বাগেরহাটের সাবেক পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত কারাগারে
Published: 9th, February 2025 GMT
বাগেরহাটের সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) আবুল হাসনাত খানকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বাগেরহাটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মতিউর রহমান এই আদেশ দেন।
এর আগে শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে রংপুর থেকে তাকে আটক করে পুলিশ। এদিন পুলিশের আরো তিন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে আটক করা হয়।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বাগেরহাটের ফকিরহাট থানায় দায়ের করা একটি মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি হিসেবে আবুল হাসনাত খানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে পুলিশ তাকে আদালতে হাজির করে।
মামলার বাদী রফিকুল ইসলাম মিঠু অভিযোগ করেছেন, আবুল হাসনাত খান বিভিন্ন সময় উসকানিমূলক বক্তব্য ও নির্দেশনা দিয়ে সরকারকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছেন এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন দমনের পাঁয়তারা করেছেন।
বাগেরহাট জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌশলী (পিপি) মাহবুব মোরশেদ লালন বলেন, “সাবেক তিন সংসদ সদস্য, সাবেক পুলিশ সুপারসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। পুলিশ আবুল হাসনাত খানকে আদালতে হাজির করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।”
তিনি আরো বলেন, “আবুল হাসনাত খান পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে নানা অন্যায় করেছেন, যা তার বিভিন্ন বক্তব্যে স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে।”
এই মামলায় বাগেরহাট-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, বাগেরহাট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ তন্ময়, বাগেরহাটের সাবেক পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত খানসহ আওয়ামী লীগের ৩৫ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।
এছাড়া বাগেরহাট-২ আসনের আরেক সাবেক সংসদ সদস্য মীর শওকত আলী বাদশা, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ কামরুজ্জামান টুকু, সাধারণ সম্পাদক ভুইয়া হেমায়েত উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বাগেরহাট পৌরসভার মেয়র খান হাবিবুর রহমান, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান যুবলীগ নেতা সরদার নাসির উদ্দিন, শেখ হেলাল উদ্দিনের একান্ত সচিব ফিরোজুল ইসলাম জোমাদ্দারও মামলার আসামি হয়েছেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট দুপুরে ফকিরহাট উপজেলার কাটাখালি গোলচত্বর এলাকায় আসামিরা জড়ো হয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা চালান। তারা ছাত্র জনতাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন, আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য কয়েকটি বোমা বিস্ফোরণ ঘটান এবং হত্যার উদ্দেশ্যে একাধিকবার গুলি চালান।
বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের ২৭তম ব্যাচের কর্মকর্তা আবুল হাসনাত খান ২০২৩ সালের ২০ সেপ্টেম্বর বাগেরহাটের পুলিশ সুপার হিসেবে যোগ দেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ‘একটি ব্যালট, একটি বুলেট’ এবং ‘যেখানে উন্নয়ন, সেখানেই ধ্বংস’ এমন মন্তব্য করে সমালোচিত হন তিনি। তার এসব বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
২০২৪ সালের ২৪ আগস্ট পর্যন্ত তিনি বাগেরহাটের পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ঢাকা/শহিদুল/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?