পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা) বলেছেন, দেশে ক্রীড়াঙ্গনে অনেক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামে তেমনটা নেই। পাহাড়ের ক্রীড়াঙ্গনকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাঙামাটিতে তারুণ্য উৎসব উপলক্ষে ব্যাডমিন্টন ও ফুটবল টুর্নামেন্ট প্রতিযোগীদের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সন্তু লারমা এ কথা বলেন।

রাঙামাটি শহরের চিংহ্লা মং মারী স্টেডিয়ামে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী এই ব্যাডমিন্টন ও ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হয়। আজ বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান ছিল। আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কে এস মং মারমার সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সন্তু লারমা। সমাপনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান অনুপ কুমার চাকমা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের জনসংযোগ কর্মকর্তা বিমল চাকমা।

সন্তু লারমা বলেন, ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। সেই চুক্তির আলোকে পার্বত্য পরিষদ আইন প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। কিন্তু জেলা পরিষদ কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। এর মধ্যে ক্রীড়া বিভাগ এখনো জেলা পরিষদের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি। পার্বত্য চট্টগ্রামে ক্রীড়াক্ষেত্রে অনেক কিছু করার জায়গা রয়েছে। কিন্তু সরকারের কাছে কোনো গুরুত্ব নেই। এ কারণে প্রতিভাবান খেলোয়াড়েরা এগিয়ে যেতে পারছেন না। অনেক সীমাবদ্ধতার পরও পার্বত্য অঞ্চলের অনেক তরুণ-তরুণী দেশে ও দেশের বাইরে অবদান রাখছেন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতিবন্ধী ছেলেকে সেতু থেকে ফেলে দেন মা: পুলিশ

মাদারীপুরের শিবচরে ১৫ বছর বয়সী প্রতিবন্ধী ছেলেকে সেতু থেকে এক মা নদে ফেলে দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। গতকাল বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নে আড়িয়াল খাঁ নদীর হাজী শরিয়তউল্লাহ সেতুতে এ ঘটনা ঘটে।

শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রতন শেখ প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পুলিশ। ওই নারী ভিক্ষাবৃত্তি করেন এবং কিছুটা ভারসাম্যহীন। ১৫ বছর বয়সী ছেলেটি জন্ম থেকে প্রতিবন্ধী। প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্যমতে, নিজের ছেলেকে সেতু থেকে নদীতে ফেলে দেন ওই নারী। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। নিখোঁজ ছেলেটিকে উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হয়েছে। তবে এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

শিবচর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা লিয়াকত হোসেন আজ বৃহস্পতিবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা সকাল থেকে নদীতে অভিযান চালানো শুরু করেছেন। সঙ্গে ডুবুরি দলও আছে। ছেলেটির সন্ধানে আশপাশের এলাকায়ও খোঁজ করা হচ্ছে। স্থানীয় লোকজন সহায়তা করছেন। তবে এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই নারীর নাম রিজিয়া বেগম। তিনি উপজেলার বন্দরখোলা ইউনিয়নের শিকদার হাট এলাকার মৃত আজগর আলীর স্ত্রী। স্বামীর মৃত্যুর পর ভিক্ষাবৃত্তিতে তাঁর সংসার চলে। তাঁর তিন মেয়ে ও এক ছেলে আছে। ছেলে নাসিরউদ্দিন জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী। সে চোখে দেখে না, চলাফেরাও করতে পারে না।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. আরিফ বলেন, আসরের নামাজের পর থেকে ওই নারীকে সেতুর ওপর বসে থাকতে দেখেন। সঙ্গে ৮-৯ বছর বয়সী একটি মেয়ে ও একটি ছেলে ছিল। ছেলেটি কাঁদছিল। নারীকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেছিলেন, ‘খিদার জন্য কাঁদছে।’

নূর আলম নামে সন্ন্যাসীর চর চৌরাস্তা এলাকার এক আইসক্রিম বিক্রেতা বলেন, তিনি আইসক্রিম বিক্রি করে বাড়িতে ফিরছিলেন। দূর থেকে দেখেন, এক নারী ছেলেটিকে ফেলে দিলেন। আরও অনেকে দেখেছেন দাবি করে তিনি বলেন, এক অটোরিকশাচালক দৌড়ে যেতে যেতে ওই নারী কাজটি করেন।

ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন নারীকে ঘিরে ধরে ছেলেটিকে ফেলে দেওয়ার কারণ জানতে চান। এ সময়ের দুটি ভিডিও প্রথম আলোর হাতে এসেছে। ভিডিওতে ভরণপোষণ করতে না পেরে প্রতিবন্ধী ছেলেকে নদীতে ফেলে দিয়েছেন বলে জানান ওই নারী। কিছুক্ষণ পর পুলিশ গিয়ে ওই নারীকে হেফাজতে নেয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ