রিয়াল মাদ্রিদের ম্যানেজার কার্লো আনাচেলত্তি আগেই বলে দিয়েছিলেন- ম্যানচেস্টার সিটর বিপক্ষে তাদের ম্যাচ গুলোকে এখন ক্লাসিকোর মর্যাদা দেওয়া যায়। এই ইতালিয়ান কোচ যে, এক বর্ণও বাড়িয়ে বলেননি তার প্রমাণ মিললো মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) রাতে, চ্যাম্পিয়নস লিগের প্লে অফ ম্যাচে। গার্দিওলার অধীনে ম্যানসিটি চ্যাম্পিয়নস লিগে প্রথমার্ধে এগিয়ে যাওয়ার পর শেষ ৭ বছর হারেনি। সেই সিটিজেনরাই গতরাতে দুবার এগিয়ে গিয়েও ৩-২ গোলে হারল রিয়ালের বিপক্ষে। তবে গার্দিওলা নিজেকে সান্ত্বনা দিতে পারেন- তারা যে হেরেছে চ্যাম্পিয়নস লিগকে নিজেদের সম্পত্তি বানিয়ে ফেলা রিয়ালের বিপক্ষে।
এই মহারণের প্রতিটি মিনিট ছিল টান-টান উত্তেজনার। কেউ কাউকে ছাড় দেয়নি একফোঁটা। যদিও ম্যাচের আর্লিং হালান্ডের কোড়া গোলে ৮৫ মিনিট পর্যন্ত ২–১ ব্যবধানে এগিয়ে ছিল ম্যানসিটিই। তবে ঐ যে, একটা বাণী চিরন্তন হয়ে গিয়েছে- চ্যাম্পিয়নস লিগে রিয়ালের দ্বারা সবই সম্ভব। সেই কথাটার ভার আরেকবার রক্ষা করলেন রিয়ালের ফুটবলাররা।
আরো পড়ুন:
ক্লাসিকোর আগে আনচেলত্তির মাথাব্যথার কারণ গার্দিওলা
ভঙ্গুর সিটির পরীক্ষা নেবে রক্ষণের বিশ্বস্ত যোদ্ধাবিহীন রিয়াল
ঘরের মাঠ ইতিহাদ স্টেডিয়ামে বিশাল এক ব্যানার নিয়ে মাঠে ঢুকেছিলেন সিটি ফ্যানরা। তাতে লিখা ছিল, ‘তোমাদের হৃদয়ভাঙা কান্না এবার থামাও’। এই লিখার একপাশে সিটি মিডফিল্ডার রদ্রিগোর ব্যালন ডি-অর ট্রফিতে চুমু খাওয়ার একটা ছবি। শিশুও বুঝবে, এটা রিয়াল মাদ্রিদ এবং ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকে খোঁচা মেরে আনা হয়েছে। ম্যাচ শেষে মনে হচ্ছে সেই খোঁচাটাই স্বাগতিকদের হারের কারণ হয়ে গিয়েছিল। এই ম্যাচের আগে যে রিয়াল কখনই ইতিহাদ স্টেডিয়ামে জিততে পারেনি, তারা কিনা ভঙ্গুর রক্ষণভাগ নিয়ে ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তে জয়টা ছিনিয়ে আনল।
ম্যাচের ১৯ মিনিটেই এগিয়ে যায় স্বাগতিক শিবির। ইওস্কো গাভারদিওল দুর্দান্ত চেস্ট পাস থেকে বল পেয়ে নিখুঁত ফিনিশিংয়ে রিয়ালের জালে জড়ান আর্লিং হালান্ড। এই গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় পেপ গার্দিওলার দল।
দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য স্বরূপে ফিরে রিয়াল। ৬০ মিনিটে দানি সিবায়োসের অসাধারণ ফ্লোটেড পাস পেয়ে রিয়ালকে সমতায় ফেরান কিলিয়ান এমবাপে। তবে ৮০ মিনিটে আবারও এগিয়ে যায় সিটিজেনরা। ফিল ফোডেনের বুদ্ধিদীপ্ত মুভমেন্টে বাধা দিতে গিয়ে বক্সের মধ্যে তাকে ফাউল করেন সিবায়োস। আর পেনাল্টি থেকে গোল করতে মোটেও ভুল করেননি নরওয়েজিয়ান হালান্ড।
স্বাগতিকদের ২-১ গোলের জয়টা যখন সময়ের ব্যাপার মনে হচ্ছিল, তখন স্বমহিমায় ফেরে আনচেলত্তির দল। ম্যাচের ৮৬ মিনিটে এডারসনের ভুল পাস ধরে বল পেয়ে যান ভিনিসিয়াস জুনিয়র। তার নেওয়া শট ঠেকালেও ফিরতি বলে গোল করতে ভুল করেননি সিটির আঁতুড়ঘর থেকে উঠে আসা ব্রাহিম দিয়াজ।
এরপর মনে হচ্ছিল অ্যাওয়ে ম্যাচ হওয়াতে একটু রক্ষণাত্বক ভঙ্গতি গিয়ে ২-২ সমতায় মীমাংশা চায় লস ব্ল্যাঙ্কসরা। নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হইয়েও যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিট তখন। এই সময়ে ভিনিসিয়াস জুনিয়র ডানদিক দিয়ে দ্রুতগতিতে এগিয়ে এসে চিপ করে এডারসনের মাথার উপর দিয়ে বল পাঠান। তবে সেটি সরাসরি সিটির জালের দিকে যাচ্ছিল না। ঠিক তখনই সামনে এগিয়ে আসা জুড বেলিংহাম নিখুঁত ট্যাপ-ইন করে রিয়াল মাদ্রিদের ৩-২ গোলের জয় নিশ্চিত করেন।
তাতেই শেষ হয় ৫ গোলের রোমাঞ্চকর এই ম্যাচ। আর রিয়াল আবারও প্রমাণ করল তারা কেন ইউরোপের রাজা। পরবর্তী লেগ রিয়ালের ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে। যেখানে ৯০ মিনিট প্রতিপক্ষের জন্য এক কথায় ‘দুঃস্বপ্নের রাতের’ সমান। এই মৌসুমে সব প্রতিযোগিতায় ধুঁকতে থাকা গার্দিওলার সিটি, বার্নাব্যুতে কতটা লড়াই করতে পারবে সেটা দেখার অপেক্ষায় ফুটবল বিশ্ব।
ঢাকা/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ য ম প য়নস ল গ চ য ম প য়নস ল গ
এছাড়াও পড়ুন:
বেড়েছে মাছ, মুরগি ও ডিমের দাম
উৎপাদন ও বাজারে সরবরাহ কম থাকায় বেড়েছে ডিমের দাম। বিক্রেতারা বলছেন, উৎপাদন কম হওয়ায় খামারিরা মুরগি বিক্রি করে দিচ্ছেন এবং টানা বৃষ্টিপাতের জন্য সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে।
শুক্রবার (১ আগস্ট) রাজধানীর নিউ মার্কেট, রায়েরবাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলো ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত সপ্তাহে ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছে প্রতি ডজন ১২০ টাকায়, এ সপ্তাহে তা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়। সেই হিসেবে ডিমের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা।
সবজির দাম স্বাভাবিক
এ সপ্তাহে বাজারে টমেটো ছাড়া অন্যান্য সবজির দাম স্বাভাবিক আছে। গত সপ্তাহে টমেটো বিক্রি হয়েছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়, এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। কাঁচামরিচ ২০০ টাকা, শশা ৭০ টাকা, বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, গাজর (দেশি) ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, বরবটি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, কাকরোল ৬০ টাকা, কচুরমুখী ৬০ টাকা, প্রতিটি পিস জালি কুমড়া ৫০ টাকা এবং লাউ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মুদিবাজারে চালসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল আছে। তবে, পেঁয়াজের দাম সামান্য বেড়েছে। এ সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে ৫৫ টাকায় কেজিতে বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। রসুন ১৮০ থেকে ২০০ টাকা এবং দেশি আদা ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বেড়েছে মাছ ও মুরগির দাম
বিক্রেতারা বলছেন, নদীতে পানি বৃদ্ধির জন্য জেলেদের জালে মাছ কম ধরা পড়ছে এবং উজানের পানিতে খামারিদের পুকুর ও ঘের তলিয়ে যাওয়ায় মাছের দাম বেড়েছে। বাজারে এখন মাঝারি সাইজের চাষের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে থেকে ৩৫০ টাকায়। চাষের পাঙাসের কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ থেকে ২২০ টাকা, মাঝারি সাইজ কৈ মাছ ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, দেশি শিং ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা, বড় সাইজের পাবদা ৬০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, দেশি পাঁচমিশালি ছোট মাছ ৬০০ টাকা এবং এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকায়।
এ সপ্তাহে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহ ছিল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়। গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস ১ হাজার ১৫০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ঢাকা/রায়হান/রফিক