ক্লাবে আটকে রেখে যুবককে রড দিয়ে পিটুনি, থানায় অভিযোগ
Published: 13th, February 2025 GMT
শরীয়তপুরের নড়িয়ায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ফাহিম জমাদার (১৮) নামে এক তরুণকে চার ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার স্থানীয় একটি ক্লাবে আটকে রেখে লোহার রড ও লাঠি দিয়ে পেটানোয় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগীর পরিবার।
স্থানীয় সূত্র ও থানায় করা অভিযোগ থেকে জানা গেছে, নড়িয়া উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের জমাদার কান্দি এলাকার বাসিন্দা সোহরাব জমাদারের সঙ্গে প্রতিবেশী জাকির মুন্সির জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এই বিরোধের জেরে মঙ্গলবার বিকেলে জাকির মুন্সির ভাতিজা রাকেশ মুন্সি, সাব্বির মুন্সিসহ কয়েকজন যুবক ফাহিম জমাদারকে কৌশলে ডেকে নিয়ে যান। পরে তাকে স্থানীয় একটি ক্লাবে আটকে রেখে টানা চার ঘণ্টা ধরে লোহার রড ও লাঠি দিয়ে মারধর করা হয়।পরিবারের সদস্যরা খবর পেয়ে ফাহিমকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়।
নির্যাতনের শিকার ফাহিম বলেন, ‘আমি খেলার মাঠ থেকে ফিরছিলাম। পথে রাকেশ মুন্সি ও সাব্বির আমাকে ডেকে নেন। পরে তারা আমাকে ক্লাবে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক পেটান। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’
ফাহিমের বাবা সোহরাব জমাদার বলেন, ‘আমাদের জমি অন্যায়ভাবে দখল নেওয়ার পর আমরা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেছিলাম। তার প্রতিশোধ নিতে ওরা আমার ছেলেকে তুলে নিয়ে এভাবে নির্যাতন করেছে। আমি দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
ঘটনার বিষয়ে জানতে রাকেশ মুন্সির মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম উদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘ভুক্তভোগীর পরিবার একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। আমরা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। দোষীদের ছাড় দেওয়া হবে না।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বিতর্কিত তিন নির্বাচনে জড়িতদের ভূমিকা তদন্তে কমিটি গঠনের নির্দেশ
বিতর্কিত তিন জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে জড়িত সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনারগণ ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিবদের ভূমিকা তদন্তে অবিলম্বে একটি কমিটি গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
সোমবার (১৬ জুন) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক বৈঠকে আলোচনা শেষে এ নির্দেশ দেন তিনি। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন ও ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
আরো পড়ুন:
প্রধান উপদেষ্টা অনেক বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন: ফখরুল
ইউনূস-তারেক বৈঠক
রমজান শুরুর আগের সপ্তাহেও নির্বাচন হতে পারে: যৌথ বিবৃতি
বৈঠকে কমিশন সদস্যগণ জুলাই সনদ তৈরির কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন।
কমিশনের সহ-সভাপতি প্রফেসর আলী রীয়াজ বলেন, “বেশকিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। খুব শিগগিরই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সনদ চূড়ান্ত করে ফেলা সম্ভব হবে।”
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “সবাই জুলাই সনদের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আমি আশা করি, আগামী জুলাই মাসের মধ্যে আমরা এটি জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারব।”
বৈঠকে লন্ডন সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে তিনি বলেন, “লন্ডনে বাংলাদেশি কমিউনিটির যাদের সঙ্গেই দেখা হয়েছে, তারা সংস্কার নিয়ে জানতে চেয়েছে। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা খুব আগ্রহী। তারা বিস্তারিতভাবে ঐকমত্য কমিশনের কাজ নিয়ে আমার সঙ্গে আলোচনা করেছে, মতামত দিয়েছে। যেখানেই গেছি, সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাকে জিজ্ঞেস করছেন, ‘আমরা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারব তো?’ আমাদের প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। পোস্টাল ব্যালট এবং আর কী কী অপশন আছে সেগুলো নিয়ে ভাবতে হবে, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে।”
বৈঠকে নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশন প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, “সব রাজনৈতিক একমত হয়েছে যে, অতীতের তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন আয়োজনে কর্মকর্তাদের ভূমিকা তদন্ত ও জবাবদিহিতার আওতায় আনা প্রয়োজন।”
ঢাকা/হাসান/মাসুদ