ক্যানসার চিকিৎসায় নতুন সম্ভাবনা
Published: 9th, February 2025 GMT
প্রাণঘাতী রোগ ক্যানসারের বিস্তার ঠেকানোর কৌশল আবিষ্কার করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার বিজ্ঞানীরা। বিশেষ এ কৌশলের মাধ্যমে কোষের আণবিক স্তরকে সক্রিয় করে ক্যানসার আক্রান্ত কোষের বিকাশ থামানোর পাশাপাশি আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছেন তাঁরা। এ বিষয়ে ক্যানসার বিশেষজ্ঞ টিফানি ট্রোসো-স্যান্ডোভাল বলেন, এই কৌশল ক্যানসার আক্রান্ত কোষকে নির্মূল করার পরিবর্তে নতুন কৌশলে কাজ করে। নতুন এই কৌশলকে পানি ফোটানোর সঙ্গে তুলনা করা যায়। ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় একটি সংক্ষিপ্ত মুহূর্ত আছে, যখন পানি সম্পূর্ণ তরল বা সম্পূর্ণ বাষ্প হয় না। একইভাবে ক্যানসার বিকাশে একটি সংক্ষিপ্ত পর্যায় রয়েছে, যেখানে কোষ সুস্থ ও ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার মুহূর্তে অবস্থান করে। প্রথাগত ক্যানসার চিকিৎসায় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ক্যানসার কোষ অপসারণ করা হয়। পাশাপাশি বিকিরণ বা কেমোথেরাপির মাধ্যমে কোষ ধ্বংস করার ওপর নজর দেওয়া হয়। নতুন গবেষণায় একটি তৃতীয় পদ্ধতির উন্মোচন হয়েছে। এ পদ্ধতিতে ক্যানসার রোগীরা তাদের সুস্থ কোষ পুনরুদ্ধার করতে পারে।
নতুন এ গবেষণায় বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন কোষকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সক্ষম একটি এনজাইম শনাক্ত করেছেন, যা কিছু ক্যানসার–সম্পর্কিত প্রোটিনের ভাঙনকে বাধা দেয়। এনজাইমটি টিউমার বৃদ্ধিতে কাজ করে। আর তাই এনজাইমটি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ক্যানসার আক্রান্ত কোষকে স্বাভাবিক ও সুস্থ অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
কোরিয়া অ্যাডভান্সড ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির জীববিজ্ঞানের অধ্যাপক কোয়াং-হিউন চো জানিয়েছেন, প্রাথমিক গবেষণায় জেনেটিক নেটওয়ার্ক স্তরে ক্যানসার বিকাশের সময় কোষের মধ্যে কী কী পরিবর্তন ঘটে, তা জানা গেছে। ক্যানসারের বিকাশ দ্রুত হয় না। ধীরে ধীরে ঘটে সুস্থ কোষের ডিএনএতে পরিবর্তন হয়। প্রচলিত চিকিত্সাপদ্ধতিতে ক্যানসার কোষ ধ্বংসের সময় রোগীদের ক্লান্তি, বমি বমি ভাব ও চুল পড়ার মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়।
প্রচলিত ক্যানসার চিকিৎসায় শরীরের সব কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নানা ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তবে ক্যানসার চিকিৎসার নতুন এ কৌশল বিকিরণ ও কেমোথেরাপির চেয়ে কম ক্ষতিকর বলে দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। এরই মধ্যে কোলন ক্যানসারের কোষ থেকে তৈরি টিউমারে নতুন চিকিত্সাপদ্ধতির পরীক্ষা করা হয়েছে। এনজাইমের মাধ্যমে ক্যানসার চিকিৎসার এই কৌশল অ্যাডভান্সড সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
সূত্র: ডেইলি মেইল
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
মাঠে ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে সুনামগঞ্জে ২, নেত্রকোনায় ১ কৃষকের মৃত্যু
সুনামগঞ্জের হাওরে ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে দুই কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে দিরাই উপজেলায় আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রিংকু দাস এবং দুপুরে জামালগঞ্জ উপজেলায় মানিক মিয়া নামের আরেক কৃষক মারা যান। নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে বাড়ির পাশের খেতে ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে গোলাপ মিয়া (৩০) নামের আরও এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দিরাই উপজেলায় থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছিল। বিকেলে গ্রামের পাশের উদগল হাওরে ধান কাটছিলেন কৃষকেরা। ধান কাটায় অন্যদের সঙ্গে রিংকু দাসও (২৪) ছিলেন। তখন বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলে বজ্রপাতে আহত হন রিংকু দাস। স্থানীয় কৃষকেরা তাঁকে উদ্ধার করে দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। রিংকু দাস উপজেলার গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা।
দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রাজ্জাক বজ্রপাতে রিংকু দাসের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে।
জামালগঞ্জ উপজেলায় হাওরে ধান কাটতে গিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে বজ্রপাতে মানিক মিয়া (৩৫) নামের এক কৃষকের মৃত্যু হয়। মানিক মিয়া জামালগঞ্জ উপজলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের বাসিন্দা।
আরও পড়ুনবজ্রপাতে ২৪ ঘণ্টায় ১৩ জনের মৃত্যু ২৮ এপ্রিল ২০২৫পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, উপজেলার পাকনার হাওরে সকালে ধান কাটতে যান মানিক মিয়া। দুপুরে বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত হচ্ছিল। বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। পরে হাওরে থাকা অন্য কৃষকেরা তাঁর লাশ বাড়িতে নিয়ে আসেন। জামালগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে খেতে ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা যাওয়া গোলাপ মিয়া ওই গ্রামের পাইক মিয়ার ছেলে।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ও থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে বাড়ির সামনের খেতে বোরো ধান কাটছিলেন গোলাপ মিয়া। এ সময় সঙ্গে তাঁর বাবা, ভাইসহ পরিবারের অন্য লোকজনও ছিলেন। দুপুর দুইটার দিকে হঠাৎ করে বৃষ্টি শুরু হয়। একপর্যায়ে গোলাপ মিয়ার পাশেই বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। এতে চিৎকার দিয়ে দৌড়ে গিয়ে জমির একপাশে গিয়ে পড়েন গোলাপ। সঙ্গে থাকা পরিবারের লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে দ্রুত মোহনগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। তবে পরীক্ষা–নিরীক্ষার পর চিকিৎসক গোলাপকে মৃত ঘোষণা করেন।
মোহনগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শফিকুজ্জামান বলেন, বজ্রপাতের ঘটনায় মৃত্যু হওয়ায় এ বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ নেই। তাই তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।
আরও পড়ুনবজ্রপাত কমলেও বছরে মৃত্যু দেড় শ মানুষের০৫ জুন ২০২১