দুই বছর আগে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ডুবে গিয়েছিল দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের বিশাল এলাকা। আকস্মিক বন্যায় তাৎক্ষণিক বিপর্যয় নেমে এসেছিল বান্দরবান শহরে। এমন কোনো সরকারি দপ্তর ছিল না, ডুবে যায়নি। সে বন্যায় বান্দরবানের জেলা সরকারি গ্রন্থাগারটি চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। বইয়ের সমৃদ্ধ সংগ্রহের গ্রন্থাগারটিতে এখন আর আগের মতো বই নেই, পাঠক সমাগমেও পড়েছে ভাটা। বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।  

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, বন্যায় কয়েক দিন পানির নিচে ছিল পাঠাগারটি। ছাদ ছুঁই ছুঁই পানিতে গ্রন্থাগারের ২৮ হাজার বইয়ের সব কটিই নষ্ট হয়ে যায়। ভয়াবহ বন্যার চিহ্ন এখনো গ্রন্থাগারের ভেতরে-বাইরে লেগে আছে। বাইরের প্রাঙ্গণে এখনো বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হয়ে যাওয়া বই এবং আসবাবের স্তূপ। দেয়ালে পানির আবছা দাগ। ভেতরের কয়েকটি তাকে ভিজে যাওয়া কিছু বই শুকিয়ে রাখা হয়েছে; কিন্তু সেগুলো এতটাই ধুলায় মলিন যে ছুঁয়ে দেখা দায়। 

এর আগে ২০১৯ সালে আরেকবার বন্যায় প্লাবিত হয় পাঠাগারটি। সেবার প্রায় ৯ হাজার বই নষ্ট হয়। এবার বাকি ২৮ হাজারের বেশি সম্পূর্ণ ভিজে নষ্ট হয়ে যায়। এখানে ১৯৮৮ সাল থেকে বাঁধাই করা দৈনিক পত্রিকা ছিল। সব কটি পত্রিকা ভিজে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। বাংলাপিডিয়া, রবীন্দ্র রচনাবলি, নজরুল রচনাবলি, মুক্তিযুদ্ধের দলিলের দুটি সেট, স্বাধীনতাযুদ্ধের দলিলের দুটি সেট পানিতে নষ্ট হয়ে যায়। এ ছাড়া অফিসের গুরুত্বপূর্ণ নথিও পানিতে তলিয়ে যায়। এখন আবার মাথা তুলে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে গ্রন্থাগারটি; কিন্তু আগের মতো সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার নেই এখন সেটি। তালিকাভুক্ত কয়েক শ পাঠক থাকলেও আগে দিনে ৩০–৪০ জন পাঠক থাকতেন। এখন নেমে এসেছে ১০ জনে। গ্রন্থাগারের সহকারী গ্রন্থাগারিক মা শৈ থুই চাক বলেন, বেশির ভাগ বই ফেলে দেওয়া হয়েছে। এখন নতুন করে আড়াই হাজারের বেশি বই এসেছে।

বান্দরবানে আগে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি ছিল। সেটিও বন্ধ হয়ে গেছে। তাই স্থানীয় পাঠকদের একমাত্র ভরসা এই পাঠাগার। একজন পাঠক জানান, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ বা সাধারণ জ্ঞানের কিংবা ইতিহাসনির্ভর বই, যা চাকরির জন্য দরকার, তা-ও পাওয়া যাচ্ছে না। রেফারেন্সের জন্য পুরোনো পত্রিকাও দরকার। কিন্তু সেগুলো নষ্ট হয়ে গেছে।

সরকারি গ্রন্থাগার হওয়ায় স্থানীয় প্রশাসনসহ জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের এখানে এগিয়ে আসা উচিত। সরকারি বরাদ্দ বাড়িয়ে আবারও গ্রন্থাগারটিকে বইসমৃদ্ধ করা হোক। একটি শহরে একটি সমৃদ্ধ পাঠাগার মানে একটি বাতিঘর। পাঠাগারচর্চার ঐতিহ্য হারিয়ে গেছেই বলা যায়। ফলে বান্দরবানের এ গ্রন্থাগারে আবারও প্রাণসঞ্চার করুন। পাঠকের সমাগমে মুখর হোক জ্ঞানচর্চার কেন্দ্রটি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব ন দরব ন বন য য় সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাইকোলজিতে প্রফেশনাল এমএস কোর্স, আবেদনের সময় বৃদ্ধি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মনোবিজ্ঞান বিভাগে ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষে প্রফেশনাল এমএস কোর্সে আবদনের সময় বাড়ানো হয়েছে। তৃতীয় ব্যাচের ভর্তি–ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের আবেদনপত্র গ্রহণ ও জমাদানের সর্বশেষ তারিখ ২২ মে ২০২৫। ভর্তি পরীক্ষা ২৩ মে ২০২৫, সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হবে। ভর্তি পরীক্ষা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগে অনুষ্ঠিত হবে।

আরও পড়ুনপ্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন এক ধাপ বাড়ানোর উদ্যোগ, ভিন্নমত শিক্ষকদের২৮ এপ্রিল ২০২৫আরও পড়ুনজাপানে উচ্চশিক্ষা: যাত্রা শুরু করবেন কোথা থেকে, কীভাবে?২৮ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ