পোশাক কারখানার ৭০ হাজার শ্রমিককে সেবা দেবে ‘স্বাস্থ্য সাথী’
Published: 8th, February 2025 GMT
গাজীপুরের শ্রীপুরে পোশাক কারখানার কর্মীদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে ‘স্বাস্থ্য সাথী’ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে উপজেলার মাওনা উত্তর পাড়া গ্রামে নাইস ডেনিম কারখানার মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।
সাদ গ্রুপের পৃষ্ঠপোষকতায় স্বাস্থ্যসেবার এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন গ্রুপটির চেয়ারম্যান ও ইসমাইল আঞ্জুমান আরা ওয়েল ফেয়ার ট্রাস্টের চেয়ারম্যান নূরে ইয়াসমিন ফাতিমা। ‘স্বাস্থ্য সাথী’ কার্যক্রমের মাধ্যমে সাদ গ্রুপের ৭০ হাজার কর্মীকে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হবে।
উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, চিকিৎসাসেবা পাওয়া শ্রমিকদের মৌলিক অধিকার। এ কার্যক্রমের মাধ্যমে সাদ গ্রুপের ৭০ হাজার শ্রমিকের চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবার জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও ওষুধ সরবরাহ করবে কর্তৃপক্ষ। তারা জানায়, শ্রমিকদের স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশি বিমা সেবা অব্যাহত থাকবে। স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে স্থানীয় আল হেরা হাসপাতাল ও আল হেরা মেডিকেল সেন্টারের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করা হয়েছে। এ চুক্তির আওতায় শ্রমিকেরা নিয়মিত চিকিৎসাসেবা পাবেন। সেবা পেতে শ্রমিকদের প্রত্যেককে কার্ড দেওয়া হয়।
কর্তৃপক্ষ জানায়, কোনো শ্রমিক অসুস্থ হলে তাৎক্ষণিকভাবে কারখানার ভেতরে স্থাপিত প্রাথমিক চিকিৎসাকেন্দ্রে তাঁর চিকিৎসা করা হবে। এ ছাড়া তাঁর উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন হলে চুক্তিভুক্ত হাসপাতালে চিকিৎসা করা হবে। প্রয়োজনে দেশের যেকোনো হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়ে সেখানকার ব্যয়–সম্পর্কিত কাগজপত্র জমা দিয়ে খরচ উত্তোলন করা যাবে।
অনুষ্ঠানে নাইস ডেনিম কারখানার কর্মী মোছা নাসরিন আক্তার বলেন, তাঁরা এখন থেকে স্বাস্থ্যসেবার বিষয়ে আরও নিশ্চয়তা পেলেন। কারখানার আরেক কর্মী নজরুল ইসলাম বলেন, বিতরণ করা কার্ডের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা পেলে তাঁদের অতিরিক্ত আয় হবে। এ আয় পারিবারিক উন্নয়নে কাজে লাগাতে পারবেন তাঁরা।
‘স্বাস্থ্য সাথী’ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কারখানার প্রায় পাঁচ হাজার শ্রমিক উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তাঁদের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা কার্ড বিতরণ করা হয়। সাদ গ্রুপের চেয়ারম্যান নূরে ইয়াসমিন ফাতিমা উপস্থিত শ্রমিকদের উদ্দেশে বলেন, রোগ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা নিতে চলে যেতে হবে। সুস্থ থাকতে হলে পরিচ্ছন্ন থাকা ও ভালো খাবার খেতে হবে। পরিকল্পিতভাবে ও পরিমিতভাবে বেতন খরচ করলে শ্রমিকেরা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ভালো খাবার খেতে পারেন। এ ক্ষেত্রে অযাচিত খরচ পরিত্যাগ করার পরামর্শ দেন তিনি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত
নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।
কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।
১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)
আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)
ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।
৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)
ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।
৪. ঋণের মেয়াদ
কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।
৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)
শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।
৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)
ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।
৭. প্রসেসিং ফি
আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।
৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)
বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।
৯. জামানত (কোলেটারাল)
ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।
১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও
আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।