সুরা কাওসার  (প্রাচুর্য) পবিত্র কোরআনের ১০৮তম সুরা। মক্কায় অবতীর্ণ। ১ রুকু, ৩ আয়াত। অপুত্রক মুহাম্মদ (সা.)-কে নাম নিশানাহীন হতভাগ্য বলে তাঁর শত্রুরা তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রূপ করলে আল্লাহ বলেন যে তাঁকে প্রচুর কল্যাণ দান করা হয়েছে এবং তিনি তাঁর জন্য তাঁর প্রভুর উদ্দেশে নামাজ পড়ুন। প্রকৃতপক্ষে তাঁর শত্রুরাই নাম নিশানাহীন হতভাগ্য।

মুহাম্মদ (সা.

) এর শিশুপুত্র মারা যাওয়ার পর কাফেররা তাঁর ওই কষ্টকর সময়ে আনন্দ করেছিল এবং বলাবলি করছিল, মুহাম্মদ (সা.) এবার নির্বংশ হয়ে গেল। সাধারণত পুত্রের মাধ্যমে বংশধারার সম্মান, ঐতিহ্য চলমান থাকে। মুহাম্মদ (সা.) এর ছেলেসন্তান মারা যাওয়ার পর তারা বলে বেড়াচ্ছিল যে, মুহাম্মদ (সা.) এর নাম, বংশ, পারিবারিক ঐতিহ্য আর টিকে থাকবে না তাঁর মৃত্যুর পর। এই পরিস্থিতিতে আল্লাহ এই সুরা নাজিল করেন।

আরও পড়ুনএক বাগানের মালিকের ঘটনা১৩ জানুয়ারি ২০২৪

সুরার সারসংক্ষেপ:

সুরা কাওসারের প্রথম  আয়াতে ‘আমি তো তোমাকে কাউসার (ইহকাল ও পরকালের কল্যাণ) দান করেছি।’ আল্লাহ  হজরত মুহাম্মদ (সা.) কে কাওসার দান করেছেন।

পুত্র সন্তান মারা যাওয়ায় তিনি যে দু:খ পেয়েছিলেন, সান্ত্বনা স্বরূপ আল্লাহ তাঁকে পুরস্কার দানের মাধ্যমে খুশি করে দেন। কাওসার শব্দের অর্থ প্রাচুর্য।  এটি দুনিয়া ও আখিরাতে বিশেষভাবে হাউসে কাওসার বোঝায়, যা আল্লাহ তাঁকে জান্নাতে দান করবেন। আল্লাহ তার অনুগ্রহ ও উপহার দেওয়ার কথা বলার পর দ্বিতীয় আয়াতে বলেছেন ‘সুতরাং তুমি তোমার প্রতিপালকের উদ্দেশে নামাজ পড়ো ও কোরবানি দাও।’

নামাজ পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। নামাজ হলো শুকরিয়া আদায় ও প্রতিদানের সর্বশ্রেষ্ঠ মাধ্যম। এই নামাজ পড়তে হবে শুধুমাত্র আল্লাহরই জন্য।  লোক দেখানোর জন্য নয়। এর সঙ্গে কোরবানি করার কথাও তিনি বলেছেন।

তৃতীয় ও শেষ আয়াতে বলা হয়েছে ‘যে তোমার দুশমন সে-ই তো নির্বংশ।’ আল্লাহ নবী মুহাম্মদ (সা.) এর শত্রুদের কথা বলেছেন। মূলত তারাই সব ধরনের ভালো থেকে বঞ্চিত;  দুনিয়ায় ও আখিরাতেও।

আরও পড়ুনসুরা বুরুজে আছে এক বুদ্ধিমান বালকের ঘটনা১২ জানুয়ারি ২০২৪

সুরা কাওসারে তিনটি বিষয়ে আলোচনা

রাসুল (সা.) ওপর আল্লাহর অনুগ্রহ হচ্ছে, তিনি তাঁকে কাওসার প্রদান করেছেন। কাওসার জান্নাতের একটি নহর। কেয়ামতের দিন রাসুল (সা) উম্মতকে তা থেকে পান করাবেন। কাওসারের  অর্থ অনেক।  কল্যাণ, নবুওয়াত, কোরআন, হেকমত, ইলম, সাফায়ত, মাকামে মাহমুদ, মুজিজাকেও কাওসার বলা হয়।

রাসুল (সা.)  কে  নির্দেশ দেওয়া হয় যে, কাওসারের  মতো নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করার জন্য নামাজের প্রতি যত্নবান হতে হবে। আল্লাহর জন্য কোরবানি করতে হবে। রাসুল (সা.) কে এ সুসংবাদ শোনানো হয় যে, শত্রুরা অপদস্থ হবে। তাদের নাম-নিশানা মিটে যাবে। আর এমনটাই হয়েছিল। (সুরা কাওসার, আয়াত ১–৩, কোরানশরিফ: সরল বঙ্গানুবাদ, অনুবাদ: মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান, প্রথমা প্রকাশন)

আরও পড়ুনইয়াজুজ–মাজুজের কাহিনি১২ জানুয়ারি ২০২৪

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আল ল হ র জন য দ ন কর

এছাড়াও পড়ুন:

গাজীপুরে এটিএম বুথে ধর্ষণের অভিযোগ, অভিযুক্ত পলাতক

গাজীপুরের শ্রীপুরে অধিক বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে এক নারী পোশাক শ্রমিককে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে একটি এটিএম বুথের নিরাপত্তা প্রহরীর বিরুদ্ধে।

সোমবার (১৬ জুন) সকালে ওই নারী শ্রমিকের বাবা বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। 

রবিবার (১৫ জুন) সকালে শ্রীপুর উপজেলার মুলাইদ গ্রামের এমসি বাজার এলাকায় তালহা স্পিনিং মিল সংলগ্ন একটি ব্যাংকের এটিএম বুথে এই ধর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ ।

ভুক্তভোগী নারী স্থানীয় একটি কারখানায় ৬ হাজার টাকা বেতনে কাজ করতেন। অভিযুক্ত নিরাপত্তা প্রহরী মো. লিটন (৩৫) তালহা স্পিনিং মিল সংলগ্ন বুথে দায়িত্ব পালন করতেন। 

লিটন ময়মনসিংহ জেলার পাগলা থানার ডুবাইল গ্রামের মৃত আব্দুল আউয়ালের ছেলে। বর্তমানে তিনি মুলাইদ গ্রামের আতাব উদ্দিনের বাড়িতে ভাড়া থাকেন এবং ফাস্ট সলিউশন লিমিটেড নামের একটি নিরাপত্তা নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের অধীনে চাকরি করতেন।

থানায় দায়ের করা অভিযোগ থেকে জানা যায়, এটিএম বুথে টাকা তোলার সূত্র ধরে এই নারী শ্রমিকের সঙ্গে পরিচয় হয় লিটনের। একপর্যায়ে লিটন ভুক্তভোগীকে ১২ হাজার টাকা বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে রবিবার সকালে তার বাবার মোবাইলে ফোন করে ডেকে আনেন। সকাল ৬টার দিকে বুথে গেলে লিটন তাকে ভেতরে একটি ছোট কক্ষে বসিয়ে রাখেন এবং জানান যে, নতুন চাকরির উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এসে তার সাক্ষাৎকার নেবেন।

ভিকটিমের বাবা দুইবার মেয়ে চাকরির বিষয়ে খোঁজ নিলে লিটন জানান, চিন্তার কিছু নেই, সব ঠিক আছে। তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেব। এরপর আনুমানিক সকাল ১০টার দিকে লিটন কক্ষে ঢুকে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। বাড়ি ফেরার পথে মেয়ে তার বাবাকে ঘটনাটি জানায়।

ঘটনার বিষয়ে ফাস্ট সলিউশন লিমিটেডের সুপারভাইজার মো. হানিফের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি মোবাইল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল বারিক জানান, অভিযোগ পাওয়ার পরপরই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং অভিযুক্ত লিটন পলাতক থাকায় তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে। দ্রুতই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরো জানান, ভিকটিমের স্বাস্থ্য পরীক্ষা গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সম্পন্ন করা হয়েছে।

ঢাকা/রফিক/টিপু  

সম্পর্কিত নিবন্ধ