ক্লাসিকো বললেই মনের আয়নায় সবার আগে ভেসে উঠে রিয়াল মাদ্রিদ-বার্সেলোনার লড়াই, ‘এল ক্লাসিকো’ নামে যা সারা বিশ্বে পরিচিতি। এক যুগ আগেও এই লড়াইটি ছিল সারা বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীদের আলোচনার কেন্দ্রে। তবে সেই ঝাঁজটি এখন যেন ভর করেছে রিয়াল আর ম্যানচেস্টার সিটির দ্বৈরথে। এই লড়াইয়ের নতুন কেতাবি নাম ‘ক্লাসিকো’! নামটি যখন স্বয়ং রিয়াল বস আনচেলত্তির দেওয়া, তখন সংবাদমাধ্যম তা না লুফে পারে না।

আগামী দিনগুলোতে রিয়াল-সিটি দ্বৈরথই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠবে ফুটবল প্রেমীদের কাছে, পাশাপাশি গার্দিওলা ও আনচেলত্তির ডাগ আউটের গল্পগুলোও। সবশেষ কয়েক মৌসুমে ইউরোপীয় ফুটবলকে ভিন্ন মাত্রা দিয়েছে এই দুই দল এবং দুই ম্যানেজার। এই দ্বৈরথগুলো ফুটবলের সৌন্দর্য এবং ঐতিহ্যের একটি জীবন্ত সাক্ষ্য হয়ে উঠেছে।

এরআগে চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনাল বা সেমি ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল এই দুল। যেখানে ২০২১-২২ এবং ২০২৩-২৪ মৌসুমে জয় পেয়েছিল রিয়াল। অন্যদিকে সিটি জিতেছিল ২০২২-২৩ মৌসুমে। তবে এবার তাদের দেখা হয়ে যাচ্ছে প্লে-অফেই।

আরো পড়ুন:

ভঙ্গুর সিটির পরীক্ষা নেবে রক্ষণের বিশ্বস্ত যোদ্ধাবিহীন রিয়াল

বিতর্কিত পেনাল্টিতে পয়েন্ট ভাগাভাগি দুই মাদ্রিদের: আড়ালে বার্সার হাসি

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) রাতে ইতিহাদ স্টেডিয়ামে মাঠে নামছে এই দুই দল। ম্যাচ পূর্বরর্তী সংবাদ সম্মেলনে রিয়াল বস আনচেলত্তি বলেন, “এটাকে এখন ‘মর্ডান ক্লাসিকো’র মতোই মনে হচ্ছে। কারণ আমরা তাদের বিপক্ষে অনেক বছর ধরেই খেলে আসছি। আমার মনে হয়, বরারবরের মতোই বিনোদনদায়ী ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচ হবে। এই লড়াই এতটাই উঁচু মানের যে, খেলার প্রতিটি ক্ষেত্রেই সেরাটা মেলে ধরতে হবে, স্রেফ একটি দিক তুলে ধরলে চলবে না।”

২০২২ সালে সেমি-ফাইনালে রোমাঞ্চকর এক লড়াইয়ে ম্যানচেস্টার সিটিকে ৫-৬ অ্যাগ্রিগেটে হারিয়ে ফাইনালে উঠে পরে শিরোপা জয় করে লস ব্ল্যাঙ্কসরা। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে সেবার সেকেন্ড লেগের অতিরিক্ত সময়ে ৩ গোল করে রিয়াল এই অবিস্মরণীয় জয় নিয়ে আসে।

শেষ কয়েক বছরের এই সমস্ত দ্বৈরথের কথা মাথায় রেখেই আনচেলত্তি প্রশংসা করলেন সিটি এবং তাদের ম্যানেজারের, “তারাই (সিটি) এখন সবচেয়ে শক্তিশালী এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রতিপক্ষ। এবং সে (গার্দিওলা) সেরা ম্যানেজার। এই লড়াই থেকে যে দলই সামনে এগোবে, সেই দলেরই টুর্নামেন্টের শেষ পর্যন্ত যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় এটাই দেখা গেছে।”

গার্দিওলার মুখোমুখি হওয়াটা প্রতিবারই একটা মাথাব্যাথার কারণ বলেও উল্লেখ করেছেন এই ইতালিয়ান ম্যানেজার, “বাস্তবতা হলো, ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে ম্যাচ সবসময়ই দুর্ভাবনার। গুয়ার্দিওলা এমন একজন কোচ, যে ফুটবল খেলাটায় অনেক কিছু বয়ে এনেছে, সে উদ্ভাবনী একজন, তার প্রতি আমার সম্মান অনেক। সে সেরাদের একজন, যদি সেরা নাও হয়।”

ঢাকা/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল চ য ম প য়নস ল গ ফ ইন ল

এছাড়াও পড়ুন:

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ-আ.লীগ নেতা–কর্মীদের ‘গোপন বৈঠক’ ঘিরে গ্রেপ্তার ২২, সেনা হেফাজতে মেজর

রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি কনভেনশন সেন্টারে ‘গোপন বৈঠক’ ঘিরে কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগ, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের ২২ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ছাড়া ওই বৈঠক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠা মেজর পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে সেনাবাহিনী। আজ বৃহস্পতিবার সেনা সদরের প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।

এ ঘটনায় রাজধানীর ভাটারা থানায় একটি মামলা করেছে পুলিশ। তাতে বলা হয়েছে, গত ৮ জুলাই বসুন্ধরাসংলগ্ন কে বি কনভেনশন সেন্টারে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ একটি গোপন বৈঠকের আয়োজন করে। সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত বৈঠকে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীরা মিলে ৩০০-৪০০ জন অংশ নেন। তাঁরা সেখানে সরকারবিরোধী স্লোগান দেন। বৈঠকে পরিকল্পনা করা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ পাওয়ার পর সারা দেশ থেকে লোকজন এসে ঢাকায় সমবেত হবেন। তাঁরা ঢাকার শাহবাগ মোড় দখল করে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি এবং জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে দেশে শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করবেন। তাঁরা সেখানে এসব ষড়যন্ত্র করেছিলেন।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) ওই মামলার তদন্ত করছে। ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান আজ বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেন, ওই মামলায় এখন পর্যন্ত ২২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা এখন কারাগারে আছেন।

এই মামলা তদন্তসংশ্লিষ্ট ডিবি সূত্র জানিয়েছে, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা রয়েছেন। ‘তারা প্রিয় স্বদেশ’, ‘এফ ৭১ গেরিলা’, ‘বঙ্গবন্ধু প্রজন্ম’, ‘প্রজন্ম ৭১’, ‘শেখ হাসিনা’সহ বিভিন্ন হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপের সদস্য। একটি গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত করে জানতে পেরেছে, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে বসুন্ধরায় ওই গোপন সভার আয়োজন করা হয়েছিল। ওই গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত ১২ জুলাই উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকার একটি বাসা থেকে যুবলীগ নেতা সোহেল রানাকে গ্রেপ্তার করে ভাটারা থানা-পুলিশ। ওই দিন একই এলাকার একটি বাসা থেকে আওয়ামী লীগের নেত্রী শামীমা নাসরিনকে (শম্পা) গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর স্বামী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। দুজনকে গ্রেপ্তারের পর ১৩ জুলাই ভাটারা থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করেন একজন পুলিশ কর্মকর্তা।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি সূত্র জানায়, সোহেল রানা ও শম্পাকে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করে তথ্য যাচাই করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই বৈঠকে অংশ নেওয়া মেজর সাদিকুল হক ওরফে মেজর সাদিককে হেফাজতে নেওয়া হয়।

মেজর সাদিক নামের একজন আওয়ামী লীগের লোকজনকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে—এমন সংবাদের বিষয়ে আজ সেনা সদরের ব্রিফিংয়ে প্রশ্ন করেছিলেন সাংবাদিকেরা। জবাবে সেনা সদরের মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের কর্নেল স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মেজর সাদিকের বিষয়ে আমরা অবগত। তাঁর বিষয়ে তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে বলতে পারব।’

ওই ব্রিফিংয়ে সেনাবাহিনীর মিলিটারি অপারেশনসের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম-উদ-দৌলা বলেন, এ রকম ঘটনা জানার পরে সেনাবাহিনীর হেফাজতেই তিনি আছেন। তদন্ত চলমান আছে। তদন্তে দোষ প্রমাণিত হলে নিঃসন্দেহে প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী সেনাবাহিনী তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি সূত্র বলেছে, জিজ্ঞাসাবাদে বরগুনার যুবলীগ নেতা সোহেল রানা এবং গোপালগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেত্রী শামীমা নাসরিন বলেছেন, মেজর সাদিকের নির্দেশে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে তৃণমূল আওয়ামী লীগ কর্মীদের সংগঠিত করে বিভিন্ন স্থানে নাশকতা চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য ভাটারা থানা এলাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ই-ব্লকের ৭ নম্বর রোডের কে বি কনভেনশন সেন্টারের দ্বিতীয় তলা ভাড়া নেওয়া হয়। মেজর সাদিক সেদিন সরকার উৎখাতে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেন।

বসুন্ধরার ওই কনভেনশন হলের ব্যবস্থাপক মুজাহিদকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে ডিবি সূত্র জানিয়েছে। তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, তিনি পরিকল্পিতভাবে সারা দিন কনভেনশন হলের সব সিসি ক্যামেরা বন্ধ রেখেছিলেন। তাঁদের ভাষ্যমতে, সেখানে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ নেতা–কর্মীসহ সমবেতদের নাশকতার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। এর আগে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আরও অন্তত চারটি প্রশিক্ষণ হয়েছিল। তবে সবগুলো প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভিডিও ফুটেজ নষ্ট করে ফেলা হয়েছে।

মামলার তদন্ত সম্পৃক্ত ডিবির একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের সম্পৃক্ততা, উপস্থিতি যাচাই করা হচ্ছে। তদন্তে প্রাপ্ত তথ্য যাচাইয়ের জন্য গ্রেপ্তার অন্যদেরও রিমান্ডে এনে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। গোপন এই ষড়যন্ত্রে যাঁরা জড়িত ছিলেন, সবাইকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কিয়েভে আবারো রাশিয়ার ভয়াবহ হামলা, নিহত ৩১
  • নারীরা কেন পুরুষদের তুলনায় বেশিবার প্রস্রাব করেন?
  • স্ত্রীর পা ছুঁয়ে আশীর্বাদ নিয়ে আলোচনায় গুরমিত
  • রাজশাহীতে আবার চালু হলো নিউজ পোর্টাল ‘পদ্মাটাইমস’
  • স্পট ফিক্সিংয়ের অভিযোগ থেকে মুক্তি পাকেতার
  • গঙ্গাচড়ায় হিন্দুবাড়িতে হামলা ঠেকাতে ‘পর্যাপ্ত’ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি
  • এভাবেও ফিরে আসা যায়
  • নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ-আ.লীগ নেতা–কর্মীদের ‘গোপন বৈঠক’ ঘিরে গ্রেপ্তার ২২, সেনা হেফাজতে মেজর
  • গণপূর্ত অধিদপ্তরের ৫ প্রকৌশলী ও স্থাপত্য অধিদপ্তরের স্থপতি বরখাস্
  • লিভারপুল ছেড়ে ১ হাজার কোটি টাকায় বায়ার্ন মিউনিখে লুইস দিয়াজ