গর্ভকালীন সেবা নারীর প্রজনন স্বাস্থ্যের অপরিহার্য অংশ। গর্ভাবস্থায় নারীদের প্রায়ই হাড়, মাংসপেশি, অস্থিসন্ধি, স্নায়ুসংক্রান্ত নানা সমস্যা ও জটিলতা পরিলক্ষিত হয়। ফলে একজন মা শারীরিক ও মানসিকভাবে অনেকটাই ভোগেন। তা ছাড়া গর্ভাবস্থায় ওষুধের ব্যবহারের সুযোগ সীমিত। তাই ব্যথা–বেদনা কমাতে এ অবস্থায় রিহ্যাবিলিটেশন মেডিসিন একটি কার্যকর চিকিৎসাপদ্ধতি।

প্রথম তিন মাস পিঠ, কোমর বা পায়ে ব্যথা হতে পারে। ক্লান্তিবোধ হয়। দ্বিতীয় তিন মাসে হাত ও আঙুলে ঝিঁঝিঁ ধরা, অবশ হয়ে যাওয়া, অস্থিসন্ধিতে ব্যথা অনুভব বেশি দেখা দেয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রথম তিন মাসের সমস্যা, দ্বিতীয় থেকে তৃতীয় তিন মাসেও অব্যাহত থাকতে পারে।

কারণ

হরমোনের কারণে সন্ধিগুলো শিথিল হয়ে আসা।

জরায়ু বৃদ্ধির জন্য মেরুদণ্ডের বক্রতার পরিবর্তন হওয়া।

ওজন বেড়ে যাওয়া।

নার্ভের ওপর অতিরিক্ত চাপ।

ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি–এর অভাব।

 

চিকিৎসার উদ্দেশ্য

মায়েদের শারীরিক সক্ষমতা বাড়ানো।

প্রসবের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত করা।

গর্ভকালীন বিভিন্ন স্বাস্থ্যঝুঁকি কমানো।

স্বাস্থ্য জটিলতার চিকিৎসা করা।

নিরাপদ মাতৃত্ব।

প্রসবকালীন ও প্রসব–পরবর্তী জটিলতা হ্রাস।

করণীয়

গর্ভাবস্থায় ওষুধের ব্যবহার সীমিত থাকলেও চিকিৎসকের পরামর্শে আয়রন, ফলিক অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি ট্যাবলেট খাওয়া যাবে।

নিয়মিত শারীরিক অনুশীলন গুরুত্বপূর্ণ।

স্বাভাবিক কাজকর্মের পাশাপাশি দৈনিক ২০-৩০ মিনিট করে সপ্তাহে ৫ দিন হাঁটার চেষ্টা করুন।

প্রতিবেলায় গর্ভ–পূর্ববর্তী খাবারের চেয়ে একটু বেশি ক্যালরি গ্রহণ করতে হবে।

ভিটামিন সি–যুক্ত খাবার ও আয়োডিনযুক্ত লবণ খেতে হবে।

পর্যাপ্ত বিশ্রাম (দুপুরে খাবারের পর ২ ঘণ্টা ও রাতে ৬-৮ ঘণ্টা) নিতে হবে।

শারীরিক ও মানসিক চাপ কমাতে হবে।

ভারী কাজ করা নিষেধ। তবে দৈনন্দিন কাজকর্মে বাধা নেই।

পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।

সঠিক দেহভঙ্গি মেনে চলতে হবে। এক পাশে ফিরে ঘুমানোর অভ্যাস করুন।

সতর্কতা

চলাফেরায় তাড়াহুড়া করবেন না। তীব্র মাত্রার কোনো শারীরিক অনুশীলন করবেন না। কোনোক্রমেই পেটে ঠান্ডা বা গরম সেঁক অথবা কোনো ম্যাসাজ করবেন না। হাই হিল জুতা পরবেন না।

প্রশান্ত কুমার চক্রবর্তী, ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলিটেশন, বিশেষজ্ঞ, আলোক মাদার অ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার, মিরপুর ৬, ঢাকা

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

রুপগঞ্জে পরিবেশ দূষণের অভিযোগে এসি আই সল্টকে ২ লাখ টাকা জরিমানা

রূপগঞ্জে পরিবেশ দূষণের অভিযোগে এসি আই সল্টকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও রূপগঞ্জ উপজেলার সিনিয়র সহকারী কমিশনার (ভূমি) জনাব মো. তারিকুল আলমের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে এ জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়। 

অভিযানে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ এবং পরিবেশ অধিদপ্তর, নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের কর্মকর্তারা অংশ নেন। পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক টিটু বড়ুয়া অভিযানের সময় প্রয়োজনীয় প্রসিকিউশন প্রদান করেন।

পরিবেশ অধিদপ্তর, নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক এ.এইচ.এম রাসেদ জানান, অভিযানের সময় দেখা যায়, মুড়াপাড়া এলাকায় অবস্থিত এসি আই সল্ট লিমিটেড কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা, ২০২১ এর ৭(৩) ধারা লংঘন করছে।

পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এই কর্মকাণ্ডের কারণে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ এর ১৫(২) ধারা অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিষ্ঠান থেকে ২ লাখ টাকা জরিমানা ধার্যপূর্বক আদায় করা হয়।

তিনি আরও জানান, পরিবেশ দূষণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে তাদের এই ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। নারায়ণগঞ্জ জেলার শিল্পাঞ্চলগুলোতে পরিবেশ দূষণ একটি বড় সমস্যা, যা দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ