শেখ হাসিনা সরকারের সময় রাজনীতিক, আমলা ও প্রভাবশালী ব্যবসায়ীদের পাচার করা অর্থ জরুরিভিত্তিতে অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) করতে পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করেছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের (ওএইচসিএইচআর) তথ্যানুসন্ধানী প্রতিবেদনে তা বলা হয়। 

জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয়ে গত বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। সুপারিশে বলা হয়, যেসব দেশে অর্থ পাচার হয়েছে সে দেশগুলোর উচিত অবৈধ এসব অর্থ দ্রুততার ভিত্তিতে অবরুদ্ধ করা। এর পর একটা স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়া। মহাদুর্নীতি এবং ব্যাংক ঋণের অর্থ আত্মসাতের মাধ্যমে অর্জিত এসব অর্থ ফেরত এনে বাংলাদেশের ভুক্তভোগী জনগোষ্ঠীর প্রয়োজনে ব্যবহার করা উচিত। মানবাধিকারের স্বার্থে জনগণের অর্থের এ রকম ব্যবহার খুব প্রয়োজন। 

প্রতিবেদনে অর্থনৈতিক সুশাসন অংশে আরও বলা হয়, অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ দেশের বাইরে পাচার করে দেওয়া হয়েছে। যে সব দেশে এসব অর্থ পাচার করা হয়েছে সে সব দেশের উচিত অবৈধ এসব অর্থ দ্রুততম সময়ের মধ্যে জব্দ ও অবরুদ্ধ করে যথাযথ এবং স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা। কোথায়  পাচারের কত টাকা রাখা হয়েছে তা দ্রুত খুঁজে বের করা দরকার। যথাযথ আইন মেনে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় অর্থ দেশে আনতে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষকে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার পরামর্শ দেওয়া হয়। 

প্রতিবেদনে দুর্নীতি প্রসঙ্গে বলা হয়, দুর্নীতিবিরোধী আইন যাতে কঠোর এবং সমভাবে প্রয়োগ হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ করে বড় ধরনের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত রাজনীতিক, পদস্থ আমলা, বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক ও প্রভাবশালী ব্যবসায়ীদের বিচারের আওতায় আনার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। এ জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদককে স্বাধীন এবং সক্ষম করার কথা বলা হয়। একই সঙ্গে দুদকের সদস্যের স্বাধীনতা এবং স্বাধীনভাবে কাজ করার মতো সব ধরনের প্রযুক্তি সুবিধা লোকবল থাকতে হবে। অর্থ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষেরও একই সুবিধা এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার কথা বলা হয় প্রতিবেদনে। 

এতে ভোক্তার অধিকার সংরক্ষণের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, বাংলাদেশে বাজারব্যবস্থা নির্দিষ্ট কয়েকটি ব্যবসায়ী গ্রুপের হাতে সীমাবদ্ধ। অন্যায্যভাবে এদের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। এদের আধিপত্যের কারণে পণ্যমূল্য নিয়ে ভোক্তাদের ভুগতে হয়। এ ধরনের ব্যবস্থা ভেঙে দিতে জরুরি আইনগত এবং নির্বাহী পদক্ষেপ প্রয়োজন। 

শ্রমিক অধিকার প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে বলা হয়, শ্রম আইন সংশোধন করে শ্রমিকদের মানবাধিকার সুরক্ষা এবং তাদের সংঘটিত হওয়ার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। শ্রমিকদের নিরাপদ কর্মপরিবেশ এবং ন্যায্য মজুরির নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় এ বিষয়ক  উদ্বেগগুলো দূর করতে বাংলাদেশের মানবাধিকার কমিশনের সংস্কারে সহায়তা করতে চায় জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার। এ ব্যাপারে তারা বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।  

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন শ চ ত কর ব যবস থ অবর দ ধ

এছাড়াও পড়ুন:

জামাইয়ের ছুরিকাঘাতে শাশুড়ি খুন

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় পারিবারিক কলহের জেরে জামাইয়ের ছুরিকাঘাতে শাশুড়ি নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন একজন। বুধবার দিবাগত রাতে উপজেলার হরিরামপুর ব্যাপারী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ফজিলা খাতুন (৪৫) উপজেলার হরিরামপুর ব্যাপারী গ্রামের বাসিন্দা মৃত জালাল উদ্দিনের স্ত্রী। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মনির মিয়া (৩০) উপজেলার হরিরামপুর ব্যাপারী গ্রামের সেলিম মিয়ার ছেলে। ঘটনার রাতে স্ত্রী রুমা আক্তারের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান মনির। পরে রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে তিনি বাড়ি ফিরে আসেন এবং চার বছরের ছেলে রোহানকে নিয়ে চলে যেতে চান। এতে স্ত্রীর সঙ্গে তার আবারও বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে মনির হাতে থাকা ছুরি দিয়ে স্ত্রীকে আঘাত করতে গেলে শাশুড়ি ফজিলা খাতুন বাধা দেন। তখন মনির শাশুড়িকে ছুরিকাঘাত করেন। পাশাপাশি স্ত্রীকেও আঘাত করেন তিনি। পরে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে ফজিলা খাতুনের মৃত্যু হয়।

মুক্তাগাছা থানার ওসি মো. কামাল হোসেন বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো। তবে অভিযুক্ত পালিয়েছে। তাকে ধরার চেষ্টা চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ