ঢাকার ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে শেখ মুজিবুর রহমানের গুঁড়িয়ে দেওয়া বাড়িতে আজ সোমবারও মানুষের ভিড় দেখা গেছে। কেউ হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে ইট ভাঙছেন, কেউ খুলে নিয়ে যাচ্ছেন রড, বৈদ্যুতিক তার, পাইপ।

সকাল সাতটার দিকে ছয়জন এসেছেন পানির লাইন বের করার জন্য। তাঁদের একজন কামাল হোসেন বলেন, এই লাইন থেকে পাইপ বের করে নেবেন তাঁরা।

প্রায় পঞ্চাশোর্ধ্ব দুই নারীকে দেখা গেল, মাটি খুঁড়ে রড খুঁজছেন। বিক্রি করলে রডের দাম ভালো পাওয়া যায় বলে জানান তাঁরা।

মো.

শরীফ নামের এক ব্যক্তি অফিসে যাচ্ছিলেন। চলতি পথে নেমে তিনি বাড়িটির ছবি তুললেন।

আরও পড়ুন৩২ নম্বর: কেউ কাটছেন গাছ, কেউ রড, আছেন ভাঙারি ব্যবসায়ীও০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

মোহাম্মদপুর থেকে আসা নাজির হোসেন বললেন, গতকাল ফায়ার সার্ভিস ৩২ নম্বর–সংলগ্ন বাড়িটিতে এসেছিল। সেই জায়গা তিনি দেখতে এসেছেন।

কুয়াকাটা থেকে চিকিৎসক দেখাতে এসেছেন আয়শা আক্তার। তিনিও এসেছেন গুঁড়িয়ে দেওয়া বাড়ি দেখার জন্য।

যাত্রাবাড়ী থেকে আসা মিজানুর রহমান বলেন, ‘এই বাড়ি সবার জন্য শিক্ষা। যে অত্যাচারী হবে, তার পরিণতিই এ রকম হবে। ৩২ নম্বর থেকে সবার শিক্ষা পাওয়া উচিত।’

শুক্রাবাদের বাসিন্দা আসলাম বলেন, ‘এই রেষারেষির রাজনীতি করে কী লাভ! আজকে ৩২ ধ্বংস করেছে, সামনে আরেক দলেরটা করবে। এভাবেই রাজনীতি চলবে আর দেশের মানুষের দুর্দশা কোনো দিন যাবে না।’

আরও পড়ুন৩২ নম্বরের বাড়িতে আজও ইট–রড খোলায় ব্যস্ত অনেকে, সংলগ্ন ভবনে ফায়ার সার্ভিস২১ ঘণ্টা আগে

স্কুল–কলেজের শিক্ষার্থীদেরও দল বেঁধে ৩২ নম্বরের গুঁড়িয়ে দেওয়া বাড়িতে আসতে দেখা গেল। তাদের অনেকেই ছবি তুলছে।

ভারতে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচারের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা গত বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ব্যাপক বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট স্বৈরতান্ত্রিক আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। অভ্যুত্থানের ছয় মাস ছিল ৫ ফেব্রুয়ারি। এদিন রাত ৯টায় নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের ফেসবুক পেজে শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচার করা হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়। এ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে দিনভর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উত্তেজনা চলে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া অনেক ছাত্র-জনতা ও অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট ফেসবুকে ধানমন্ডি ৩২ অভিমুখে ‘বুলডোজার মিছিল’ এবং ‘মার্চ টু ধানমন্ডি ৩২’ কর্মসূচির ডাক দেন।

আরও পড়ুনগুঁড়িয়ে দেওয়া হলো ৩২ নম্বরের বাড়ি ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৫ আগস্ট ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছিলেন বিক্ষুব্ধ জনতা। এর পর থেকে বাড়িটি অনেকটা পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল।

আরও পড়ুন৩২ নম্বরের বাড়ির সামনে উৎসুক জনতার ভিড়০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ধ নমন ড এস ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

ইসলামী শ্রম আইন বাস্তবায়নের দাবি

শ্রমিক সমা‌জের মু‌ক্তির জন‌্য ইসলামী শ্রমনী‌তি প্রণয়ন ও বাস্তবায়‌নের দা‌বিতে রাজধানীসহ দে‌শের বি‌ভিন্ন স্থা‌নে র‌্যালি, আলোচনা সভা ও সমা‌বেশ ক‌রে‌ছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও এর সহ‌যোগী সংগঠনগু‌লো।

মহান মে দিবস উপল‌ক্ষে বৃহস্প‌তিবার (১ মে) সকাল থে‌কে এসব কর্মসূচি পালন ক‌রা হয়।

গাজীপুরে শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেছেন, ইসলামী শ্রমনীতি ছাড়া যে শ্রমিকের মুক্তি সম্ভব না, তা আজ প্রমাণিত। স্বাধীনতার এতগুলো বছর পরও বিদ্যমান শ্রম নীতিমালাই বাস্তবায়ন করা যায়নি। দেশের অর্থনীতির আকার বড় হয়েছে, জিডিপির আকার বড় হয়েছে, কিন্তু শ্রমিকের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। টাকার অংকে শ্রমিকের বেতন বাড়লেও মূল্যস্ফীতির কারণে প্রকৃত মজুরি বরং আরো কমেছে। এই বাস্তবতায় রাষ্ট্র পরিচালনায় ইসলামকে ভিত্তি বানাতে না পারলে শ্রমিকের ভাগ্য কোনোদিনই পরিবর্তন হবে না।

ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা খলিলুর রহমান নোয়াখালীর সেনবাগে তার নির্বাচনি এলাকায় শ্রমিক-জনতা সমাবেশে বলেছেন, ইসলামী শ্রম আইন বাস্তবায়নে সামগ্রিক আন্দোলন করা ছাড়া শ্রমিকের সামনে আর কোনো পথ নেই। ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন সে পথেই হাঁটবে।

তি‌নি বলেন, আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস কেবল একটি দিন নয়, বরং শ্রমজীবী মানুষের অধিকার, মর্যাদা ও ন্যায্যতার প্রতীক। ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ শুরু থেকেই এ চেতনাকে ধারণ করে শ্রমজীবী জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। এবারের দিবস উপলক্ষে দেশব্যাপী যে উদ্দীপনা ও অংশগ্রহণ আমরা দেখেছি, তা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক ও অনুপ্রেরণাদায়ক।

মে দিবসে ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, জামালপুর, নেত্রকোনা, শেরপুর, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, নড়াইল, বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনী, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, জয়পুরহাট, রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, মাগুরা, মেঘনাঘাটসহ সাংগঠনিক জেলাগুলো সভা-সমা‌বে‌শ ক‌রে‌ছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ