চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সেরা প্রস্তুতির ঘাটতি স্বীকার করলেন সিমন্স
Published: 10th, February 2025 GMT
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আসর শুরু হতে আর বেশি দিন বাকি নেই। আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে আট দলের এই বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট। তবে বিপিএলের ব্যস্ত সূচির কারণে বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা পর্যাপ্ত অনুশীলনের সুযোগ পাননি। এখন পর্যন্ত মাত্র দুই দিন অনুশীলন করেছেন নাজমুল হোসেন শান্তরা, আর দেশ ছাড়ার আগে আরও দুই দিন প্রস্তুতির সুযোগ পাবেন। এরপর ১৩ ফেব্রুয়ারি রাতের ফ্লাইটে সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে দল। সব মিলিয়ে কাঙ্ক্ষিত প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রধান কোচ ফিল সিমন্স।
সোমবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুশীলনের তৃতীয় দিনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সিমন্স। তিনি বলেন, ‘আমি একমত যে এটি আদর্শ প্রস্তুতি নয়। তবে তারা ক্রিকেট খেলছে, তাও সাদা বলের। এর মানে তারা স্কিলের দিক থেকে শার্প রয়েছে। আমরা তাদের পারফর্ম করতে দেখেছি, এখন মানসিকতা ওয়ানডে ফরম্যাটের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হবে।’
বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ‘এ’ গ্রুপে রয়েছে, যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ ভারত, পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড। ২০ ফেব্রুয়ারি দুবাইয়ে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে টাইগারদের মিশন।
সামনের দুটি অনুশীলন সেশন ভালোভাবে কাজে লাগানোর পরিকল্পনার কথা জানিয়ে সিমন্স বলেন, ‘আমাদের আরও দুটি সেশন আছে। দিনে ও রাতে ব্যাট-বলের অনুশীলন করে ৫০ ওভারের ম্যাচের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
বিপিএল শেষে জাতীয় দলের অনুশীলনে কোনো লিগ আলোচনা হয়নি বলে জানান তিনি, ‘আমাদের দুই দিনের অনুশীলনে বিপিএল নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। ক্রিকেটাররা দীর্ঘ সময় ব্যাটিং ও নিখুঁত বোলিংয়ের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। আমার মনে হয় না, বিপিএল তাদের প্রস্তুতিতে কোনো প্রভাব ফেলবে।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ফ ল স মন স ব প এল স মন স
এছাড়াও পড়ুন:
রাজনীতিকেরা পেশাদার পুলিশ চাননি, এখনই সংস্কার জরুরি
জনগণ প্রভাবমুক্ত ও পেশাদার পুলিশ চাইলেও রাজনৈতিক নেতারা কখনো তা চাননি। ১৯৩০ সাল থেকে দমন করাই ছিল পুলিশের কাজ। এ সংস্কৃতি বদলাতে হবে, পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করতে হবে। এ জন্য পুলিশ সংস্কারের এখনই উপযুক্ত সময়।
পুলিশ সপ্তাহ ২০২৫ উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে পুলিশ অডিটরিয়ামে ‘নাগরিক ভাবনায় জনতার পুলিশ: নিরাপত্তা ও আস্থার বন্ধন’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বিশিষ্ট নাগরিকদের বক্তব্যে এমন মতামত উঠে এসেছে। এ সময় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, সব মহানগর পুলিশের কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি ও পুলিশ সুপাররা উপস্থিত ছিলেন।
বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নাগরিকদের সঙ্গে পুলিশ সপ্তাহে এ ধরনের মতবিনিময়ের ভাবনাটি নতুন। পুলিশ-নাগরিক সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত, কেমন পুলিশ তাঁরা চান—এই বিষয়গুলো আরও ভালোভাবে জানার জন্যই এ আয়োজনের উদ্দেশ্য বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়। মতবিনিময় সভায় শিক্ষক, সাংবাদিক, ধর্মীয় নেতা, লেখক, খেলোয়াড়, সংগীতশিল্পী, চলচ্চিত্র নির্মাতা, অর্থনীতিবিদ, সাহিত্যিক, শ্রমিকনেতাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নাগরিকেরা উপস্থিত ছিলেন।
তিন দিনব্যাপী পুলিশ সপ্তাহের অনুষ্ঠানের শেষ দিনে নাগরিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের আগে সকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে আলোচনা অনুষ্ঠানে অংশ নেন পুলিশ কর্মকর্তারা। সর্বশেষ বিকেলে আইজিপির সঙ্গে মাঠপর্যায়ে কর্মরত পুলিশ সুপার থেকে তদূর্ধ্ব কর্মকর্তাদের মতবিনিময় সভা হয়।
নাগরিকদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে পুলিশের সাবেক দুজন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বক্তব্য দেন। তাঁদের মধ্যে মোহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, রাজনৈতিক নেতৃত্বের উচিত পুলিশকে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দেওয়া। পুলিশকে একটি দানবীয় বাহিনীতে পরিণত করা হয়েছে। পুলিশ সংস্কারের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সদিচ্ছা সবচেয়ে বেশি দরকার।
নুরুল হুদা আরও বলেন, ১৯৪৭ সালে রাজনীতিবিদেরা সবকিছুর পরিবর্তন করলেন কিন্তু দণ্ডবিধি, ফৌজদারি কার্যবিধি, সাক্ষ্য আইন পরিবর্তন করলেন না। অথচ সেগুলো যুগের দাবি ছিল। এর মানে হলো তখনো রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছিল না। তিনি বলেন, ‘এই রাজনৈতিক সদিচ্ছা আমরা একাত্তরেও দেখিনি। আমাদের যে সংবিধান আছে, সেটি অপারেশনাল করতে হলে যেসব রুলস-রেগুলেশনগুলো পরিবর্তন করা দরকার ছিল, সেগুলো আমরা করলাম না। এর মানে আমাদের কথায় বৈপরীত্য রয়ে গেছে। রাজনৈতিক নেতারা পুলিশকে যথাযথভাবে পেশাদার করতে চাননি।’
মতবিনিময় অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক ছিলেন লেখক ও গবেষক অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান। তিনি বলেন, পুলিশ যে একরকম অদ্ভুত অবস্থায় আছে, তাদের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে, এর কারণ অনুসন্ধানের মতো উদার চিন্তা থাকা উচিত। পুলিশ দলীয় পুলিশ হয়ে যায়, সেটা তো বাহ্যিক। কিন্তু ভেতরে সমস্যা আছে।
অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান আরও বলেন, যাকে রাষ্ট্র বলা হয়, তার একটি শাখা হলো বলপ্রয়োগ। পুলিশ যেহেতু এই বলপ্রয়োগের কাজটি করে, সুতরাং স্বাভাবিকভাবেই তাদের এ কাজটি জনপ্রিয় নয়। তবে পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত যত রাষ্ট্র ছিল বা আছে, সব কটিতেই পুলিশ লাগে। পুলিশ কথার মধ্যেই রাষ্ট্র কথাটা লুকিয়ে আছে।
বিচারব্যবস্থার কিছু সমস্যার কথা তুলে ধরে সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘আমাদের যে ফৌজদারি বিচারব্যবস্থা, সেখানে কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করলে সেটা আদালতের হাতে চলে যায়। প্রায়ই আমরা পুলিশের থেকে শুনেছি, আমাদের দেশের ফৌজদারি ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করা যায় না। আদালত জামিন দিয়ে দেন, অপরাধী মুক্ত হয়ে যায়। কোনো ক্ষেত্রে নিরপরাধ শাস্তি পায়, অপরাধীরা ছাড়া পেয়ে যায়।’ তিনি আরও বলেন, সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছেন, বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার করা যাবে না। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত থাকা সত্ত্বেও এটা বাস্তবে প্রয়োগ হয় না।
মতবিনিময় সভায় মুখ্য আলোচক ছিলেন লেখক ও গবেষক সলিমুল্লাহ খান। ঢাকা, ১ মে