২০২৫ সাল জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ একটি বছর। প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী যদি বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ রাখতে হয়, তবে গ্রিনহাউস গ্যাসের নিঃসরণ অবশ্যই এ বছর সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছানো আটকাতে হবে। তারপর ধীরে ধীরে তা কমাতে হবে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ বিশ্ব রেডিও দিবসের প্রতিপাদ্য হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে ‘বেতার ও জলবায়ু পরিবর্তন’।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে সামাজিক যোগাযোগের পাশাপাশি মানসম্মত বেতার এখনও বেশ জনপ্রিয়। এটি সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হিসেবেও বিবেচিত। বেতারের অর্থনৈতিক, আদর্শিক ও রাজনৈতিক স্বাধীনতায় গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান রয়েছে। এটি পরিবেশ রক্ষার ধারণা জনপ্রিয় করার পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তন এবং এর গুরুত্ব সম্পর্কে শ্রোতাদের দৃষ্টিভঙ্গি প্রভাবিত করতে সক্ষম। অন-এয়ার, লাইভ স্ট্রিম বা অন-ডিমান্ডে বেতার জনমত গঠনে বিশাল প্রভাব ফেলতে পারে।
সম্প্রতি বিজ্ঞাপন ও সরকারি তহবিলের সহায়তা না থাকায় বিশ্বব্যাপী বেতার স্টেশনগুলো আর্থিক সংকটে পড়েছে। ফলে কর্মী সংখ্যা বাধ্যতামূলকভাবে কমে গেছে। অন্যদিকে যাচাইকৃত তথ্য পাওয়াতে অন্য উৎসের ওপর নির্ভরশীলতা বেড়েছে, যা স্থানীয় বেতার স্টেশনগুলোর জন্য বিশেষভাবে ব্যয়বহুল। জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে প্রতিবেদন করার জন্য বিভিন্ন উৎস থেকে পরামর্শ ও তথ্য নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
এ ক্ষেত্রে তথ্যের উৎসের মান ও বৈচিত্র্যের প্রতি সম্প্রচারকদের মনোযোগ জরুরি। জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সংশয়বাদীদের যুক্তি খণ্ডন করা, পরিবেশ অর্থনীতির তথ্য বা পরিবেশকর্মীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ নিয়ে পদক্ষেপের অভাব কিংবা সমাধানের পথে বাধাগুলো অনুসন্ধান ইত্যাদির জন্য বিশেষ বৈচিত্র্যময় ও নির্ভরযোগ্য উৎস খুবই প্রয়োজন। জলবায়ু পরিবর্তনের বাস্তবতা এবং সম্ভাব্য সমাধান সম্পর্কে শ্রোতাদের অসীম জ্ঞান রয়েছে। বিশেষ করে গ্রামীণ মানুষ এবং আদিবাসী, যারা নির্দিষ্ট অঞ্চলে পরিবেশগত দুর্যোগের অভিজ্ঞতা মোকাবিলা করেছেন, তাদের কথা বেতারে তুলে ধরতে হবে।
স্থানীয় বেতারকেন্দ্রগুলো নিজ নিজ কমিউনিটির সঙ্গে সংযুক্ত। এগুলো বাস্তবজীবনের পরিস্থিতির ওপর গুরুত্ব আরোপ করে অনুষ্ঠান, খবর, সাক্ষাৎকার প্রকাশ করে থাকে। তাদের প্রচারণাগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দৈনন্দিন জীবনের চিত্র তুলে ধরে।
বেতারের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত নারী, শিশু এবং প্রান্তিক মানুষের গল্প বলার সুযোগ থাকে। তাদের জ্ঞান ছড়িয়ে দেওয়া এবং কাজের নতুন পদ্ধতি শেখার প্ল্যাটফর্ম হিসেবেও বেতারের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।
পরিবেশগত দুর্যোগের ক্ষেত্রে বেতার প্রায়ই জনগণের জন্য একমাত্র তথ্য ও সহায়তার উৎস হয়ে ওঠে। এর কারণ, এটি বিদ্যুৎ বা ইন্টারনেট ছাড়াও কাজ করতে পারে, একসঙ্গে অসংখ্য মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারে এবং স্যাটেলাইট সিগনালে সমস্যা থাকলেও তা প্রভাবিত হয় না। ব্রডকাস্টাররা জরুরি পরিস্থিতিতে যোগাযোগ ব্যবস্থা বজায় রাখতে পারেন বেতারের মাধ্যমে।
জলবায়ু পরিবর্তন একটি বৈশ্বিক ঘটনা হওয়ায় একই দেশের এবং অন্যান্য দেশের ব্রডকাস্টারদের সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে। এতে যে সমন্বয় সাধিত হয় তার ফলে রেডিও কাভারেজের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা এবং সরঞ্জাম আরও সমৃদ্ধ হয়। সীমান্ত পারাপার ইস্যু, আঞ্চলিক দুর্যোগ, জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত অভিবাসন এবং অন্যান্য আন্তঃসীমান্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায়ও বেতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র জন য পর ব শ জলব য
এছাড়াও পড়ুন:
‘ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার ডে রান ২০২৫’ অনুষ্ঠিত
ক্যানসার অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার ডে রান ২০২৫ পাওয়ার্ড বাই রেনাটা পিএলসি। ক্যান্সার সচেতনতা বৃদ্ধি এবং দরিদ্র ক্যান্সার রোগীদের সহায়তার উদ্দেশ্যে এ আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানের রেজিস্ট্রেশন ফি থেকে প্রাপ্ত অর্থের একটা অংশ বাংলাদেশে ক্যান্সার চিকিৎসার অন্যতম সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান আহছানিয়া মিশন ক্যান্সার অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতালের সুবিধাবঞ্চিত রোগী এবং বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের দরিদ্র, অসহায় ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা সেবায় দেওয়া হয়েছে।
অনুদান হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন- আহছানিয়া মিশনের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. গোলাম রাহমান, ঢাকা আহছানিয়া মিশনের ট্রেজারার মোহাম্মদ এম এ জলিল, বিশেষজ্ঞ ক্যান্সার চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. আবুল আহসান দিদার, ডা. ফারহানা ফেরদৌসি, বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের শিশু ক্যান্সার ও রক্তরোগ বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা. মো. বেলায়েত হোসাইন, ক্যান্সার অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশনের ফাউন্ডার ডা. মোহাম্মদ মাসুমুল হক, ও রেনাটা পিএলসির হেড অব মার্কেটিং (অনকোলজি ও হেমাটোলজি) আমীর আবদুল্লাহসহ অন্যান্যরা। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।