তাইওয়ান প্রণালি অতিক্রম করেছে যুক্তরাষ্ট্রের দুটি নৌযান, যা ওয়াশিংটন-বেইজিং মধ্যাকার সম্পর্ককে নতুন দিকে নিয়ে যেতে পারে। মার্কিন নৌবাহিনী জানিয়েছে, আর্লে বার্ক-ক্লাস গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র ডেস্ট্রয়ার ইউএসএস রালফ জনসন এবং পাথফাইন্ডার-ক্লাস জরিপ জাহাজ ইউএসএনএস বাউডিচ উত্তর থেকে দক্ষিণ অভিমুখে গত ১০ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি এই জলপথ অতিক্রম করে।

তাইওয়ান প্রণালিতে মার্কিন নৌযানের উপস্থিতি স্বাভাবিকভাবেই চীনের ক্ষোভ বাড়িয়েছে। চীনের সামরিক বাহিনী পিপলস লিবারেশন আর্মির (PLA) ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড জানায়, তারা মার্কিন জাহাজগুলোর চলাচলের ওপর নজরদারি করেছে এবং এ ধরনের কর্মকাণ্ড ভুল বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি নিরাপত্তার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। খবর- রয়টার্স

এছাড়াও চীনের সামরিক বাহিনী জানায়, মার্কিন জাহাজগুলো পর্যবেক্ষণের জন্য তারা যুদ্ধবিমান ও নৌবাহিনী মোতায়েন করেছে।

এদিকে মার্কিন সামরিক বাহিনীর ইন্দো-প্যাসিফিক কমান্ডের মুখপাত্র, নৌবাহিনীর কমান্ডার ম্যাথিউ কোমের বলেন, জাহাজ দুটি আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় তাইওয়ান প্রণালির আন্তর্জাতিক জলসীমা ব্যবহার করেছে। কোনো উপকূলীয় রাষ্ট্রের আঞ্চলিক সমুদ্রসীমায় প্রবেশ করা হয়নি।

তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা বিষয়টি নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। তবে একই সময়ে চীনের ৩৯টি যুদ্ধবিমান এবং ৭টি নৌযানকে তাইওয়ানের চারপাশে টহল দিতে দেখা গেছে, যা দ্বীপটির নিরাপত্তা নিয়ে নতুন উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

তাইওয়ান প্রণালি দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দু। যুক্তরাষ্ট্র দাবি করে, এটি একটি আন্তর্জাতিক জলপথ, যেখানে মুক্তভাবে নৌযান চলাচল করা উচিত। অন্যদিকে, চীন এই অঞ্চলকে নিজেদের অংশ বলে দাবি করে এবং মার্কিন নৌবাহিনীর উপস্থিতিকে উসকানিমূলক বলে মনে করে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা নেওয়ার পর এবারই প্রথম দুটি মার্কিন নৌযান তাইওয়ান প্রণালি অতিক্রম করল। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ত ইওয় ন

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ