ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগ একাডেমিক অনুশীলনকে বৃহত্তর জনসাংস্কৃতিক পরিসরে উপস্থাপনের ধারাবাহিকতায় এবার মঞ্চস্থ করতে যাচ্ছে সুফি জীবনদর্শনভিত্তিক নতুন নাটক ‘পাখিদের বিধানসভা’। নাটকটি রচনা করেছেন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শাহমান মৈশান। পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় রয়েছেন অধ্যাপক আহমেদুল কবির। স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের অংশ হিসেবে ১৪ শিক্ষার্থী এ নাটকে অভিনয়ে অংশগ্রহণ করেছেন। আজ শুক্রবার থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নাটকটির ৫টি প্রদর্শনী হবে।

৭, ৯ ও ১০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৭টায় এবং ৮ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৪টা ও সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে মঞ্চস্থ হবে নাটকটি। আজ সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে প্রধান অতিথি হিসেবে এই সুফি নাট্যোৎসব উদ্বোধন করবেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
ইরানের প্রখ্যাত সুফি কবি ও দার্শনিক ফরিদ উদ্দিন আত্তার রচিত ধ্রুপদি কবিতা ‘মানতিকুত তোয়ায়ের’ অবলম্বনে রচিত এ নাটকের প্রযোজনায় গবেষণা ও আর্থিক সহযোগিতা দিয়েছে চট্টগ্রামভিত্তিক সুফিদর্শন গবেষণাকেন্দ্র দারুল ইরফান রিসার্চ ইনস্টিটিউট।

নাট্যকার শাহমান মৈশান বলেন, ‘এ নাটক বস্তুত ধ্রুপদি সুফি সাহিত্যের সঙ্গে আমার নিজের সময়ের ঘনিষ্ঠতা সন্ধানের একটি নান্দনিক-রাজনৈতিক পদ্ধতির ফলিত রূপ। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসের আগুনলাল সময়ের জঠরে বাস করে লিখেছি পাখিদের বিধানসভা। ফলে এ নাটক হয়ে উঠেছে আমাদের সময়ের সম্মিলিত রুহের শিহরণকম্পিত আধ্যাত্মিকতার এক রাজনৈতিক নাটলিপি।’

নির্দেশক আহমেদুল কবিরের ভাষ্যে, ‘একজন নির্দেশক হিসেবে সুফিবাদ নিয়ে নাটক নির্মাণ ছিল আমার জন্য সৃজনশীলতার এক অনন্য সুযোগ। নাটকটি সুফিবাদ ও আত্মান্বেষণের গভীর দর্শনকে ধারণ করে।

আরও পড়ুনজুলাই গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে নাটক ‘হাহাকার’০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

এর মহড়াপ্রক্রিয়া তাই একটি গতিশীল ও অনন্য অভিজ্ঞতার মাধ্যমে গড়ে ওঠে, যা কেবল নাটক নির্মাণের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; বরং এটি শিক্ষার্থীদের অভিজ্ঞতা, আত্মান্বেষণ এবং আধ্যাত্মিক বোঝাপড়ার এক প্রাণবন্ত যাত্রা। নাটকের মাধ্যমে আমরা এক বিশেষ প্রশ্নের মুখোমুখি হই, আমরা কি যথার্থই জানি যে আমাদের জীবনের নিহিত অর্থ কী আর কীভাবেই–বা আমরা সেই অর্থ সন্ধান করতে পারি? এ নাটক সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে আমাদের অনুপ্রাণিত করে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন টকট

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলে ইরানের নতুন হামলায় নিহত বেড়ে ৫, আহত ২৯

ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে অন্তত চার জায়গায় হামলা চালিয়েছে ইরান। এ হামলায় তিনজন নিহত হয় বলে জানায় জেরুজালেম পোস্ট। বিবিসি আরও দুইজন নিহতের খবর দেয়। এরপর আরেকজনের ফলে নতুন হামলায় ইসরায়েলে নিহত বেড়ে পাঁচজনে পৌঁছাল।

আজ সোমবার আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের অ্যাম্বুলেন্স ও ব্লাড ব্যাংক সংস্থাগুলো বলছে, এসব হামলায় ২৯ জন আহত হয়েছেন।

বিবিসির খবরে বলা হয়, ইসরায়েলের জাতীয় জরুরি পরিষেবার প্রধান ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম জানান, মধ্য ইসরায়েলজুড়ে ইরানের হামলায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুইজন নারী, একজন পুরুষ। 

এর আগে সিএনএন ইসরায়েলের ১৫ জন নিহত হওয়ার খবর দেয়। ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কানের খবর বলছে, ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে হামলায় একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এছাড়াও বন্দরনগরী হাইফায় অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন। এছাড়াও সেখান আরও তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন।

এর আগে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছিল, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।

আজ সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।

সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।

ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।

সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’

তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।

এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের তিন শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার ইসরায়েল সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এছাড়া ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর।

এদিকে ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এছাড়া সাতজন এখনও নিখোঁজ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন জরুরি সেবাদানকারীরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ