সাধারণত ১২ বছরের আগেই শিশুদের ওপর ও নিচের চোয়াল মিলিয়ে ২০টি দুধদাঁত এবং পরে ২৮টি স্থায়ী ও আরও পরে ৪টি আক্কেলদাঁত ওঠে। দাঁত ওঠার পর থেকেই সঠিক যত্ন নিলে দাঁত ও মাড়ি আজীবন সুস্থ থাকবে। তা না হলে দাঁত ও মাড়ির নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে শিশুকালে ও পরবর্তী সময়ে।

গর্ভস্থ শিশুর দাঁতের যত্ন

শুনতে অবাক লাগলেও শিশুর দাঁতের গঠনপ্রক্রিয়া শুরু হয় গর্ভধারণের প্রথম ছয় সপ্তাহ থেকে। মায়ের গর্ভকালীন অপুষ্টি, বিশেষ করে ক্যালসিয়ামের অভাব শিশুর দাঁতের গঠন দুর্বল করে ফেলে। পরে দাঁত সহজেই রোগে আক্রান্ত ও ভেঙে যায়। গর্ভকালীন কোনো ওষুধ সেবনেও চিকিৎসকের পরামর্শ খুবই জরুরি। কারণ, তা দাঁতের ক্ষতি করতে পারে।

মুখ পরিষ্কার ও দাঁত ব্রাশ

দাঁত ওঠার আগেই নবজাতকের মাড়ি ও জিব পরিষ্কার করতে হবে। পরিষ্কার সুতি কাপড় বা গজ পানিতে ভিজিয়ে পরিষ্কার করতে হবে রাতে ও সকালে।

দাঁত ওঠার পর তিন বছর থেকে সঠিকভাবে দাঁত ব্রাশ করানোর চেষ্টা করতে হবে। শিশুদের নরম টুথব্রাশ ও ফ্লোরাইডযুক্ত খুব অল্প পেস্ট দিয়ে দুই মিনিট করে সকালে খাওয়ার পর ও রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ব্রাশ করার অভ্যাস করাতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যেন পেস্ট খেয়ে না ফেলে।

খাদ্যাভ্যাস

শিশুদের ডেন্টাল ক্যারিজ বা দাঁতক্ষয়ের প্রধান কারণ মন্দ খাদ্যাভ্যাস। চিপস, কোমল পানীয়, চকলেট, মিষ্টি, চুইংগাম ও আইসক্রিম কমিয়ে মৌসুমি তাজা ফলমূল, শাকসবজি, ছোট মাছ, দুধ, কলিজা, দইসহ স্বাস্থ্যকর খাবারে অভ্যস্ত করাতে হবে। মিষ্টি খাওয়ার পর ভালোভাবে কুলি করাতে হবে। ভিটামিন সি মাড়ির স্বাস্থ্য ভালো রাখে। তাই টক ফল খাওয়ানো ভালো।

দাঁতের সৌন্দর্য

এলোমেলো বা আঁকাবাঁকা দাঁত রোধে সচেতন থাকতে হবে। দুধদাঁতের যত্ন না নিলে দাঁত এলোমেলো হতে পারে। আঙুল চোষা বা চুষনির কারণেও দাঁত উঁচু হয়ে যায়।

চেকআপ

বাচ্চাদের দাঁতের রোগ বেশি হয়। দাঁতে ব্যথা, ক্যাভিটি বা গর্ত অথবা জিবের ওপর সাদা প্রলেপ হলে কিংবা যেকোনো সমস্যায় চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর ডেন্টাল চেকআপ জরুরি।

দাঁত নড়া

দাঁত নড়া শুরু হলে বাসায় পরিষ্কার কাপড় দিয়ে আরও নাড়াতে হবে। শিশুকে আশ্বস্ত করতে হবে এটা স্বাভাবিক।

দাঁতের সঠিক ব্যবহার

● দাঁত দিয়ে চিপসের প্যাকেট খোলা, বাদাম ছেলা বা এ ধরনের কাজ করা যাবে না।

● খুব টক খেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ব্রাশ করা এবং খুব গরম ও ঠান্ডা খাবার একসঙ্গে খাওয়া যাবে না।

● ক্রিকেট খেলার সময় মাউথ গার্ড ব্যবহার করা উচিত।

●দাঁত দিয়ে নখ কাটা, কলম বা বরফ চিবানো, দাঁতে দাঁত ঘষা, এগুলো দাঁতের জন্য খারাপ।

ডা.

মো. আসাফুজ্জোহা রাজ, রাজ ডেন্টাল সেন্টার, কলাবাগান ও পান্থপথ, ঢাকা

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ষ ক র

এছাড়াও পড়ুন:

কুমিল্লায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৩৫ কিলোমিটারজুটে যানজট

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার নিমশার থেকে দাউদকান্দি পর্যন্ত প্রায় ৩৫ কিলোমিটারজুড়ে যানজট দেখা দিয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রী ও চালকেরা। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি কাভার্ড ভ্যান উল্টে যাওয়ায় আজ বৃহস্পতিবার ভোর থেকে এ যানজট দেখা দেয়। 

হাইওয়ে পুলিশ  জানায়, বৃহস্পতিবার ভোরে মহাসড়কে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার নূরীতলা এলাকায় একটি কাভার্ড ভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। ফেনী থেকে রেকার এনে কাভার্ড ভ্যানটি উদ্ধারের কাজ শুরু করে পুলিশ। 

সকাল সাড়ে ১০টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মহাসড়কে যানজট দেখা গেছে। 

ঢাকাগামী রয়েল পরিবহনের চালক রমিজ উদ্দিন বলেন, সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা করে বুড়িচংয়ের নিমশার বাজারে যানজটে এক ঘণ্টা বসে থাকতে হয়েছে। ৫ মিনিট গাড়ি চললে ২০ মিনিট বসে থাকতে হয়। এভাবে ১০টা ৪০ মিনিটে চান্দিনায় পৌঁছেছি। এ সময়ে ঢাকার কাছাকাছি থাকার কথা ছিল। 

নিমশার বাজারে আটকে থাকা প্রাইভেট কারের যাত্রী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ভোর থেকে যানজট অথচ সড়কে হাইওয়ে পুলিশ দেখছি না। 

ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রুহুল আমিন বলেন, মহাসড়কের নূরীতলা এলাকায় উল্টে কাভার্ড ভ্যানটি আড়াআড়িভাবে পড়ে ছিল। পরে ঢাকামুখী লেনের বেশ কিছু গাড়ি উল্টো পথে ঢোকায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ফেনী থেকে ক্রেন এনে গাড়িটি উদ্ধার করা হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। 

হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিওনের পুলিশ সুপার অতিরিক্ত ডিআইজি মো. খাইরুল আলম সমকালকে বলেন, দুর্ঘটনার কারণেই যানজট দেখা দিয়েছে। দুর্ঘটনা কবলিত কাভার্ড ভ্যানটি উদ্ধার করা হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ