সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নটা শুনে বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত খানিকটা হাসলেন। এরপর স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে জানিয়ে দিলেন তাদের লক্ষ্য চ্যাম্পিয়ন হওয়া। প্রশ্নটা ছিল, ‘‘চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে আপনাদের লক্ষ্য কী?’’ এই প্রশ্নের জবাবে শান্তর সাহসিকতা সবাইকে মুগ্ধ ও বিস্মিত করেছে।

বিশাল স্বপ্ন ও আশা নিয়ে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। স্টাফসহ পুরো দলই আজ একসাথে উড়াল দিচ্ছে। সঙ্গে আছেন দুই অতিরিক্ত পেসার হাসান মাহমুদ ও খালেদ আহমেদ। 

চ্যাম্পিয়নস ট্রফি তো বটেই, আইসিসির বৈশ্বিক আসরে বাংলাদেশ জাতীয় দলের সর্বোচ্চ সাফল্য সেমিফাইনাল খেলা। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ২০১৭ সালের আসরে নিউ জিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়াকে টপকে সেরা চারে খেলেছিল মাশরাফি বিন মর্তুজার বাংলাদেশ। 

সেই আসরের পর নানা জটিলতায় আর কোনো চ্যাম্পিয়নস ট্রফি হয়নি। আগের আসরের সেমিফাইনালে খেলার সুখ স্মৃতি নিয়েই এবার পাকিস্তানে উড়াল দিচ্ছে বাংলাদেশ। 

আইসিসির সর্বশেষ কয়েকটি ইভেন্টে বাংলাদেশের অবস্থা ছিল যাচ্ছেতাই। কোন আসরেই সুখকর কিছু করতে পারেনি লাল-সবুজের সারথীরা। তাই চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেও আশায় বুক বাঁধতে পারছেন না সমর্থকরা। কারণ প্রতিটা দলই শক্তিশালী। তবে অধিনায়ক শান্ত শুনিয়ে গেলেন বিরাট আশার কথা।

সংবাদ সম্মেলনে শান্ত বলেন, “আমার কাছে এমন কিছু (চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্য ঠিক করায় বাড়তি চাপ) মনে হয় না। এখানে যে ৮টা দল আছে, সবাই চ্যাম্পিয়ন হওয়া ডিজার্ভ করে। ৮টা দলই কোয়ালিটি দল। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের দলের ওই (চ্যাম্পিয়ন হওয়ার) সামর্থ্য আছে।”

বাংলাদেশ দলপতি আরো জানালেন, দলের সবাই শিরোপা জিততে আত্মবিশ্বাসী, “বাড়তি চাপ আমার মনে হয় না কেউ অনুভব করবে। কারণ সবাই এটাই চাচ্ছে। সবাই মনেপ্রাণে এটা চায় এবং বিশ্বাস করে আমাদের সেই সামর্থ্য আছে। আমাদের রিজিকে আল্লাহ কী লিখে রেখেছেন, জানি না। আমরা মেহনত করছি, সততার সঙ্গে কাজ করছি। প্রত্যেকটা ক্রিকেটার বিশ্বাস করি যে, আমাদের যে লক্ষ্য, সেখানে পৌঁছাতে পারব।”

আত্মবিশ্বাসের কারণ হিসেবে শান্ত সামনে আনলেন আট বছর আগের আসরের সুখস্মৃতি। বাংলাদেশ ক্রিকেটের সোনালী সময়ের কথা মনে করিয়ে দিয়ে শান্ত আরো যোগ করেন, “সবশেষ যে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিটা খেলেছি, ভালো একটা স্মৃতি ছিল। সেমিফাইনাল খেলেছিলাম। অবশ্যই এটা বাড়তি অনুপ্রেরণা দেবে আমাদের। এ ছাড়া দেশের মানুষের প্রত্যাশা, পরিবারের প্রত্যাশা, ক্রিকেটারদের প্রত্যাশা তো আছেই। সব মিলিয়ে বিশ্বাস করছি যে, ভালো অবস্থানে যাওয়া সম্ভব।”

চ্যাম্পিয়নস ট্রফির এবারের আসরে প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ প্রতিবেশী দেশ ভারত। রোহিতদের বিপক্ষে মাঠে নামার মধ্য দিয়ে আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি মিশন শুরু করে বাংলাদেশ। পরে রাওয়ালপিন্ডিতে ২৪ ফেব্রুয়ারি নিউ জিল্যান্ড ও ২৭ ফেব্রুয়ারি স্বাগতিক পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে তারা।

ঢাকা/রিয়াদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব শ ব স কর আম দ র র আসর

এছাড়াও পড়ুন:

চাঁদপুরে জীবন্ত নবজাতক দাফনের চেষ্টা, হাসপাতাল বন্ধ

চাঁদপুর পৌর কবরস্থানে নবজাতক দাফনের সময় নড়ে ওঠা এবং পরবর্তীতে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার পর মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তার হয় শহরের তালতলা দি ইউনাইটেড হাসপাতালের ওয়ার্ড বয় ফারুক হোসেন গাজী (৪৫)। এই ঘটনায় আগামী দুই দিনের মধ্যে রোগীদের অন্যত্র স্থানান্তর করে হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। 

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় দি ইউনাইটেড হাসপাতালে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাপ্পি দত্ত রনি।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন হাসপাতালটিতে নানা অবৈধ কার্যক্রম চলে আসছে। ওই নবজাতকের জন্মও হয় এই হাসপতালে। জীবন্ত নবজাতক দাফনের চেষ্টা করার ভিডিও ভাইরাল হলে বিষয়টি নজরে আসে প্রশাসনের এবং পুলিশ সুপারের নির্দেশে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) নবজাতককে কবরস্থানে নিয়ে আসা ওয়ার্ড বয় ফারুক গাজীকে গ্রেপ্তার করে।

এই ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় মামলা করেন পৌর কবর স্থানের কেয়ারটেকার মো. শাহজাহান মিয়াজী।

এদিকে দি ইউনাইটেড হাসপাতালে এ ঘটনায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাপ্পি দত্ত রনি বলেন, “হাসপাতালে এসে ব্যবস্থাপনায় জড়িত কাউকে পাওয়া যায়নি। তাদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করেও কোন সাড়া মিলেনি। চিকিৎসক নেই, হাসপাতালের প্যাথলজি ও ওটির সঠিক পরিবেশ নেই। একই সাথে পোস্ট অপারেটিভ রোগীর জন্য কোন সুব্যবস্থা নেই এবং হাসপাতালের কাগজপত্রও নবায়ন নেই।”

তিনি আরো বলেন, “প্রাথমিকভাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা এবং ওটি, প্যাথলজি ও সংশ্লিষ্ট কক্ষ সীলগালা করা হয়েছে। একই সাথে রোগীদেরকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অন্য স্থানে সেবার ব্যবস্থা করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমাদের অভিযানে পরিচালিত কার্যক্রম সিভিল সার্জন বরাবর প্রদান করা হবে। সিভিল সার্জন হাসপাতালের নিবন্ধন বাতিলসহ পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে পারবেন।”

এ ভ্রাম্যমাণ আদালতে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রফিকুল হাসান ফয়সাল, জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মু. মিজানুর রহমান। অভিযানে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ সহযোগিতা করেন।

অপরদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত শেষে হাসপাতালের ড্রাগ সনদসহ যাবতীয় কার্যক্রম পরীক্ষা করে দেখেন জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মু. মিজানুর রহমান।

ঢাকা/অমরেশ/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ