নদীর নাম
তুষার দাশ
তোমার ভেতরে কত মহানন্দা,
কত লুপ্ত নদী বয়ে যায়
শরীরের ভাঁজে ভাঁজে
প্রত্যক্ষের সাধ্য নেই তার উন্মোচন করে।
আমার হাতের তালু ছুঁয়ে দিলে তোমার ও মুখ, চোখের পাপড়ি আর
কানের নরম লতি আঙুল-টোকায়,
কেমন গর্জন করে তোমার ভেতর আর
মুখর এক বনভূমি জেগে ওঠে–
অথচ তোমার কণ্ঠে শব্দই সরে না।
তুমি পদার্থের গুণগান করো–
তুমি ঘাসের ডগার মতো রৌদ্রে হেসে ওঠো মৌন আনন্দ-আভায়
তোমার কোথাও কোনো দ্বিধা নেই
আমার আকাশে এসে এখন উড়তে থাকো—
পরীর সুঠাম শাদা মেঘপুঞ্জে বিভান্বিত হয়ে–
তোমার সকল নদী ফেটে যায় বিপুল উজানে–
এত নদী কীভাবে লুকিয়ে রাখো নিজের ভেতর–
তোমার অজস্র নদী– শুধু একটি নদী ধার দেবে?
আমারও প্রবাহ চাই, প্রবাহিত হতে চাই–
তোমার ভেতরে তবে আমাকেও
যুক্ত করো এক নদী ভেবে–
নদীতে নদীতে চলো হই একাকার।
অবজ্ঞার চাদর
আলফ্রেড খোকন
আমাকে ভর করেছে মেঘ
সংহিতা তোমার চাদরটা দিও
মেঘের রয়েছে উদ্বেগ
চাদরে কিছুটা সন্দেহ বুনিও
মেঘের রয়েছে বৃষ্টির সম্ভাবনা
সংহিতা তোমার চাদরটা দিও
আমার থাকুক মৃদু–জল–জ্যোৎস্না
হাওয়াকেও কাছে ডেকে নিও
উত্তীর্ণ সন্ধ্যার জলে শস্যদানা
সংহিতা তোমার চাদরটা দিও
জলেই অবগাহন– বীজ বোনা
সন্ধ্যার বৃষ্টি খুবই অনমনীয়
এখন তোমার দিকে ফেরা
সংহিতা তোমার চাদরটা দিও
সন্ধ্যায় নেই কোনো অপেরা
প্রেম অতি ধীরে– অবজ্ঞাও
সাকিনে তোমার
নীহার লিখন
সকালের শব্দাবলির আলোর টুকরোগুলোকে জল মনে করে বেঁচে ওঠা মাছটা বলছি–
একটু চোখ বন্ধ করে ডুবতে দেখো, শীতল সমাহারে পাহাড়সম নিশ্চল সমস্ত দেহের প্রতীক, তারপর মনের দিকে হাত বাড়িয়ে রাখো কৃষ্ণচূড়া, ভাবো পাখিদের সুখে কতবার অবনত হয়েছে আকাশ আর শূন্যতার সুউচ্চ মহিমা
পৃথিবীর অর্থ কোনো প্রবল পরার্থ, তাই ফাল্গুনের পাতার জীবন নাচছি চক্রাকারে; কোথাও আমার নাম বৃষ্টি, কোথাও আমিই ইন্দ্র বলছি–
আমাকে অদৃশ্যকরণের নিয়মে রেখে হেঁটে যাও, এপাড়া ওপাড়া, প্রতিটা মজ্জা ও বুননের গভীর খোদাইচিত্রে, দেখতে দেখতে যাও ঘুমন্ত বন, দরোজা খুললেই আলো যেভাবে হেসে দ্যায়, ঠিক সেভাবেই, আমাকে হাসতে হাসতে যাও সাকিনে তোমার
ডিপ্রেশন
চাঁদনী মাহরুবা
ইচ্ছে হয়, আমার স্মৃতির ভেতরের শহরটাকে দেখাই। তোমাকে শোনাই, ভৈরবের স্রোত আর হরীতকী পাতার শব্দ।
নিকট দূরত্বে এসে দেখ, কলতলার জল কেমন উছলায়।
সন্ধ্যায়, মানুষের ছায়ারাও সরে যায় তার শরীর থেকে। এতটা ঘন একাকিত্ব পেয়ে বসে আমাদের।
ফুলতোলা জামার নরম কুঁচি, আরেফা আপার খোলা চুলে সেই কত দূরের কোন জামরুল গাছের হাওয়া এসে লাগে!
গ্রীষ্মের চোখফোটা দুপুরে, লুকিয়ে পড়া বইগুলো হয়ে যায় প্রেমের অধিক গোপনীয়।
মোরগঝুঁটি ফোটার আগ্রহে বহুক্ষণ
ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতাম লাল বাড়িটার দিকে। এভাবে এখন কেবল দাঁড়াতে পারি গোরস্তানের সামনে।
শহর থেকে কারও ফেরার খবর আসত। যেন জেসাস ফিরতেছে .
কিশোরীর হৃদয় তখন পবিত্র জেরুজালেমের মাটি।
পর্দা ওঠানো সকালে তারে মনে করে, এখনও কাটানো যায় বিরহকাল।
ইশকুলের ঘণ্টা শোনার অপেক্ষায় ছুটির দিনগুলো ঠিক উবে যেত
হলুদ অড়বরইয়ের ভাগ পাওয়া ছাড়া, আমাদের তীব্র কোনো বিষণ্নতা ছিল না।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম র চ দরট
এছাড়াও পড়ুন:
এসএসসি পরীক্ষা-২০২৫: বিজ্ঞানে ভালো নম্বর পাওয়ার ৮টি টিপস
প্রিয়,
এসএসসি পরীক্ষার্থী, বিজ্ঞান বিষয়টি মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের জন্য। তোমাদের জন্য বিষয়টি একটু কঠিন, ভালো করে রিভিশন দিলে তা সহজ হবে। এ বিষয়ে কীভাবে পরীক্ষায় ভালো নম্বর তোলা যায়, তার টিপস। পুরো পাঠ্যবইতে অধ্যায় রয়েছে ১৪টি। পরীক্ষায় প্রশ্ন কিন্তু পুরো বই থেকেই হবে।
দেখে নাও নম্বর বিভাজন
পরীক্ষায় পুরো বিজ্ঞান বই থেকে বহুনির্বাচনি অংশে মোট ৩০টি প্রশ্ন থেকে সব কটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। নম্বর থাকবে ১x৩০, অর্থাৎ ৩০ নম্বর। প্রতিটি সঠিক উত্তরের জন্য বরাদ্দ থাকবে ১ নম্বর করে। আর সৃজনশীল অংশে প্রশ্ন থাকবে ১১টি। ১১টি প্রশ্ন থেকে যেকোনো ৭টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। নম্বর থাকবে ৭x১০, অর্থাৎ ৭০ নম্বর।
আরও পড়ুনএসএসসি পরীক্ষা ২০২৫-এর রুটিন, কোন পরীক্ষা কবে২০ মার্চ ২০২৫গুরুত্ব দাও পাঠ্যবই
এবারের এসএসসি পরীক্ষা বিজ্ঞানের পুরো সিলেবাসের ওপর ভিত্তি করে হবে। ভূগোল ও পরিবেশ বিষয় কিন্তু অনেক তথ্যভিত্তিক, সিলেবাসও বেশ বড়। মনোযোগ দিয়ে বুঝে পড়লেই ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব। সঠিক প্রস্তুতিই তোমাকে সৃজনশীল প্রশ্ন সহজে বুঝতে এবং বহুনির্বাচনি অংশে অধিক নম্বর তুলতে সহায়তা করবে।
বহুনির্বাচনি অংশ
বহুনির্বাচনিতে ভালো করতে নির্ধারিত অধ্যায়গুলো খুব ভালোভাবে রিভিশন দেবে। প্রতিটি অধ্যায়ে অনেক বিজ্ঞানীর নাম, রক্তের বিভাগের নাম, ভিটামিনের নামসহ বিভিন্ন বিষয়ে মনে রাখতে হবে। হৃদ্যন্ত্রের যত কথা, পলিমার, জীবপ্রযুক্তি, দেখতে হলে আলো চাই, অম্ল, ক্ষারক ও লবণের ব্যবহার অধ্যায়টি বহুনির্বাচনিতে ভালো করলেই সহজে বেশি নম্বর উঠবে। বহুনির্বাচনি অংশে প্রশ্নের উত্তর তোমাকে খুব বুঝে করতে হবে। এটাই তোমার জিপিএ বাড়াতে সাহায্য করবে।
সৃজনশীল অংশ
সৃজনশীল অংশের প্রশ্নের উত্তর অবশ্যই চার ধাপে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করে লিখবে। প্রতিটি প্রশ্ন জ্ঞানমূলক, অনুধাবন মূলক, প্রয়োগমূলক ও উচ্চতর দক্ষতা অংশকে প্যারা করে লিখবে। এতে পরীক্ষক খুব সহজেই তোমার লেখা উত্তর বুঝতে পারবে। তবে উত্তর লেখার সময় খেয়াল রাখবে, যাতে নির্দিষ্ট সময়ের লেখা শেষ করতে হবে। উত্তরে কোনো ধরনের অপ্রাসঙ্গিক কিছু লিখবে না। অনেক পরীক্ষার্থী অযথাই অপ্রাসঙ্গিক কিছু লিখে খাতা ভরিয়ে রাখে। এটা কখনোই করবে না ।
আরও পড়ুনপ্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন এক ধাপ বাড়ানোর উদ্যোগ, ভিন্নমত শিক্ষকদের২৮ এপ্রিল ২০২৫রিভিশন দাও
মনে রেখো, বিজ্ঞান পরীক্ষার আগে সময়কে ঠিকভাবে কাজে লাগাবে। পরীক্ষার আগে সময় নষ্ট না করে সময়কে কাজে লাগাও, মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করো, রিভিশন দাও, দেখবে আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়ে যাবে। লেখা শেষে অবশ্যই পুরো খাতা ভালো করে রিভিশন দেবে। রিভিশন দিলেই চোখে পড়বে পরীক্ষার খাতায় কোনো ভুল আছে কি না। আর ভুল থাকলে তা সহজেই ঠিক করতে পারবে। তাই রিভিশনের বিষয়টি কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ।
কয়েকটি দরকারি কথা
১. জ্ঞানমূলক প্রশ্নের উত্তর সঠিক হতে হবে। সংজ্ঞা বা কাকে বলে ধরনের প্রশ্নের উত্তর লিখতে কখনো বানিয়ে লিখবে না।
২. অনুধাবনমূলক প্রশ্নের উত্তর লিখতেও পাঠ্যবই অনুসরণ করবে।
৩. খাদ্যের উপাদান, রক্তের উপাদান, সুষম খাদ্যের উপাদান ঠিকমতো বুঝে পড়বে।
৪. আলো প্রতিসরণ, লেন্সের ক্ষমতা, তন্তুর ব্যবহার, মাটির গঠন নিয়ে কিন্তু প্রশ্ন হবে।
৫. অম্ল, ক্ষারক ও লবণের ব্যবহার অধ্যায়ে অনেক রাসায়নিক বিক্রিয়া রয়েছে, তা ঠিকমতো লিখবে।
৬. দুর্যোগের সঙ্গে বসবাস অধ্যায়ে ভূমিকম্প অংশটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
৭. জীবন বাঁচাতে বিজ্ঞান অধ্যায় থেকে বহুনির্বাচনি ও সৃজনশীল প্রশ্ন হতে পারে।
৮. বিজ্ঞানে বেশ কিছু কঠিন নাম রয়েছে, তার বানান সঠিকভাবে লিখবে।
লেখক: মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান, প্রভাষক, রূপনগর সরকারি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা
আরও পড়ুনএইচএসসি পরীক্ষার দুই মাস বাকি, পরীক্ষার্থীদের করণীয় ১০ পরামর্শ৭ ঘণ্টা আগে