানি খাওয়ার প্রবণতা কম। পরিবার, প্রকৃতি ও পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানোর প্রবণতাও কম। কম ঘুমান। আর যেকোনো মানসিক আঘাত থেকে সেরে ওঠার পর্যাপ্ত সময় বা সুযোগ পান না। এই মানুষেরাই বেশি হতাশায় ভোগেন।
শুধু তা-ই নয়, দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া এবং হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের মতো কার্ডিওভাস্কুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। যাঁরা ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় অফিস করেন, তাঁদের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সংখ্যাও অনেক।
আরও পড়ুন২৫ বছর ধরে অফিসে যাননি তিনি১৩ মার্চ ২০২৫যদি ১১ ঘণ্টা কর্মক্ষেত্রে থাকতেই হয়, তাহলে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেনরাতে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে। তাতে শরীর ও মস্তিষ্ক দিনের শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের ধকল কাটিয়ে ওঠার সুযোগ পাবে।
কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিরতি নিন। সবুজের দিকে তাকান। ডেস্কে গাছ রাখতে পারেন। উঠে একটু হাঁটুন। ব্যায়াম করুন। সহকর্মীর সঙ্গে চা খেতে খেতে গল্প করুন। গবেষণা জানাচ্ছে, ছোট ছোট বিরতি কাজে মনোযোগ পুনঃস্থাপন করতে সাহায্য করে এবং কাজের গুণমান বাড়ায়।
দুপুরে খাওয়ার পর একটা ন্যাপ নিতে পারেন।
২ লিটারের একটা বোতলে পানি রাখবেন। প্রতিদিন ১ বোতল পানি অবশ্যই শেষ করবেন। তা ছাড়া পানি, শরবত, জুস, ডাবের পানি, তরমুজ, শসা, আনারস ইত্যাদি খাবেন। হাইড্রেটেড থাকলে এনার্জি ধরে রেখে কাজ করা সহজ হয়।
প্রক্রিয়াজাত খাবার, কার্বোনেটেড ড্রিংক, চিনিযুক্ত খাবার বাদ দিন। এসব কেবল আপনার ক্লান্তি বাড়াবে।
আর সম্ভব হলে কর্মক্ষেত্রে কথা বলে আপনার কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টায় নিয়ে আসতে পারলে তো কথাই নেই।
সূত্র: এনবিসি নিউজ
আরও পড়ুনঅফিসের বাড়তি কাজকে যেভাবে ‘না’ বলবেন১৩ মার্চ ২০২৫