ফরিদপুরে গণিতে স্বর্ণ পদক পেয়েছেন সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের গণিত বিভাগের দুই কৃতি শিক্ষার্থী।

এ এফ মজিবুর রহমান ফাউন্ডেশন ওই কলেজের বিএসসি (অনার্স) ২০২২ ব্যাচের মনিরা আক্তার এবং এম এস সি ২০২১ ব্যাচের খন্দকার ফখরুল আলমকে পুরস্কৃত করেন।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের শতাব্দী ভবনে শিক্ষক মিলনায়তনে ফাউন্ডেশনটির উদ্যোগে ও কলেজের গণিত বিভাগের আয়োজনে ১২তম বারের মতো এই পদক প্রদান অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় দুই শিক্ষার্থীকে পৃথকভাবে এক ভরি ওজনের স্বর্ণপদক এবং যথাক্রমে নগদ ১৫ হাজার ও ১০ হাজার টাকা করে তুলে দেন অতিথিবৃন্দ। মেধার ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকবৃন্দ তাদের দুজনকে নির্বাচিত করেন।

ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি এম নুরুল আলম বলেন, “এই ফাউন্ডেশন দেশের অধিকাংশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করে আসছে এবং কলেজের মধ্যে একমাত্র ফরিদপুরের রাজেন্দ্র কলেজ রয়েছে। এ এফ মজিবুর রহমানের জীবনের যত অর্জন এই ফাউন্ডেশনে দান করে গেছেন। বাইরে থেকে কোনো ডোনেশন আমরা গ্রহণ করি না।”

তিনি আরো বলেন, “এখন বিজ্ঞান ও গণিতে মানুষের আগ্রহ কমে গেছে। বিজ্ঞানের উৎকর্ষতা না হলে জাতির উন্নয়ন সম্ভব না। তরুণ প্রজন্মকে বিজ্ঞান ও গণিত চর্চায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে।”

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কলেজের অধ্যক্ষ এস এম আব্দুল হালিম। এছাড়া অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি লোনা টি রহমান, উপাধ্যক্ষ মো.

ওবায়দুর রহমান, গণিত বিভাগীয় প্রধান মো. ফয়জুল হক, শিক্ষক সমিতির সাধারন সম্পাদক ফজলুল করিম, সহকারী অধ্যাপক এস এম আসাদুজ্জামান।

এসময় দুই শিক্ষার্থী অনুভূতি প্রকাশ করে সকল শিক্ষক ও সাফল্যের পেছনে তাদের মা-বাবার অবদানের কথা তুলে ধরেন। এছাড়া কলেজটিতে এ এফ মজিবুর রহমান ভবন নির্মাণের দাবি জানান।

প্রসঙ্গত, আবুল ফয়েজ মুজিবুর রহমান ১৮৯৭ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ফরিদপুরের গেরদায় জন্মগ্রহণ করেন। ফরিদপুর জিলা স্কুলের পাঠ শেষ করে তিনি ঢাকা কলেজে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে বিএসসি পাস করেন। এরপর তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯২০ সালে বিশুদ্ধ গণিতে মাস্টার্স পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য স্যার আশুতোষ মুখার্জির প্রাপ্ত নম্বরের রেকর্ড ভেঙ্গে নতুন রেকর্ড অর্জন করেন।

ঢাকা/তামিম/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ ব র রহম ন কল জ র

এছাড়াও পড়ুন:

নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজে উৎসবমুখর পরিবেশে নবীন বরণ

বর্ণাঢ্য ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলো নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজে নবীন বরণ অনুষ্ঠান।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকাল থেকেই কলেজ প্রাঙ্গণ মুখর হয়ে ওঠে নবীন শিক্ষার্থীদের আগমন আর উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে। আনন্দ, উচ্ছ্বাস,ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যে দিনব্যাপী এই আয়োজনে নবাগত শিক্ষার্থীদের বরণ করা হয়। 

কলেজ প্রাঙ্গণজুড়ে ছিল বর্ণিল সাজসজ্জা। প্রধান ফটক থেকে শুরু করে একাডেমিক ভবন সব জায়গায় করা হয়েছে রঙিন সাজসজ্জা। শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবাই পার করেছে এক আনন্দমুখর সময়। 

অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে নবীন শিক্ষার্থীদের আনুষ্ঠানিকভাবে ফুল দিয়ে বরণ করা হয়। এসময় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। পরে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত ও গীতা পাঠ করা হয়।

আলোচনা পর্বের বক্তব্যে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, “শিক্ষাজীবনের নতুন অধ্যায় শুরু হলো আজ। নিয়মিত অধ্যয়ন, নৈতিকতা ও মানবিক গুণাবলির সমন্বয়ে তোমরাই আগামী দিনের আলোকবর্তিকা।

নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ শুধু শিক্ষার নয়, শৃঙ্খলা ও মানবিক মূল্যবোধের প্রতীক। নবীনদের সক্রিয় অংশগ্রহণে এই ঐতিহ্য আরও সমৃদ্ধ হবে।”

তিনি আরও বলেন, “এই কলেজের প্রতিটি শিক্ষার্থী যেন শুধু ভালো ফলই না করে, বরং সৎ, ন্যায়ের পক্ষে ও দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠে সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।”

দ্বিতীয় পর্বে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মুগ্ধতা ছড়ায় শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় নাচ, গান, আবৃত্তি, রম্য বিতর্ক ও ফ্যাশন শো যা অনুষ্ঠানকে আরও প্রানবন্ত করে তোলে।  দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী অদ্রি আবৃত্তি করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জনপ্রিয় কবিতা ‘বোঝাপড়া’।

একাদশ শ্রেণির ঊর্মি ও মাহী পরিবেশন করে দ্বৈত নৃত্য, যা উপস্থিত দর্শকদের করতালিতে মুখরিত করে তোলে সমগ্র অনুষ্ঠানস্থল।

ডিবেটিং ক্লাবের সদস্যরা পরিবেশন করেন রম্য বিতর্ক “আমার দেশে আমিই সেরা” যেখানে রসিকতা ও বুদ্ধিদীপ্ত সংলাপে হাস্যরসের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এছাড়াও ঊর্মি ও তিশার দ্বৈত নৃত্য অনুষ্ঠানে বিশেষ নজর কাড়ে। 

অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল ফ্যাশন শো। এ বছরের থিম ছিল— “সমাজে প্রান্তিক বা সুবিধাবঞ্চিত নারীদের অবস্থান”। শিক্ষার্থীরা পোশাক ও উপস্থাপনার মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলেন সমাজের প্রান্তিক নারীদের সংগ্রাম, আত্মমর্যাদা ও জীবনের বাস্তব চিত্র।

পোশাকের নকশা, রঙ ও ভাবনায় ফুটে ওঠে নারীর শক্তি, সাহস ও সমতার বার্তা। দর্শক ও অতিথিরা প্রশংসা করেন শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা ও সচেতন চিন্তাধারা।

নবীন শিক্ষার্থীরা এই আয়োজনে অংশ নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। একাদশ শ্রেণির নবীন শিক্ষার্থী সায়মা ইসলাম মালিহা বলেন, “আজকের দিনটি আমার জীবনের অন্যতম স্মরণীয় দিন। কলেজের পরিবেশ, শিক্ষকদের আন্তরিকতা এবং সিনিয়রদের ভালোবাসা আমাদের আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে। মনে হচ্ছে আমি সত্যিই নতুন জীবনের এক সুন্দর অধ্যায়ে প্রবেশ করেছি।”

আরেক নবীন শিক্ষার্থী তাবাসসুম তিথি বলেন, “আজ আমাদের কলেজে আনুষ্ঠানিকভাবে বরণ করে নেওয়া হলো। নতুন বন্ধুদের সঙ্গে পরিচিত হওয়া এবং এত সুন্দর আয়োজনের অংশ হতে পারা সত্যিই আনন্দের।”

পুরো অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন কলেজের সাংস্কৃতিক দলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। অনুষ্ঠান সফলভাবে সম্পন্ন করতে সহযোগিতা করে বিএনসিসি ও গার্ল গাইডের সদস্যরা।

এসময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাবেরা তাহমিনা, অতিথি হিসেবে ছিলেন নারায়ণগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ফজলুল হক রুমন রেজা, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি বিল্লাল হোসেন রবিন, রণদা প্রসাদ সাহা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও মানবাধিকার বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও প্রক্টর ড. সেলিনা আক্তার, একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আরিফুর রহমানসহ মহিলা কলেজের বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘নির্বাচনের আগেই শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই দেওয়া হবে’ 
  • প্যারোলে মুক্তি পেয়ে স্ত্রীর জানাযায় মতি, কান্নাজড়িত কণ্ঠে চাইলেন ক্ষমা
  • সাগর-রুনিসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার ও ২১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ
  • কষ্টি পাথরের শিবলিঙ্গসহ গ্রেপ্তার ৩
  • ১২ ও ১৩ নং ওয়ার্ডের পোলিং এজেন্টদের নিয়ে প্রশিক্ষণ ও কর্মশালা অনুষ্ঠিত 
  • রূপগঞ্জে ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষে লিফলেট বিতরণ 
  • উৎসবমুখর পরিবেশে নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজে নবীন বরণ
  • নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজে উৎসবমুখর পরিবেশে নবীন বরণ